ঘূর্ণিঝড় মোখা

সেন্টমার্টিনে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ ও পুনর্বাসন চলছে সমানতালে

fec-image

ঘূর্ণিঝড় “মোখা ” কবলিত সেন্টমার্টিনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে পুনর্বাসন উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত এই এলাকায় সরকারি -বেসরকারি উদ্যোগে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রেখেছেন। পাশাপাশি চলছে তালিকা যাচাই-বাছাই করে চার ক্যাটাগরি অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত ঘর -বাড়ি নির্মাণ, পূর্ণ নির্মাণ ও মেরামত করার কাজ।

ইতোমধ্যে ২” শ পরিবারকে ২ বান্ডিল ঢেউ টিন ও নগদ ৬ হাজার টাকা সহয়তা শুরু করেছে উপজেলা প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার (১৮ মে) থেকে সেন্টমার্টিনে ঘূর্ণিঝড় মোখায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার গুলোকে ঢেউটিন ও নগদ অর্থ সহায়তা কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, টেকনাফ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) মো. এরফানুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি টিম।

তিনি জানান, এখানে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করার পাশাপাশি বিধ্বস্ত বাড়ি-ঘর নির্মাণ করে পূনর্বাসনের কাজ শুরু করা হয়েছে। ৪ টি ক্যাটাগরী অনুযায়ী “এ” ক্যাটাগরী অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত ২” শ পরিবারকে ২ বান্ডিল ঢেউ টিন ও ৬ হাজার নগদ অর্থ হিসেবে মোট ৪” শ বান্ডিল টিন ও ১২ লাখ নগদ অর্থ প্রদান, “বি” ক্যাটাগরী অনুযায়ী ২” শ পরিবারকে নতুন গৃহ নির্মাণ, “সি” ক্যাটাগরী অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত ৫” শ পরিবারকে ১১ হাজার টাকা করে ৫৫ লাখ টাকা এবং” ডি ” ক্যাটাগরী অনুযায়ী ১ হাজার পরিবারকে ৫ হাজার টাকা করে ৫০ লাখ টাকা সহায়তা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যা ইতিমধ্যে বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা( ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান বলেন, ” প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ যাতে যথাযথ সহায়তা পায় সেই লক্ষ্যে সেন্টমার্টিনে ডোর টু ডোর প্রক্রিয়ায় উপজেলা প্রশাসন ও স্হানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বারদের সমন্বয়ে তালিকা যাচাই-বাছাই করে পূনর্বাসন কাজ চলছে।”

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান,” সেন্টমার্টিনের একটি পরিবারও যাতে বলতে না পারে ঘূর্ণিঝড় মোখায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো সরকারি সহায়তা পায়নি। সেভাবেই কাজ করছে সরকার। এতে দ্বীপের জনসাধারণ সাহস সঞ্চয় করতে পেরেছেন “

এদিকে সহায়তা পাওয়া স্থানীয় অধিবাসী আবু তালেব জানিয়েছেন, সরকারের পক্ষ থেকে দ্বীপ বাসীর জন্য যে সাহায্য দেওয়া হয়েছে তা নিয়ে আমরা খুশি। এ নিয়ে কিছুটা হলেও আমাদের বাসস্থান টুকু পুনর্নির্মাণ করে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করতে পারবো।

২” শ পরিবারকে ত্রাণ দিয়েছে কোস্ট গার্ড:

শুক্রবার (১৯ মে) দুপুরে সেন্টমার্টিন বিএন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোনের জাহাজ বিসিজিএস কামরুজ্জামান ঘূর্ণিঝড় সেন্টমার্টিনে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছে।

জাহাজটির অধিনায়ক কমান্ডার মাহবুবুল হাসান উপস্থিত ক্ষতিগ্রস্ত ২” শ পরিবারকে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন।

এ সময় তিনি বলেন,’ উপকূল সুরক্ষার পাশাপাশি কোস্ট গার্ড দূর্গত মানুষের পাশে সাহায্যে এগিয়ে আসে। কোস্ট গার্ড পূর্বজোন গত ১৫ মে ক্ষতিগ্রস্ত সেন্টমার্টিনে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছেন। তারপরও আজ (১৯ মে) আবার ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছেন।”

৮০ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা:

সেন্টমার্টিন দক্ষিণ পাড়া একালায় পরিবার প্রতি আড়াই হাজার টাকা করে ১৮০ টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সহায়তা করেছেন ব্যবসায়ী জাবেদ রহমান।

শুক্রবার (১৯ মে) বিকেলে নগদ অর্থ সহায়তা বিতরণ করেন স্হানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান। তিনি জানান ” দূর্যোগের এই অসময়ে ব্যক্তি উদ্যোগে এমন সহায়তা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো কৃতজ্ঞচিত্ত্বে মনে রাখবে। “

শাহপরীর দ্বীপে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার:

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. আমিনুর রহমান টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ ঘূর্ণিঝড় মোখায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

শুক্রবার (১৯ মে) বিকেলো তিনি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার গুলোর সাথে কথা বলেন এবং ৮ টি পরিবারকে ২ বান্ডিল ঢেউ টিন ও ৬ হাজার টাকা হিসেবে মোট ১৬ বান্ডিল টিন ৪৮ হাজার টাকা বিতরণ করেছেন।

এ সময় কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো: শাহীন ইমরান, টেকনাফ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আলম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.কামরুজ্জামান, মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল হালিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় উপস্থিত অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার গুলোকে শুকনো খাবার তুলে দেয়া হয়।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ঘূর্ণিঝড়, টেকনাফ, ত্রাণ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন