কক্সবাজারে খাস কালেকশনের নামে অর্থ লুট, রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার
কক্সবাজারের সদরের প্রধান তিনটি বাজার খরুলিয়া, লিংকরোড এবং উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন বাজার। গুরুত্বপূর্ণ তিনটি বাজারে ইজারা নেই। কৌশলে খাস কালেকশনের নামে চলছে সরকারি অর্থ লুট। সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
অভিযোগ উঠেছে, অতি সুক্ষ্ম কৌশল খাটিয়ে বাজার তিনটির ইজারা যোগ্যতা নস্যাত করেছে একটি চক্র। যে কারণে বাজার তিনটি এখন উপজেলা প্রশাসনের হাতছাড়া হয়ে গেছে। ডাক দিতে পারছে না। সদর ভূমি অফিসের অধীনে নাম মাত্র মূল্যে খাস কালকেশন করে থাকে।
এই খাস কালেকশনের মাঝে বিশাল অঙ্কের শুভংকরের ফাঁকি হচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে। তাতে কিছু লোকের পকেট ভারী হলেও বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, উত্তম চক্রবর্তী নামক এক ব্যক্তি সিন্ডিকেটের প্রধান নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় রয়েছেন। তার হাতে সব হিসেব নিকেশ। তার পছন্দের লোক দিয়ে খাস কালেকশনের টাকা উত্তোলন করা হয়।
স্থানীয় কয়েকজন জনপ্রতিনিধি জানিয়েছেন, বাজার ইজারা যোগ্যতা হারালেও খাস কালেকশনের জন্য খোলা ডাক হতো। এবার তাও হয়নি। চুপিসারে সব আয়োজন সম্পন্ন করা হয়েছে। কয়েকজন ব্যক্তিকে দেওয়া হয়েছে বাজারের দায়িত্ব। তারা নিজেদের হিসাব-নিকাশ ঠিক রেখে বাকি টাকা দিচ্ছে উপজেলা প্রশাসনকে।
সদর ভূমি কার্যালয়ের তহসিলদার আবুল কাশেম জানান, সদর উপজেলা বাজারটিতে তার কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। এটি ইউএনও সাহেবের সি.এ উত্তম চক্রবর্তী নিয়ন্ত্রণ করেন।
খাস কালেকশন আদায় করে প্রতি মাসে কত টাকা করে জমা দেন এমন প্রশ্ন করলে তহসিলদার আবুল কাশেম বলেন, ‘এটা উত্তম দাদা ভালো বলতে পারবে। আপনি উনার কাছ থেকে জেনে নেন।’
এবিষয়ে জানতে চাইলে উত্তম চক্রবর্তী বলেন, উপজেলা বাজারটি নাছির নামে একজন নিয়ন্ত্রণ করেন। এছাড়া বাজারটি মহাসড়কের পাশে হওয়ায় ভূমি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ইজারা যোগ্য নয়।
তবে বাকী দুইটি বাজারও মহাসড়কের সাথে অবস্থিত। সেসব বাজার কেনো ইজারা আহ্বান করা হয়? জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দিতে পারেন নি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মচারীর সহযোগিতায় বাজার তিনটি বেআইনিভাবে খাস আদায়ের নামে লুটপাট করছে একটি সিন্ডিকেট।
খরুলিয়া বাজারের সাবেক এক ইজারাদার জানান, তার সময়ে প্রতি হাটে আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা কালেকশন করতেন। বর্তমানে ইজারা না থাকলেও আগের মতো টাকা আদায় করা হচ্ছে।
প্রশ্ন হচ্ছে, আদায়কৃত টাকা সঠিকভাবে সরকারের তহবিলে যাচ্ছে কিনা?
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি এবং নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাকারিয়া বলেন, তিনি যোগদানের আগেই বাজার তিনটি খাস কালেকশনে চলে গেছে। আপাতত বাজার নিয়ে কোনো অনিয়ম পরিলক্ষিতও হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।
কোন অভিযোগের সত্যতা পেলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান ইউএনও।