কাল কুতুপালং ক্যাম্প ম্যানেজমেন্ট কমিটির নির্বাচন : বিজয়ী হতে মরিয়া আলেকিনের শীর্ষ স্থানীয় নেতারা

fec-image

কাল উখিয়ার রেজিস্ট্রার্ড ক্যাম্প ম্যানেজমেন্ট কমিটির নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন রোহিঙ্গা বিদ্রোহী সংগঠন আলেকিন ও আরসার শীর্ষ স্থানীয় নেতারা। কৌশলে এ নির্বাচনে তাদেরকে বিজয়ী করতে কালো টাকা নিয়ে মাঠে নেমেছে এই দু’টি সংগঠন। তাদের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে ক্যাম্পের আনাচে-কানাচে ছেয়ে গেছে রঙ-বেরঙের ব্যানার-পোস্টারে। যার ফলে এ নির্বাচনকে ঘিরে চলছে নানান জল্পনা-কল্পনা। ক্যাম্প জুড়ে বিরাজ করছে চরম উত্তেজনা।

সরজমিন কুতুপালং রেজিস্ট্রার্ড ক্যাম্প ঘুরে দেখা গেছে, রেজিস্ট্রার্ড ক্যাম্প ম্যানেজমেন্ট কমিটির নির্বাচন কাল ২৫ নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে ২৮ নভেম্বর ৩ দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হবে। রেজিস্ট্রার্ড ক্যাম্পের ৭টি ব্লক(ওয়ার্ডে) এই নির্বাচনে শতাধিক রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। কিন্তু সাধারণ রোহিঙ্গাদের মধ্যে ক্যাম্প ম্যানেজমেন্ট কমিটির নির্বাচন নিয়ে তেমন কোন উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা না গেলেও প্রতিপক্ষ একটি গ্রুপের মধ্যে এই আমেজ পরিলক্ষিত করা গেছে। সাধারণ রোহিঙ্গারা এ নিয়ে মন্তব্য করতেও নারাজ। কারণ নির্বাচনে রোহিঙ্গাদের বিদ্রোহী সংগঠন আলেকিন এবং আরসার রয়েছে মূখ্য ভূমিকা, তাই তাদের ব্যাপারে কেউ বিরূপ মন্তব্য করলে খুন অথবা গুম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এরপরেও নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা জানান, ক্যাম্প ম্যানেজমেন্ট কমিটির নির্বাচনে কতিপয় সংগঠনের নেতারা তাদের মনোনীত প্রার্থীদের বিজয় করে আনতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে কুতুপালং জি-ব্লকের হাফেজ জালাল, এফ-ব্লকের মাস্টার গণি, ডি-ব্লকের মো. ইউনুছ। এসব বিতর্কিত রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে বলে তারা দাবি করেন।

সূত্রে জানা গেছে, পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন লস্করে-ই-তৈয়বা’র অর্থায়নে বিভিন্ন মসজিদ-মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে আলোচনায় চলে আসেন জি-ব্লক থেকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া হাফেজ জালাল। তার বিরুদ্ধে আরও অহরহ অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও বর্তমানে সে কুতুপালং রেজিস্ট্রার্ড ক্যাম্পের ডিমান্ড মাট সংলগ্ন একটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে সেখানে চালিয়ে যাচ্ছে আলেকিন এবং আরসা কর্মকাণ্ড।

রোহিঙ্গাদের অভিযোগ, হাফেজ জালাল ক্যাম্প ম্যানেজমেন্ট কমিটির নির্বাচনে জয়লাভ করতে পারলে পুরো রেজিস্ট্রার্ড ক্যাম্প কর্তৃত্ব বিদ্রোহী সন্ত্রাসী গ্রুপের হাতে চলে যাবে। তাই এসব বিতর্কিত ব্যক্তিতের নির্বাচন থেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান সাধারণ রোহিঙ্গারা। তারা আরও জানায়, বিদেশী বিভিন্ন নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের অর্থে ব্যানার-পোস্টার টাঙিয়েছে ক্যাম্পের অলিতে-গলিতে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পে চরম উত্তেজনার পাশাপাশি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার আশঙ্কা তাদের।

অভিযুক্ত কয়েকজনের মধ্যে কথা হয় হাফেজ জালালের সাথে। সে বলেন, আলেকিন আর আরসার সাথে আমার নুন্যতম সম্পর্ক নেই। এ ধরনের কোন সম্পৃক্ততা প্রমাণ দিতে পারলে আমি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াব। তবে বাকিদের ব্যাপারে কোন মন্তব্য করেনি তিনি।

কুতুপালং রেজিস্ট্রার্ড ক্যাম্পে ইনচার্জ (সিআইসি) খলিলুর রহমান খাঁন বলেন, অনেকে এই কথা মুখে বললেও কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। যদি এ ধরনের লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন