মাটিরাঙ্গায় অস্থির মাছ-মাংসের বাজার, বিপাকে সাধারণ মানুষ
পবিত্র ঈদকে সামনে রেখে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে বাজারে সব ধরনের মাংস ও মাছের দাম বেড়েছে কয়েক গুন । ব্রয়লার মুরগির সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে সোনালি মুরগির দামও। দেশি মুরগির দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। বাজারে অন্যান্য মাংসের দামও বাড়তি।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এতটা বেশি দামে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়নি। ব্যবসায়ীরা বলছে সর্বরাহ কম থাকায় বাজারে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ঈদের পরে ব্রয়লার মুরগীর ও সব ধরনের মাংসের সংকট হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।
মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) খাগড়াছড়ির মাটি-রাঙ্গা বাজার ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাজারে সোনালি, লেয়ার, ব্রয়লার ও দেশী মুরগীর দাম বেড়েছে এক মাসের ব্যবধানে কেজিতে ৬০ থেকে ৮০ টাকার মতো।
মাটিরাঙ্গা বাজারে সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩৪০ থেকে ৩৫০ টাকা, ব্রয়লার ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা, লেয়ার ৩৮০ থেকে ৩৯০ টাকা এবং দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকায়। খুচরা বাজারে ফার্মের মুরগির বাদামি রঙের ডিম প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায়।
উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি ও বাচ্চা সর্বরাহ কম এবং স্থানীয় বাজার ও জেলার বাহিরে সর্বরাহ করায় বাজারে ডিম ও মুরগির সংকট দেখা দিয়েছে উল্লেখ্য করে ব্যবসায়ী ও খামরী মুছা আলম বলেন, খাদ্য ও বাচ্চার মূল্যবৃদ্ধির ফলে মুরগির সংকট সৃষ্টি হয়েছে। যেটা আগে কোম্পানিগুলো ৫০ হাজার বাচ্চা সরবরাহ করতো বর্তমানে তা মাত্র ৫ হাজারে নেমে এসেছে। তাই দাম বেড়েছে মাত্রাতিরিক্ত। এভাবে চলতে থাকলে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বাজারে ব্রয়লার মুরগীর সব ধরনের মাংসের সংকট সৃষ্টির আশঙ্কা করছেন তিনি।
বাজারে মুরগির মাংস ছাড়াও সব ধরনের মাংসের দামই বাড়তি। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকায়, খাসির মাংস ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকা ।
মাংস ক্রেতা সাইদুর রহমান বলেন, বাজারে মাংসের দাম সাধারণ জনগণের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে। এত দাম দিয়ে মাংস কিনে খাওয়া সবার পক্ষ সম্ভব নয়।
গরুর মাংস বিক্রেতা ফারহান বলেন, বাজারে গরুর সংকট, দাম বেশি দিয়ে কিনতে হয় । তাই মাংস বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
তবে সামুদ্রিক (বরফের) মাছের দাম তেমন না বাড়লেও মিঠা পনির সব ধরনের মাছের দাম বেড়েছে। রুই মাছ মান-ভেদে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। চাষের তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২৫০ টাক ও পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৪০ টাকা।
মাছ বিক্রেতা আবুল কালাম বলেন, বেশি দামে কিনতে হয়। তাই বিক্রিও করতে হয় বেশি দামে। আমাদের কিছু করার নাই।
মাছ সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে বলে উল্লেখ্য করে ক্রেতা আব্দুল সালাম জানান, মাছের বাজারে অনন্য দিনের চেয়ে আজকে দাম বেশি। এখনো কিনতে পারি নাই দাম দেখছি।
তবে বাজারে সরবরাহ ভালো থাকায় কয়েক সপ্তাহ ধরে অপরিবর্তিত রয়েছে সবজির দাম। তবে গোল আলু ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, দুন-ধল ৮০ টাকা সিসিঙ্গা ৮০ টাকা, বেগুন প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা মরিচের দাম একটু বেশি, প্রতি কেজি ১২০ থেকে ১৫০ টাকা।