উখিয়ায় বোরো ধানের বীজ পরিচর্যাতে ব্যস্ত কৃষক
আমন চাষাবাদের ধান ঘরে তোলা শেষ হতে না হতে বোরো চাষাবাদের বীজতলা পরিচর্যা ও জমি তৈরীতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে উখিয়া কৃষিজীবী মানুষেরা। বিশেষ করে সেচ সুবিধার আওতাধীন জমিতে চাষিরা বোরো ধানের বীজতলা তৈরিসহ আনুসঙ্গিক কাজে সময় পার করছেন।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এ সময়ে বীজতলা ও জমি তৈরির কাজ করতে হবে সঠিক ভাবে। তবেই মিলবে ভালো ফলন। অন্যথায় কাঙ্খিত ফলন না পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
রাজাপালং ইউনিয়নের দায়িত্বরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আবু তাহের বলেন, বোরো চাষাবাদে উপযুক্ত ধান হচ্ছে ব্রি-২৮, ব্রি-২৯, ব্রি-৪৭, ব্রি-৫৮, ব্রি-৬৩, ব্রি-৬৭, ব্রি-৬৯, ব্রি-৭৪, বিনা-১০, হাইব্রিড জাত ঝখ ৮ঐ, ময়না, টিয়া জাতের ধান। কৃষকেরা অনেক সময় তা নির্ণয় না করে ঢালাওভাবে বিভিন্ন প্রজাতের ধান চাষ করে থাকে। যার কারণে পোকা-মাকড়ের আক্রমনের শিকার হয়।
তিনি আরও বলেন, ব্রিধান ২৮ চিকন ও ভাত খেতে ভারি সু-স্বাদু হওয়ায় এর চাষ বেশি হয় কিন্তু এ জাতেই ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা থাকে বেশি। কৃষি বিশেষজ্ঞরা রোগ-বালই থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ব্রি-২৮ এর পরিবর্তে ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী ধানের জাত চাষ করার পরামর্শ দিয়ে থাকলেও কৃষকরা তা মানতে নারাজ।
কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, বোরো চাষাবাদের বীজতলা সঠিক ভাবে পরিচর্যা করা না হলে অনেক সময় চারার সমস্যা হয়ে থাকে। যেমন বীজতলা উচু-নিচু থাকায় সেচ দেওয়া সম্ভব হয়না। চারা উঠানোর সময় সমস্যা হয়।
তাদের মতে, যথাযথ ভাবে বীজতলা তৈরি করতে হবে। অতিরিক্ত ঠাণ্ডার সময় রাতের বেলা বীজতলা স্বচ্ছ পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে এবং দিনের বেলা তুলে ফেলতে হবে। এতে চারা ভালোভাবে বেড়ে উঠবে।
আগাছা ও পাখির আক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বীজ গজানোর ৪-৫ দিন পর বেডের উপর ২-৩ সেন্টিমিটার পানি রাখতে হবে।
চারাগাছ হলদে হয়ে গেলে প্রতি বর্গমিটারে ৭ গ্রাম ইউরিয়া উপরি প্রয়োগ করতে হবে। এরপরও যদি চারা সবুজ না হয় তবে প্রতি বর্গমিটারে ১০ গ্রাম করে জিপসাম দিতে হবে।
মূল জমি ভালোভাবে চাষ ও মই দিয়ে পানিসহ কাদা করতে হবে। জমিতে জৈবসার দিতে হবে এবং শেষ চাষের আগে দিতে হবে ইউরিয়া ছাড়া অন্যান্য সার।
চারার বয়স ৩০-৪০ দিন হলে মূল জমিতে চারা রোপণ করতে হবে। রোপণের ১৫-২০ দিন পর প্রথম, ৩০-৪০ দিন পর দ্বিতীয় এবং ৫০-৫৫ দিন পর শেষ কিস্তি ইউরিয়া সার উপরি প্রয়োগ করতে হবে।