কক্সবাজারে শিক্ষার্থীদের ছাড়পত্র না দিয়ে সেই স্কুলেই থাকতে বাধ্য করছে
নিজস্ব প্রতিনিধি:
সুমি রুদ্র পিএসসি পাস করেছে কক্সবাজার শহরের বৌদ্ধমন্দির সড়কস্থ অক্সর্ফোড (প্লে থেকে ৯ম শ্রেণী) স্কুল থেকে। পিএসসি পাশের পরে মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তির জন্য পৌর-প্রিপারেটরি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছে। পাসও করেছে। কিন্তু সেই ছাত্রী আজ অবধি নিশ্চিত নন আদৌ ওই স্কুলে ভর্তি হতে পারবে কিনা। কারন ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় ছাড়পত্রটি তাকে দিচ্ছেনা অক্সফোর্ড স্কুল।
এদিকে ভর্তির শেষ সময় সোমবার দুপুর ১২ টা পর্যন্ত থাকায় ছাড়পত্রের জন্য অস্থির হয়ে পড়েছে তার অভিভাবকরা। তারা বার বার অক্সফোর্ড স্কুলে গিয়েও ছাড়পত্র পাচ্ছেন না। নানা কথা বলে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে তাদের। সর্বশেষ ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন এক সপ্তাহের আগে ছাড়পত্র দেওয়া হবেনা। ভর্তি হতে পারছে, কি পারছে না তা তার দেখার বিষয় নয়।
এ অবস্থায় অভিভাবকদের অভিযোগ অক্সফোর্ড স্কুলে প্লে থেকে নবম শ্রেণী পর্যন্ত থাকায় ওই স্কুলে শিক্ষার্থী রেখে দেওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষিকা এ কৌশল অবলম্বন করেছেন। এছাড়া তিনি অনেক অভিভাবককে সরাসরি বলেছেন তার স্কুলে শিক্ষার্থী রেখে দেওয়ার জন্য। এ অবস্থায় চরম সমস্যায় পড়েছে সুমি রুদ্রের অভিভাবক। তারা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছেন তার লেখা পড়া নিয়ে।
একইভাবে শহরের ঘোনার পাড়ার বাসিন্দা আকাশ নামে এক ছাত্রকেও ছাড়পত্র দিচ্ছে না অক্সফোর্ড স্কুল। আকাশও পৌর-প্রিপারেটরি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। তার অভিভাবক রিতা বার বার ছাড়পত্রের জন্য আসলেও তাকে ফিরিয়ে দিয়েছেন প্রধান শিক্ষিকা।
রিতা জানান, কয়েকদিন আগে প্রধান শিক্ষিকা আকাশের বাড়িতে গিয়ে অনুরোধ করেন ওই স্কুলে তাকে রেখে দেওয়ার জন্য। অক্সফোর্ডে খরচ বেশি হওয়ায় তারা রাজি হয়নি। সর্বশেষ গতকাল ছাড়পত্রের জন্য কাকুতি-মিনতি করলেও দেওয়া হয়নি। এক পর্যায়ে প্রধান শিকিক্ষকা ক্ষেপে যান। বলেন, কোন মন্ত্রী আসলেও ছাড় পত্র দেওয়া হবে না। যদিও তাদের সামনেই অনেককে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।
শুধু সুমি রুদ্র আর আকাশ নয় একই অভিযোগ অনেক অভিভাবকের। তারা বলছেন, অক্সফোর্ড স্কুল শিক্ষার্থী শূণ্যতা সৃষ্টি হওয়ার ভয়ে এ অপকর্মের আশ্রয় নিয়েছেন। কৌশল অবলম্বন করছেন ছাড়পত্র দেরিতে দেওয়া কথা বলে। যাতে পুনরায় ওই স্কুলেই থাকতে হয়।
এ ব্যাপারে অক্সফোর্ড স্কুলের সহকারি শিক্ষিকা লাকী দাশ বলেন, আকাশের অভিভাবক রিতা প্রধান শিক্ষিকার সাথে অভদ্রতা করেছেন। তাই তাকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। লাকী অভদ্রতা করেছে কিন্তু শাস্তি কেন কোমলমতি শিক্ষার্থীর উপর, এমন প্রশ্নে তিনি কোন উত্তর দিতে পারেননি।
অক্সফোর্ড স্কুলের প্রধান শিকিক্ষা শাহনেওয়ার বেগম বলেন, ছাড়পত্র চাইলেই পাওয়া যায়না। ছাড়পত্র নিতে হলে দরখাস্ত দিতে হবে। এছাড়া নানা অফিসিয়াল প্রক্রিয়া রয়েছে। এসব করতে একটু সময় লাগে। ভর্তির সময় চলে যাওয়ার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, তার কিছুই করার নেই।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এবিএম ছিদ্দীকুর রহামন জানান, কোন স্কুল যদি উদ্দেশ্যমূলকভাবে কোন শিক্ষার্থীকে ওই স্কুলে রাখতে বাধ্য করে তা সম্পূর্ণ বেআইনী। তবে এসব কিন্টার গার্ডেন সরকারি নিবন্ধনভোক্ত না হওয়ায় এসব দেখা শোনা করেন জেলা প্রশাসক।