কক্সবাজারে হামুনের তাণ্ডবে এখনো বিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ: নানামুখী ভোগান্তি

fec-image

ঘূর্ণিঝড় হামুনের তাণ্ডবের তিনদিন পার হলেও কক্সবাজার শহরসহ জেলার অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ও মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক স্বাভাবিক না হওয়ায় চরম ভোগান্তিতে রয়েছে মানুষ। বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় শহরে পানির জন্য হাহাকার চলছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে আসেন ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান।

এসময় মন্ত্রী বলেন, প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির যে আশঙ্কা করা হয়েছিল বাস্তবে তার পরিমান আরও বেশী। সরকার সবধরণের সহায়তা নিয়ে মানুষের পাশে থাকবে। পাশাপাশি মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে বিদ্যুৎ সরবরাহ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক দ্রুত চালুর মাধ্যমে স্বাভাবিক করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার রাতে ঘূর্ণিঝড় হামুনের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় কক্সবাজার শহরসহ জেলার উপকূলীয় এলাকাগুলো। এতে ৫ হাজার ১০৫টি বসত ঘর সম্পূর্ণ এবং ৩২ হাজার ৭৪৯টি বসত ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড়ে ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৫৪৯ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ঝড়ের আঘাতে উপড়ে গেছে অসংখ্য গাছপালা।

ঝড় ও গাছপালার আঘাতে বিদ্যুতের ৩৫৪টি খুঁটি ভেঙ্গে গেছে, বিকল হয়েছে ২৩টি ট্রান্সফর্মার, ৪৯৬টি স্থানে বৈদ্যুতিক তার ছিড়ে গেছে এবং ৮০০টি স্থানে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এতে কক্সবাজার শহরসহ জেলার অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন থাকায় চরম ভোগান্তিতে রয়েছে সাধারণ মানুষ। বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় পানির জন্য মানুষের হাহাকার চলছে।

কক্সবাজার বিদ্যুৎ সরবরাহ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল কাদের গণি জানান, কক্সবাজার শহরসহ দুর্যোগ কবলিত কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক চালুর জন্য সংস্কার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত অন্য এলাকায়ও সরবরাহ দ্রুত স্বাভাবিক করতে বিদ্যুৎ বিভাগ কাজ করছে।

অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে এসে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান জানান, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আশঙ্কার চাইতেও বেশী। জেলা প্রশাসনের কাছে ক্ষয়ক্ষতি পূরণে চাহিদাপত্র চাওয়া হয়েছে। সরকার পর্যাপ্ত বরাদ্ধের ব্যবস্থা নেবে। পাশাপাশি দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক চালুর জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে প্রশাসন ইতিমধ্যে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেছে। তাদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে নগদ অর্থ, জিআর চাল ও ঢেউটিন। বুধবার কক্সবাজার পৌরসভায় দেড়শ পরিবারের মাঝে ১ বান করে ঢেউটিন এবং নগদ ১ হাজার টাকা তাৎক্ষণিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন