কক্সবাজারে বোরো ধানে মড়ক, কৃষকের মাথায় হাত
কক্সবাজারে বোরো চাষে চলতি মৌসুমে মড়কে পথে বসেছে শতশত কৃষক। এতে করে অন্তত কয়েক কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছেন কক্সবাজারের কৃষক। মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তাদের যখাযথ তদারকী না থাকা ও আবহাওয়ার সাথে এ জাতের ধানের মানানসই না হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানান কৃষকরা।
জানা গেছে, কক্সবাজার জেলায় কৃষি বিভাগের পরামর্শে চলতি বোরো মৌসুমে শতশত কৃষক এবার বি আর-২৮ ধানের চাষ করেন। অধিক ফলন ও কম সময়ে ধান পাওয়ার কথা বলায় কৃষকরাও ওই জাতের ধান চাষে ধাবিত হয়।
এই জাতের বীজের ফলন নিয়ে পরীক্ষামুলক কোন গবেষণা না করে বীজ বিক্রেতাদের যোগসাজসে সরাসরি কৃষকের মাঝে বীজ বিক্রি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত অনেক কৃষক। পাকাধান ঘরে তোলার আগেই জমিতে পোকার আক্রমনের এ দৃশ্য দেখে আশায় বুকবাঁধা কৃষকেরা বলছেন পথে বসা ছাড়া উপায় নেই। এই দুর্দিনে তারা সরকারের সহযোগিতা চায়।
খবর নিয়ে জানা গেছে, কক্সবাজার সদর, উখিয়া, রামু, চকরিয়া ও পেকুয়ায় বিস্তীর্ণ ফসল মাঠে এই রোগে ফসল নষ্ট হয়েছে প্রচুর।
কক্সবাজার সদর উপজেলার কাওয়ার পাড়ার মৃত আজম উল্লাহ সিকদারের পুত্র কৃষক আবু ছৈয়দ ও মৃত মো. ইদ্রিস মিয়ার পুত্র মুহিবুর রহমান অভিযোগ করে বলেন কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে গত বছর ডিসেম্বরে তারা ৩ কানি জমির জন্য ১হাজার ১৪০ টাকা দিয়ে ৩ বস্তা বীজ ধান বিআর-২৮ ক্রয় করেন। এই বীজ তারা সংগ্রহ করেন শহরের আলীর জাহালস্থ কৃষি বিভাগের গুদাম থেকে।
সদরের কুরুশকুল ফকির পাড়ার এডভোকেট সাইফুল্লাহ নুর বলেন, এ জাতের ধানের চাষ করে তাঁরও ৫ কানি জমির ধান একেবারে শেষ হয়ে গেছে। মনোপাড়ার আবু ছৈয়দ বলেন খুরুশকুলে অন্তত ৫০ একর জমির ধান গ্যাড়ি পোকায় নষ্ট করেছে।
একইভাবে উখিয়ার রত্মাপালং গয়ালমারা গ্রামের কৃষক জমির আহমদ জানান, তিনি ২ কানি জমি চাষ করেছেন। ভাল ফলন ও হয়েছিল এখন সবই শেষ হয়েগেল। এটি তার মাথায় যেন বাজ পড়েছে।
কৃষকদের এসব অভিযোগের ভিত্তিতে কক্সবাজার সদর উপজেলার কৃষি অফিসার গোলাম সরওয়ার তুষারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন ক‘দিন ধরে এ ধরনের অভিযোগ আসছে। তিনি বলেন বিআর-২৮ জাতের ধান এক সময়ে ফলন ভাল হতো।
সাম্প্রতিক সময়ে এটি কোন কোন জেলার আবহাওয়ার সাথে সহনীয় নয়। তাই কক্সবাজারে আগামীতে এ জাতের ধানের চাষ না করতে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করা হবে বলেও জানান তিনি। একই সাথে তিনি চলমান ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন।
এ প্রসঙ্গে উখিয়ার রত্নাপালং ইউনিয়নের উপসহ কারী কৃষিকর্মকর্তা মোসতাক আহমদ জানান, বতর্মানে ৫৫,৫৮,৬২,৬৩,৬৭ বিড়ি ধান পরিবেশ বান্ধব হওয়ায় নিরাপদ ফলন হচ্ছে। রত্নাপালং ইউনিয়নের ৩ ব্লকে বর্তমানে ৮৫০ হেঃ চাষাবাদ হয়েছে। ৩-৪ হেক্টরের কাছাকাছি জমিতে ২৮নং বিড়ি ধান যা পরিবেশ বান্ধব নয় চাষ করেছেন কৃষকরা। ওই ফসলে মড়ক লেগেছে যা কুবই দুঃখ জনক।
সাবেক মেম্বার মাহমুদুল হক চৌধুরী বলেন, রত্নাপালং ইউপির গয়ালমারা সহ ১৩পাড়া নিয়ে গঠিত ৩ ব্লকে পাকা ধানে মড়ক লেগে ৩ হেঃ মত জমির ৩০ জন চাষা ১ মুঠো ধানও পাবেনা। ওই পরিবার গুলো সর্বশান্ত হয়েগেছে। তারা সরকারের আর্থিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।