কক্সবাজার জেলায় গণটিকা পাচ্ছে ৪৫,৬০০ জন

fec-image

সরকারী নির্দেশনার আলোকে শনিবার (৭ আগস্ট) সকাল থেকে কক্সবাজার জেলার সকল ইউনিয়নে করোনা টিকা প্রদানের কার্যক্রম আরম্ভ হয়েছে। ২৫ বছরের বেশি বয়সীদের টিকা দেয়া হচ্ছে। অগ্রাধিকার পাচ্ছে বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীরা।

সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমানের দেয়া তথ্য মতে, জেলায় ৮৪টি কমিউনিটি ক্লিনিকে একযোগে টিকা প্রদান করা হচ্ছে। প্রতিটি কেন্দ্রে ৩টি করে টিকাদান বুথ স্থাপন করা হয়েছে। সে হিসাবে মোট বুথ সংখ্যা দাঁড়ায় ২২৮টি। স্বাস্থ্যকর্মীরা সেখানে নিয়োজিত রয়েছেন।

সারাদেশের ন্যায় গণটিকা প্রদানের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করা হয়েছে। বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের অগ্রাধিকার দিয়ে তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে।

প্রাথমিকভাবে ইউনিয়নভিত্তিক ৬০০ জনকে আজ টিকা প্রদান করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সকলকে এই টিকার আওতায় আনা হবে।

যারা আগে রেজিস্ট্রেশন করেছেন, তারা যেখানে কেন্দ্র নির্ধারণ করেছেন, সেখানে টিকা নেবেন। ক্যাম্পেইনের টিকাদান আলাদাভাবে পরিচালিত হচ্ছে। ইউনিয়ন ও পৌরসভার বাদ পড়া ওয়ার্ডে ৮ ও ৯ আগস্ট টিকা কার্যক্রম চলবে।

জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের জনগোষ্ঠীর ৫৫ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য করোনার টিকা কার্যক্রম চলবে ১০ ও ১২ আগস্ট।

টিকার সর্বনিম্ন বয়সসীমা ২৫ বছর:
১৮ বছর বয়সীদের অনেকের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই, এতে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। এ কারণে টিকার সর্বনিম্ন বয়সসীমা ১৮ না করে ২৫ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে।

কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান জানান, প্রাথিমকভাবে পৌর এলাকায় ২৪০০ জনকে টিকা দেওয়া হচ্ছে। সেটি যেন শান্তিপূর্ণ এবং সফল ভাবে শেষ হয় সেজন্য পৌরবাসীর সহযোগিতা দরকার।

তিনি জানান, পৌরসভার সকল নাগরিকসহ পুরো জেলাবাসী করোনা ভ্যাকসিন পাবেন। সেই ক্ষেত্রে আগ্রহী অন্যদের হতাশ হওয়ার দরকার নেই। টিকা নিন সুস্থ থাকুন। পরিবারকে নিরাপদ রাখুন।

কক্সবাজার সদরের খুরুশকুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন জসিম জানান, সারাদেশের ন্যায় গণটিকা প্রদানের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করা হয়েছে। এতে বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীরা অগ্রাধিকার পাবে। সেভাবে আগেভাগে তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। ইউনিয়নের ৬০০ জনকে আজ টিকা প্রদান করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মোতাবেক পর্যায়ক্রমে সকলকে এই টিকার আওতায় আনা হবে, ইনশাআল্লাহ। সব জনগণকে করোনার টিকার আওতাভুক্ত হওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন জসিম।

কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ার‌ম্যান টিপু সুলতান জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অঙ্গিকার বাস্তবায়নে বিনামূল্যে করোনা টিকাদান কর্মসূচি আজ সকাল ৯টায় শুরু করেছেন। টিকা নিতে সবার উৎসবের আমেজ পরিলক্ষিত হচ্ছে।

কক্সবাজার পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল খালেক জানান, টিকা সম্পর্কে সাধারণ মানুষ যথেষ্ট সচেতন হয়েছে। রোকজন স্বতস্ফূর্তভাবে টিকা দিচ্ছে।

ইসলামপুর ইউনিয়নে বাঁশকাটা কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রেভাইডার (সিএইচসিপি) শওকত আলম জানিয়েছেন, তিনি ইসলামাবাদ জাহানারা ইসলাম বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে দায়িত্বে আছেন। সেখানে সকাল থেকে নারী-পুরুষরা স্বস্ফূর্তভাবে টিকা দিতে এসেছেন। সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে টিকা দেয়া হচ্ছে।

চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়ন সিপিপির ওয়ারলেস অপারেটর মুহাম্মদ শফিউল আলম জানান, পুর্ব ঘোষিত আদেশ মোতাবেক খুটাখালী ইউনিয়নে কোভিড ১৯ এর ভ্যাকসিন কার্যক্রম উদ্বোধন করেন চেয়ারম্যান মাওলানা মুহাম্মদ আবদুর রহমান।

টিকা প্রদানে নিয়োজিত আছেন- স্বাস্থ্য সহকারী আলমগীর জলিল, বেলাল উদ্দিন, বরকত উল্লাহ, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক জালাল আহমদ, পরিবার পরিকল্পনা অফিসের রাজিয়া, শাহীন সোলতানা, এমএসবি সেচ্ছাসেবী নুর খান, কৌশিক, আরিফুজ্জিসান, জাহাঙ্গীর, মেরিনা।

সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন- সিপিপির ইউনিয়ন টিম লিডার এসএম আবুল হোছাইন এবং ওয়ারলেস অপারেটর মুহাম্মদ শফিউল আলম।

চকরিয়ার লক্ষ্যারচর ইউপি চেয়ারম্যান জিএম কাইছার জানান, সকাল থেকে পুরুষ ও নারীদের আলাদা লাইনে টিকা দেয়া হচ্ছে। কোন ঝামেলা কিংবা বিশৃঙ্খলা নেই।

টিকা কার্যক্রমে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহমুদুল হক, স্বাস্থ্য পরিদর্শক মোমেনুল আলম, স্বাস্থ্য সহকারী মুজিবুল হক, স্বাস্থকর্মী আনজুমন নাহার, ছালেহা বেগম, সেলিনা আকতার, রেবেকা খানম, ইউপি সচিব জান্নাতুল ফেরদৌস কুমকুমসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

উখিয়ার রাজাপালং ইউপি সদস্য ইঞ্জিনিয়ার হেলাল উদ্দিন জানান, ইউনিয়নের ১, ২, ৩নং ওয়ার্ডে গণহারে করোনা টিকাদান শুরু হয়েছে। আজকে সকালে রাজাপালং একেএনসি হাইস্কুলে এই কার্যক্রম শুরু হয়।

এ সময় উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রঞ্জন বড়ুয়া রাজন ও রাজাপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীসহ ইউপি সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

টেকনাফ সদরের ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার এনামুল হক এনাম জানান, যথাসম্মানে টেকনাফ সদর পরিষদ কার্যালয়ে প্রাথমিক করোনা ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়। টিকার বিষয়ে সবাই আন্তরিক।

আগ্রহী ব্যক্তিদের আগামীতে চাহিদা সম্পন্ন টিকা পাওয়ার ব্যবস্থা করতে প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন বলেও জানান এনাম মেম্বার।

চকরিয়ার মগনামা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম জানিয়েছেন, সকাল থেকে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির মাঝেও টিকাপ্রার্থীরা কেন্দ্রে হাজির হন। আগে নিবন্ধিতদের টিকা দেওয়া হচ্ছে। করোনার এই কঠিন সময়ে টিকা পেয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে সন্তুষ্টি লক্ষ্য করা গেছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কক্সবাজার, গণটিকা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন