এক রাস্তায় ২০ হাজার মানুষের স্বস্তি

fec-image

ইজিপিপি প্রকল্পে অর্থায়নে কক্সবাজারের পেকুয়ায় দীর্ঘ দিনের উন্নয়ন বঞ্চিত বাঁশখালীর পুঁইছুড়ি ইউনিয়নের সাইয়ের পাড়া স্টেশন থেকে পেকুয়ার টইটং ইউনিয়নের বটতলী স্টেশন পর্যন্ত ৬ মিটার প্রস্থের দুই কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করায় ১১ গ্রামের ২০ হাজার মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাঁশখালীর পুঁইছুড়ি ইউনিয়নের সাইয়ের পাড়া স্টেশন থেকে পেকুয়ার টইটং ইউনিয়নের বটতলী স্টেশন পর্যন্ত কোন সড়ক ছিল না। চলাচলের জন্য দুই মাস আগেও এখানে এক মিটারেরও কম প্রস্থের একটি আইল ছিল।

এ রাস্তাটি টেকসই করতে স্থানীয়রা দুই পাশে ঘাস লাগিয়েছেন। ইতোমধ্যে সে রাস্তায় ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক ও মোটর সাইকেল চলাচল করছে। যা দেখে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে এলাকাবাসী।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় এ প্রকল্পের তত্ত্বাবধানে ছিল উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়।

তথ্য নিয়ে জানা যায়, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার পার্শ্ববর্তী দুই উপজেলা বাঁশখালী ও পেকুয়ার এগারো গ্রামের প্রায় ২০ হাজার বাসিন্দাদের চলাচলের কোন রাস্তা ছিল না। এতে টইটং ইউনিয়নের হাবিব পাড়া, মালগারা পাড়া, স্কুল পাড়া, নতুন পাড়া, পুঁইছুড়ি ইউনিয়নের সিকদার পাড়া, হাসিয়ার পাড়া, শায়ের পাড়া, হায়দারীঘোনা, আলেকশাহ ঘোনা, নুরা বাপের পাড়া ও ফকির পাড়ার মানুষদের নিদারুণ দুর্ভোগ ও দুঃখ পোহাতে হয়েছে জন্মের পর থেকে।

স্থানীয় রাশেদুল ইসলাম বলেন, উন্নয়নের এ যুগে এসেও একটা রাস্তার অভাবে আমাদের পা থেকে জুতা খোলে হাঁটতে হাঁটতে বাড়ি ফিরতে হয়েছে। বর্ষায় আবার সাঁতরে পাড়ি দিতে হয়েছে সে পথ। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা চালাতে হয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের আবাসিক হোস্টেলে থেকে। দীর্ঘদিন আমাদের দাবি ছিল এখানে একটি অন্তত চলাচল উপযোগী একটা রাস্তা নির্মাণ করা হোক। অবশেষে এর বাস্তবায়ন দেখে আমরা আজ সত্যি উচ্ছ্বসিত।

স্থানীয় টইটং ইউপি সদস্য আবদুল জলিল বলেন, একটি রাস্তার অভাবে দুই উপজেলার এই এগারো গ্রামের মানুষদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে জন্মের পর থেকে। অনেকে বারবার আশ্বাস দিলেও তা কোন সময় এর বাস্তবায়ন হয়নি। শেষ পর্যন্ত আমি কর্মসৃজন প্রকল্পের মানুষ দিয়ে এ রাস্তা নির্মাণ করলাম।

শুরু থেকে এ রাস্তা নির্মাণের শেষ পর্যন্ত বিশেষভাবে তত্ত্বাবধানে ছিলেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস। হতদরিদ্রদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির মতো ছোট প্রকল্প ইজিপিপি দিয়ে এমন একটি প্রয়োজনীয় ও কার্যকর রাস্তা নির্মাণ করতে পারার মধ্যে নতুন সম্ভাবনা দেখছেন তাঁরা।

এ বিষয়ে উপসহকারী প্রকৌশলী মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের আওতাধীন অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি ইজিপিপি প্লাস হলো সমাজের পিছিয়ে পড়া ও অসচ্ছল ব্যক্তিদের জন্য। আমরা এই ছোট মানের প্রকল্পটি দিয়ে দুই উপজেলার বিশাল একটি জনগোষ্ঠীর দীর্ঘদিনের দুঃখ ঘোচাতে পেরেছি। এ প্রকল্প এভাবে উপকারভোগীদের অর্থনৈতিক সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি সামাজিক অবকাঠামো উন্নয়নে আরও বৃহৎ পরিসরের ভূমিকা রাখবে বলে মনে করি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন