মহেশখালীতে আত্মসমর্পণকারি পরিবারদের বসতভিটা ফিরিয়ে দিতে প্রাচীর নির্মাণ

fec-image

কক্সবাজারের ইতিহাসে মহেশখালী উপজেলাতে জলদস্যু ও সন্ত্রাসীদের দুইটি আত্মসমর্পণের মধ্যে দিয়ে ফিরতে বসেছে মহেশখালীর হারানো ঐতিহ্য। ফলে শান্তির সু-বাতাস বইতে শুরু করেছে এক সময়ের ক্রাইমজোন খ্যাত উপজেলার কালারমারছড়া-হোয়ানক ইউনিয়নের প্রতিটি জনপদে প্রতিটি ঘরে।

অপরদিকে আত্মসমর্পণকারি পরিবারদের বসতভিটা ফিরিয়ে দিতে সীমানা প্রাচীর হতে যাওয়ার খবরটি শুনে স্থানিয় এলাকাবাসীর মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

স্থানিয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মহেশখালীতে এলাকা ভিত্তিক গোষ্ঠিগত  আধিপত্যসহ জলদস্যুদের কাবু করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে মধ্যস্থকারী হিসাবে কাজ করে যাচ্ছেন মহেশখালী থানা প্রশাসন এবং বর্তমান প্রজম্মের আলোচিত সাংবাদিক আকরাম হোসাইন।

কালারমার ছড়ার ইউনিয়নের মোঃ শাহ ঘোনা গ্রামের প্রভাবশালী “খউস্বর ও কমলা”বর দুই গোষ্ঠির দীর্ঘদিনের চলমান বিরোদকে কেন্দ্র করে অশান্ত হয়ে উঠে উক্ত এলাকা। ফলে উক্ত বিরোদ ধীরে ধীরে বিস্তার লাভ করে। চলে হামলা-পাল্টা হামলা। এক পক্ষ এলাকার নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করলে অপর পক্ষকে এলাকা ত্যাগ করতে হয় যেন রেওয়াজে পরিনিত হয় ওই এলাকায়।

তবে বর্তমানে শান্তির অগ্রদূর্ত হিসাবে মধ্যস্থকারী বিচক্ষণ সাংবাদিক আকরাম ও পুলিশ প্রশাসন শান্তি ফিরিয়ে আনতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। ফলে সফলতার হাতছানি দিয়ে ডাকছে তাঁদের এ অসামান্য অবদান।

স্থানিয়দের ভাষ্যমতে, জন প্রতিনিধি,রাজনৈতিক নেতা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সুশিল সমাজের লোকজন প্রায় ১৫ বছর ধরে দুই গ্রুপের দীর্ঘদিনের বিরোধকে আপোষের ব্যবস্থা করতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে বলে জনশ্রুতি রয়েছে।

তবে সম্প্রতি দুই গোষ্ঠির বাঘা -বাঘা যুবক স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসে নিজ ভূমিতে বসবাস করতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের উপস্থিতিতে আত্মসমর্পণের পর সুনসান নিরবতা বিরাজ করতেছে ওই এলাকায়। কমে গেছে দাঙ্গা-হাঙ্গামার মতেও ঘটনা।

শনিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি)  বিকাল ৪ টার সময় বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীর এক বার্তায় কক্সবাজার পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন এর নির্দেশে মহেশখালীর থানার ওসি প্রভাষ চন্দ্র ধরে নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম কালারমারছড়া মোঃ শাহ ঘোনা গ্রামে গিয়ে প্রতিপক্ষের ভয়ে দীর্ঘদিন এলাকা ত্যাগ করা আত্মসমর্পণকারীদের পরিবার নিজের বসতভিটা ঘর বাঁধতে পুলিশ পাহারায় এলাকায় গিয়েছেন।

তখন তাদের বাড়ির সীমানা বাউন্ডারী ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। এসময় উপস্থিত ছিলেন, কালারমারছড়া পুলিশ ফাঁড়ীর আইসি কিশোর বড়ুয়া, আত্মসমর্পণের মধ্যস্থকারী সাংবাদিক আকরাম হোসেন ও সাংবাদিক হোবাইব সজীবসহ স্থানিয় সুশিল সমাজের লোকজন এসময় উপস্থিত ছিলেন।

তবে চলতি মাসে যে কোন একদিন কক্সবাজার পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ ইকবাল হোসেনের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজবিঠায় ঘর বাঁধবেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে।

পুলিশের পক্ষে থেকে বলা হয়েছে সবাই যেন সহ অবস্থানে বসবাস করে। আর কেউ যদি কোন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাই তা হলে তাদেরকে কঠোর হস্তে দমন করা হবে। সেভাবে নির্দেশ রয়েছে উপর মহল থেকে এমন ও কথা বলা হয়েছে পুলিশের পক্ষে থেকে। পুলিশের এই প্রচারনাকে স্বাগত জানিয়ে স্থানিয় সুশিল সমাজের লোকজন সাধুবাদ জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ২৩ নভেম্বর ২০১৯ ইং মহেশখালী উপজেলার কালারমার ছড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে আত্মসমর্পণ করা ৯৬ জন জলদস্যু, শীর্ষ অস্ত্রের কারিগরদের মধ্যস্থতা করেছেন দেশের আলোচিত সাংবাদিক আকরাম হোসেন ও প্রসাসনের নেতৃত্বে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি, আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার) এর কাছে ভয়ংকর ১৫৫ অস্ত্র, অস্ত্র তৈরীর সরঞ্জাম ও প্রচুর গোলাবারুদ সহ আত্মসমর্পণ করেন।

এ ছাড়া ২০ অক্টোবর ২০১৯ ইং মহেশখালীতে আত্মসমর্পণকৃত ৬ টি কুখ্যাত সশস্ত্র জলদস্যু বাহিনীর ৪৩ জন জলদস্যুর মধ্যে ৫ টি সশস্ত্র ভয়ংকর বাহিনীর ৩৭ জন জলদস্যুকে উদ্বুদ্ধ করনের মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করেন।

যারা জলদস্যুতার জীবন ছেড়ে এখন স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসে স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন যাপন করছেন।
স্থানীয়রা জানান, প্রশাসন অশান্ত মহেশখালীতে শান্তি ফিরিয়ে আনতে তাঁদের এ অবদান অত্র এলাকার শান্তি প্রিয় বাসিন্দারা আজীবন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ রাখবেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন