শান্তিচুক্তি কি সংশোধন হতে যাচ্ছে?

0PuAFnndQSRr

স্টাফ রিপোর্টার:

১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে স্বাক্ষরিত শান্তিচুক্তিতে পার্বত্য চট্টগ্রামে ৬টি স্থায়ী সেনাক্যাম্প থাকার কথা বলা হলেও রবিবার তিনি বলেছেন, ৪ টি ব্রিগ্রেড ছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে বাকি সব সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহার করা হবে। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কি শান্তিচুক্তি সংশোধন করতে চাইছেন? নাকি শান্তিচুক্তি বিষয়ে এটি সরকারের নতুন অবস্থান? অথবা তার বক্তব্য যারা লিখেছেন তাদের তথ্যগত ভুল?

প্রশ্নটি উঠেছে রবিবার সকালে রাজধানীর বেইলী রোডে অফিসার্স ক্লাবের পার্শ্ববর্তী স্থানে নির্দিষ্ট দুই একর জমির ওপর পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্স নির্মাণের ভিত্তিফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে কেন্দ্র করে।

সরকারী সংবাদ সংস্থা বাসস পরিবেশিত খবরে দেখা যায়, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কেবলমাত্র ভূমি সংস্কার ব্যতীত পার্বত্য শান্তিচুক্তির অধিকাংশই বাস্তবায়িত হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী চারটি ব্রিগেড ব্যতীত অধিকাংশ সেনা ক্যাম্পও সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, সরকার ভূমি সংস্কারের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি কমিশন একাধিকবার গঠন করলেও কমিশনের কাজ সন্তোষজনকভাবে এগোয়নি। কারণ সেখানে কিছুটা অবিশ্বাস এবং দ্বিধা-দ্বন্দ্ব কাজ করছিল।
আলাপ আলোচনার মাধ্যমেই এই অবস্থা থেকে উত্তরণ সম্ভব বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

…প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেনা ক্যাম্পগুলো অধিকাংশ’ই তুলে নেয়া হয়েছে। যা সামান্য কিছু আছে- চারটি জায়গায় কেবল ৪টি ব্রিগেড থাকবে। বাকীগুলো সব সরিয়ে নেয়া হবে। যেজন্য রামুতে আমরা একটা সেনানিবাস করেছি। ঐ অঞ্চলে তাঁর সরকার শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।”

শান্তিচুক্তি

কিন্তু ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে রাষ্ট্রিয় অতিথি ভবন পদ্মায় স্বাক্ষরিত শান্তিচুক্তিতে পার্বত্য চট্টগ্রামে ৬ টি স্থায়ী সেনা ক্যাম্প রাখার কথা বলা হয়েছে। শান্তিচুক্তির ঘ খন্ডের ১৭(ক) ধারায় বলা হয়েছে, “ সরকার ও জনসংহতি সমিতির মধ্যে চুক্তি সই ও সম্পাদনের পর এবং জনসংহতি সমিতির সদস্যদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরত আসার সাথে সাথে সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিডিআর) ও স্থায়ী সেনানিবাস (তিন জেলা সদরে তিনটি এবং আলীকদম, রুমা ও দীঘিনালা) ব্যতীত সামরিক বাহিনী, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সকল অস্থায়ী ক্যাম্প পার্বত্য চট্টগ্রাম হইতে পর্যায়ক্রমে স্থায়ী নিবাসে ফেরত নেওয়া হইবে এবং এই লক্ষ্যে সময়সীমা নির্ধারণ করা হইবে। আইন-শৃঙ্খলা অবনতির ক্ষেত্রে, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়ে এবং এই জাতীয় অন্যান্য কাজে দেশের সকল এলাকার ন্যায় প্রয়োজনীয় যথাযথ আইন ও বিধি অনুসরণে বেসামরিক প্রশাসনের কর্তৃত্বাধীনে সেনাবাহিনীকে নিয়োগ করা যাইবে। এই ক্ষেত্রে প্রয়োজন বা সময় অনুযায়ী সহায়তা লাভের উদ্দেশ্যে আঞ্চলিক পরিষদ যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করিতে পারিবেন”

প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্য বাস্তবায়ন করতে হলে শান্তিচুক্তি সংশোধন করতে হবে বলে পার্বত্য বিশেষজ্ঞদের অভিমত।

এ ব্যাপারে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুরের বক্তব্য জানতে তার মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: পার্বত্য চট্টগ্রাম, শান্তিচুক্তি, সেনা ক্যাম্প
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন