ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে: বান্দরবানে প্রতিটি বিহার ও পল্লী মুখরিত

fec-image

পার্বত্য জেলা বান্দরবানে ভোর রাতে সূত্র পাঠের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে বা প্রবারণা পূর্ণিমা।

শনিবার (৩১ অক্টোবর) ভোরের আলো ছড়িয়ে পড়ার পর রাজগুরু বৌদ্ধ বিহার, উজানী পাড়া রাজগুরু বৌদ্ধ বিহারসহ প্রতিটি পাড়া হয়ে উঠেছে মুখরিত। ধর্মীয় গুরুদের শেষ হয়েছে ত্রৈমাসিক বর্ষাবাস। ভান্তেকে ছোয়াইং (খাদ্য) প্রদান করতে লাইন ধরে বিহারে যাচ্ছেন মারমা নারীরা।

করোনার কারণে আয়োজন একটু অন্যরকম হলেও উৎসাহ-উদ্দীপনার কমতি নেই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মানুষের।

বান্দরবানের সাতটি উপজেলার পাহাড়ি জনপদ এখন উৎসব মূখর। সফল আয়োজন সম্পন্ন করতে প্রস্তুতির শেষ নেই। গত কয়েকদিন থেকে জেলার প্রতিটি বৌদ্ধ পল্লী ও বিহার পরিচ্ছন্ন করেছে তরুণ-তরুণীরা। তৈরি করা হয়েছে রং বেরঙের ফানুস। হরেক রকম পিঠাপুলি। শনিবার রথযাত্রা নিয়ে শহর ঘুরবেন তরুণ-তরুণীরা। সন্ধ্যার পর আকাশ আলোকিত হবে ফানুসের আলোয়। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষের মতে, রবিবার রথযাত্রা বিসর্জন এবং ফানুস উড়ানোর মধ্যদিয়ে এই উৎসব শেষ হবে। পাপ মুক্ত হবে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকজন বলেছেন সংশ্লিষ্টরা।

বান্দরবান ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ইনষ্টিটিউট সূত্রে জানা গেছে, করোনা মহামারীর কারণে স্বাস্থ্যবিধি ও সীমিত পরিসরে এবার মাহা ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে ১৩৮২ উদযাপন উপলক্ষে অনুষ্ঠান সূচী তৈরি করা হয়েছে।

কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে শুক্রবার বিকাল ৪টায় অনলাইনভিত্তিক আলোচনা সভা (বিষয় প্রবারণা পূর্ণিমার শিক্ষা), সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রাজগুরু বৌদ্ধ বিহারে ফানুস উড়ানো, শনিবার যৌথ আয়োজনে বয়োজ্যৈষ্ট পূজা, রাজগুরু বৌদ্ধ বিহার ও উজানী পাড়া রাজগুরু বৌদ্ধ বিহারে বন্দনার উদ্দেশ্যে মহামঙ্গল রথযাত্রার শুভ উদ্বোধন এবং ফানুস উৎসর্গ, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় উজানী পাড়া রাজগুরু বৌদ্ধ বিহারে ফানুস উৎসর্গ অনুষ্ঠান, এবং রবিবার বিকাল ৪টায় অনলাইন ভিত্তিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মৈত্রীর আলো, সন্ধ্যা ৬টায় মহামঙ্গল রথ সর্বসাধারণের বন্দনার জন্য বান্দরবান পাড়া প্রদক্ষিণ ও ফানুস উৎসর্গ এবং রাত্রে উজানী পাড়ায় কালাঘাটা ঘাটে সাঙ্গু নদীতে রথ উৎসর্গ এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ফানুস উৎসর্গ অনুষ্ঠান।

বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম জানান, মহামারীর কথা বিবেচনা করেই বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের এই উৎসবে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। থানা পুলিশসহ সাদা পোষাকধারী পুলিশ প্রতিটি বিহার ও পল্লী পর্যবেক্ষণ ও নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন