উখিয়ার কোটবাজার ষ্টেশন সড়কের বেহাল দশা

fec-image

উখিয়া উপজেলার বানিজ্যিক ও জনবহুল ষ্টেশন কোটবাজার এখন অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। ঐতিহ্যবাহী এই ষ্টেশন থেকে সরকার প্রতি বছর কোটি টাকার রাজস্ব আয় করলেও নানান সমস্যায় জর্জরিত বাজারটিতে তেমন কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। কোটবাজারে নেই পর্যাপ্ত পানি নিষ্কাশনের ড্রেনেজ ব্যবস্থা, যা আছে তাতেও ময়লা আবর্জনা দিয়ে ভরাট হয়ে গেছে। নেই গণ শৌচাগারও, ষ্টেশনবাসী ছাড়াও দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল হতে আসা নারী পুরুষকে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

জেলা পরিষদ থেকে একটি যাত্রী ছাউনি দেয়া হলেও সেই যাত্রী ছাউনি এখন নেই। ফলে সাধারণ যাত্রীসহ স্কৃল কলেজের শত শত ছাত্র-ছাত্রীদের রোদ বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঘন্টার পর ঘন্টা গাড়ির জন্য রাস্তার ধারে অপেক্ষার প্রহর গুনতে হয়। ৫ শতেরও অধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি স্থানীয় ও বহিরাগত হাজার হাজার মানুষের জীবন বাঁচানোর প্রধান উপকরণ পানি এখন দুর্লভ।

এলাকাবাসীদের গোসল করাসহ নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহারের এক মাত্র সম্বল শান্তিবর পুকুরটির পানিও এখন ব্যবহারের উপযোগিতা হারিয়েছে। একদিকে ভরাট অন্য দিকে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী এ পুকুরটি।

বাজারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৮ থেকে ১০ টির মতো নলকূপের প্রয়োজন থাকলেও সরকারিভাবে অনেক বছর আগে একটি মাত্র নলকূপ তরকারি বাজার সংলগ্ন সড়কের পুর্ব পার্শে বসানো হলেও সেই নলকূপটি এখন পথচারীদের গলার কাঁটায় পরিণত হয়ে গেছে। বাজারের ফুটপাতের পানি ও নলকূপের পানি নিষ্কাশনের জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে গভীর একটি ড্রেন নির্মাণ করে দিলেও উক্ত ড্রেন ভরাট হয়ে যাওয়াতে নলকূপে ব্যবহারের সব ময়লা পানি প্রধান সড়কের উপর দিয়ে মসজিদ রোডের দিকে প্রবাহিত হচ্ছে।

উক্ত নলকূপের বিপরীতে রয়েছে কোটবাজার ঐতিহ্যবাহী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ। প্রতিদিন শত শত মুসল্লী নামাজ পড়ার জন্য ঐ রোড দিয়ে যাতায়াত করে থাকে। সম্প্রতিক সময়ে গাড়ি চলাচল বেড়ে যাওয়াতে ঐ স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়ে এ সব ময়লা পানি জমে একাকার হওয়াতে গাড়ির চাকায় পড়ে ময়লা পানি মুসল্লীদের গায়ে এসে পড়ে, জামা কাপড় নষ্ট হয়ে যায়, ফলে অনেক মুসল্লীকে নামাজ আদায় না করে ফিরে যেতে হয়। একই অবস্থা সাধারণ পথচারীদের বেলায়। প্রতিদিন দেশ বিদেশের নামীদামী আমলা ও দেশের প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকতা এ মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করলেও কারোই নজরে আসছেনা জন দুর্ভোগের কারণটি।

স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বার ও বাজার ইজারাদারেরও নেই কোন মাথাব্যথা।

স্থানীয় সমাজসেবক শাহ আলম বলেন, জনবহুল এই বাজার থেকে প্রতি বছর সরকার কোটি কোটি টাকা আয় করলেও বাজারের বেহাল দশা দেখে মনে হয় কোটবাজারের কোন মা-বাপ নাই। রত্নাপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খায়রুল আলম চৌধুরী বলেন, এ বাজারকে ঘিরে সরকারের ব্যাপক পরিকল্পনা রয়েছে, অচিরেই গণ শৌচাগার, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, পানি সমস্যাসহ সব সমস্যা সমাধান করে কোটবাজারকে দক্ষিন কক্সবাজারের মডেল ব্যবসায়ীক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে।

সচেতন মহলের অভিমত, সকল সমস্যা সমাধানের বর্তমান সময়ের বড় সমস্যা নলকূপের পানি নিষ্কাশনের ব্যাবস্থা করে পথচারী ও মুসল্লীদের কঠিন যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেয়া।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করেছে অবহেলিত কোটবাজারবাসী।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: রাজস্ব, ষ্টেশন
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন