কক্সবাজার সংলাপের সুপারিশ নিউইয়র্কে রোহিঙ্গা সম্মেলনে তুলে ধরা হবে : পররাষ্ট্রসচিব

fec-image

কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের নিয়ে শুরু হওয়া তিন দিনের আন্তর্জাতিক সংলাপ থেকে প্রাপ্ত সুপারিশ আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিতব্য উচ্চ পর্যায়ের রোহিঙ্গা সম্মেলনে তুলে ধরা হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়াম।

তিনি বলেন, ‘এই সংলাপ মূলত সেপ্টেম্বরের বৈঠকের প্রস্তুতিমূলক ধাপ হিসেবে আয়োজন করা হয়েছে। এর বিশেষ তাৎপর্য হলো রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সরাসরি অংশগ্রহণ। তারা এখানে তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা, হতাশা এবং ভবিষ্যৎ প্রত্যাশার কথা জানাবেন।

এই মতামত ও আলোচনা নিউইয়র্ক সম্মেলনের আলোচনায় প্রতিফলিত হবে।’

রবিবার (২৪ আগস্ট) কক্সবাজারে রোহিঙ্গা সংলাপের ফাঁকে এক সাক্ষাৎকারে পররাষ্ট্রসচিব এ কথা বলেন।

তিনি জানান, সংলাপের কাঠামো চারটি থিম্যাটিক অধিবেশনের ওপর নির্ভর করে সাজানো হয়েছে।

এগুলো হলো মানবিক সহায়তা ও চলমান তহবিল সংকট মোকাবেলা, রাখাইন রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি ও প্রত্যাবাসনের জন্য আস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ, ন্যায়বিচার ও জবাবদিহি নিশ্চিতকরণ, টেকসই ও সময়োপযোগী সমাধানের দীর্ঘমেয়াদি কৌশল।

পররাষ্ট্রসচিব বলেন, সংলাপ শেষে একটি ‘চেয়ার’স সামারি’ তৈরি করা হবে। (চেয়ার’স সামারি’ হলো এই বৈঠকের পর আলোচনার মূল সারসংক্ষেপ এবং সুপারিশগুলোকে একটি নথিতে লিপিবদ্ধ করা, যা পরবর্তীতে সেগুলো নিউইয়র্ক সম্মেলনে তুলে ধরা যায়।)

তিনি আরো বলেন, ‘এই নথিতে আলোচনার মূল সারমর্ম ও সুপারিশসমূহ অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এটি নিউইয়র্ক সম্মেলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ আউটপুট ডকুমেন্ট হিসেবে কাজ করবে।’

মানবিক সহায়তার জরুরি প্রয়োজনীয়তার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সহায়তা না পেলে যে মানবিক দুর্যোগ সৃষ্টি হবে, তা আমরা এই সংলাপে জোরালোভাবে তুলে ধরছি। বর্তমানে যারা সহায়তা করছেন, তাদের পাশাপাশি নতুন উৎস থেকেও আর্থিক সহায়তা পাওয়ার চেষ্টা চলছে।’

রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

তবে এই প্রত্যাবাসনপ্রক্রিয়া কেবল বাংলাদেশের প্রচেষ্টার ওপর নির্ভরশীল নয়, মায়ানমারের অভ্যন্তরীণ পরিবেশ ও আস্থার ওপরও তা নির্ভর করে।’

পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান এখন শুধু একটি আঞ্চলিক নয়, বরং বৈশ্বিক দায়িত্বে পরিণত হয়েছে। তাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে।’

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের আগস্টে মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযানের পর বাংলাদেশে প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নেয়। এর পর থেকে সংকট নিরসনে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ অব্যাহত রেখেছে।

উৎস : কালেরকণ্ঠ অনলাইন, ২৪ আগস্ট, ২০২৫

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: আন্তর্জাতিক সম্মেলন, আরাকান, উখিয়া
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন