শাহপরীরদ্বীপের ৫৪৫ মিটার দৈর্ঘ্য জেটিটি কোন উপকারে আসছেনা
মুহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান, টেকনাফ:
সড়ক সমস্যার কারণে কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ জেটিটি কোন উপকারে আসছেনা। এতে এলাকার সর্বসাধারণের পাশাপাশি দেশী-বিদেশী পর্যটক, শিক্ষার্থী, ভিআইপি, ভিভিআইপি এবং ভ্রমণ পিপাসুরা যাতায়াত সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
তাছাড়া সড়কের কারণে যাতায়াত সমস্যায় উক্ত জনপদে আইন শৃংখলার উন্নতি হচ্ছে না। অথচ এ সড়কের সমস্যা সমাধান করা গেলে এ জেটিটি পর্যটনের নতুন দ্বার উম্মোচিত হত। আরো এক ধাপ এগিয়ে যেত পর্যটন শিল্প।
জানা যায়-বিগত জোট সরকার আমলে সেন্টমার্টিনদ্বীপে পর্যটকদের যাতায়ত সুবিধার জন্য প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ এবং সেন্টমার্টিনদ্বীপে দু’টি জেটি নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে অনেক দেরীতে হলেও গত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে শেষ্ হয়। শাহপরীরদ্বীপ জেটি চালু হওয়ার কিছুদিন যেতে না যেতেই নব নির্মিত জেটি দু’টি ভাঙ্গণ, ফাটলসহ বিভিন্ন ত্রুটি দেখা দেয়। যার ধারাবাহিকতা এখনও অব্যাহত রয়েছে।
টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনদ্বীপের দূরত্ব ২৮ কিলোমিটার। আবার টেকনাফ থেকে শাহপরীরদ্বীপের দূরত্ব ১৩ কিলোমিটার। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর টেকনাফ এলজিইডির তদারকিতে প্রায় ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে উক্ত জেটি ২টির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছিল। সর্বসাধারণের দাবীর প্রেক্ষিতে এবং দেশী-বিদেশী পর্যটকদের সুবিধার্থে তৎকালীন সরকার জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে বিপুল অর্থ ব্যয় সত্বেও এই প্রকল্প হাতে নিয়েছিল।
টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ জেটিটি ৫৪৫ মিটার দৈর্ঘ্য এবং সেন্টমার্টিনদ্বীপের জেটিটি ১৭৯ মিটার দৈর্ঘ্য বলে টেকনাফ এলজিইডি সূত্রে জানা যায়। সম্প্রতি কক্সবাজার থেকে শাহপরীরদ্বীপ পর্যন্ত সরাসরি ষ্পেশাল মিনিবাস চালু হয়েছে। এতেও পর্যটকদের স্বল্প সময়ে শাহপরীরদ্বীপ থেকে সেন্টমার্টিনদ্বীপে যাবার সুযোগ হয়েছিল।
টেকনাফ উন্নয়ন কমিটির সভাপতি সাংবাদিক আব্দুল্লাহ মনির বলেন, টেকনাফ থেকে শাহপরীরদ্বীপ পর্যন্ত মাত্র ১৩ কিলোমিটার সড়কের প্রায় ২ কিলোমিটার ভাল নেই । তার মধ্যে আবার মাঝখানে ভাঙ্গনে গত একবছর ধরে সাবরাং নয়াপাড়া থেকে শাহপরীরদ্বীপ পর্যন্ত সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। সড়কটির উন্নয়ন করে পর্যটকবাহী জাহাজগুলো শাহপরীরদ্বীপে কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত জেটি থেকে ছাড়ার ব্যবস্থা নেয়া হলে দেশী-বিদেশী পর্যটকরা দেড় থেকে দুই ঘন্টা বেশী টেকনাফ দেখার সুযোগ পাবে।
সেই সাথে জাহাজ ভাড়া কমিয়ে যাওয়ায় আর্থিক সাশ্রয় হওয়ার পাশাপাশি দেশী-বিদেশী পর্যটক, শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের সর্বশেষ প্রান্ত ঐতিহাসিক জনপদ শাহপরীরদ্বীপ দেখার সুযোগ পাবে। বর্তমানে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত শাহপরীরদ্বীপ জেটিটি কোন উপকারে আসছেনা। তবে স্থানীয় নারী- পুরুষ সকাল-বিকাল মুক্ত হাওয়ায় বেড়াতে জেটিতে যায়। গৃহবধুরা অবসরে উম্মুক্ত হাওয়া খেতে যায়।
শাহপরীরদ্বীপ আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব সোনা আলী জানান-শাহপরীরদ্বীপ বাংলাদেশের একটি ঐতিহাসিক জনপদ। বাংলাদেশ ভূ-খন্ডের সর্বশেষ প্রান্তর পাশাপাশি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি ও এই শাহপরীরদ্বীপ। কিন্তু সড়কের সমস্যার কারণে পর্যটকরা শাহপরীরদ্বীপ দেখার সুযোগ পাচ্ছেনা। সাবরাং ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব হামিদুর রহমান জানান- টেকনাফ থেকে শাহপরীরদ্বীপ সড়কের অবস্থা বেহাল হওয়ার তাই জেটি থেকে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।