কোকো’র মৃত্যুতে তিন পার্বত্য জেলায় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে শোকের ছায়া

10419998_726230127498657_7874222144803268458_n

মুজিবুর রহমান ভুইয়া :

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো‘র মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে জিয়াউর রহমানের বিচরণ ভুমি পাহাড়ী জনপদ খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানে। এ তিন জেলার বিএনপির এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েছে।

দেশের এক চরম সঙ্কটকালে চলমান আন্দোলনের মাঝপথে হঠাৎ করে আরাফাত রহমান কোকো‘র অকাল মৃত্যুতে খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানের বিএনপি পরিবারে বইছে শোকের ছায়া। শোককে শক্তিতে পরিণত করেই রাজপথে থাকার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে তৃনমুল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। তারা বলেন, এ শোক শূধু বেগম খালেদা জিয়ারই নয়, এ শোক দেশের প্রতিটি জাতীয়তাবদী সৈনিকের।

খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ওয়াদুদ ভুইয়া, আরাফাত রহমান কোকো‘র মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে এ শোককে শক্তিতে পরিনত করে এ সরকারের পতন নিশ্চিত করতে নেতাকর্মীদের আহবান জানিয়ে বলেন, দেশনেত্রী তার এক সন্তানকে হারালেও দেশে তার লাখ লাখ সন্তান তার পাশে আছি আর থাকবে। দেশের চরম সঙ্কটকালে এতো বড় একটি শোক কাটিয়ে উঠা সত্যিই অনেক কঠিন উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোকোর মৃত্যু কোনো অপমৃত্যু নয়। ১/১১ পর মইনুদ্দীন-ফখরুদ্দীন সরকার জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করে। তারই অংশ হিসাবে কোকোকে গ্রেফতার করে চরম নির্যাতন করায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর চিকিৎসার জন্য প্যারোলে মুক্তি নিয়ে তিনি চিকিৎসার জন্য বিদেশ গমন করেন। ১/১১ সরকারের হাত ধরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে নিজেদের নামের সকল মামলা প্রত্যাহার করে নিলেও কোকোর মামলায় শাস্তি দিয়ে তাকে বিদেশে মা, ভাই, পরিবার, স্বজনহীন অবস্থায় থাকতে বাধ্য করে মানসিক নির্যাতন করেছেন। যার ফলে তার মৃত্যু হয়েছে। কাজেই আমরা এই মৃত্যুকে অপমৃত্যু হিসাবে দেখি না।

একজন সফল মা হিসেবে বিএনপি চেয়ারপর্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যেন এই শোক সইতে পারেন সে প্রার্থনা করে রাঙ্গামাটি জেলা বিএনপির সভাপতি দীপেন দেওয়ান বলেন, আরাফাত রহমান কোকো‘র মৃত্যুতে বেগম খালেদা জিয়ার মতো পাহাড়বাসী তার সাথে সমভাবে শোকাহত। এ শোককে শক্তিতে পরিনত করে বেগম খালেদা জিয়ার পাশে থাকার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন রাঙ্গামাটি জেলা বিএনপির এ শীর্ষ নেতা। জেলা বিএনপি একটি শোক বিবৃতিও দিয়েছে এ উপলক্ষে।

বান্দরবান জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যাপক ওসমান গনি বিএনপি‘র চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো‘র মৃত্যুকে হৃদয় বিদারক উল্লেখ তিনি বলেন, দেশের ক্রান্তিকালে দেশনেত্রী বেগম খালেদা যখন কার্যত গৃহবন্দী ঠিক তখনই তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো‘র মৃত্যুতে বান্দরবানের প্রতিটি জাতীয়তাবাদী সৈনিক শোকে শোকাভিভুত। আরাফাত রহমান কোকো‘র মৃত্যুতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাথে সাথে আমরা সমভাবে শোকাহত।

খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক ও মাটিরাঙ্গা পৌরসভার মেয়র শোক প্রকাশ করে বলেন, আরাফাত রহমান কোকো‘র মৃত্যুতে বেগম খালেদা জিয়া বিএনপি‘র চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াই শুধু সন্তান হারাননি বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মী তাদের একজন ভাইকে হারিয়েছে। এ শোক কখনো ভুলবার নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ শোককে শক্তিতে পরিনত করে জালিম সরকারের বিদায় ঘটাতে হবে।

ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো‘র মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে রাঙ্গামাটি জেলা ছাত্রদল। রাঙ্গামাটি জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আবু সাদাৎ মো: সায়েম বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এক সন্তানকে হারিয়েছেন, কিন্তু আমরা লাখো সন্তান তার বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবো। তিনি বলেন, আমরা কোকো‘র মৃত্যু শোককে শক্তিতে পরিণত করে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান নেতৃত্বে দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে রাজপথে লড়াই করে যাবো।

খাগড়াছড়ি জেলা ছাত্রদলের সাধারন সম্পাদক মো: ইব্রাহিম খলিল, আরাফাত রহমান কোকো‘র মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে বলেন, এক কোকো চলে গেলেও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার লাখ লাখ কোকো বাংলাদেশের প্রতিটি জনপদে ছড়িয়ে আছে এবং দেশত্রেী বেগম খালেদা জিয়ার সুর্য্য সন্তান হয়ে বেঁচে থাকবে।

প্রসঙ্গত, শনিবার দুপুরে বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো মালয়েশিয়ায় মারা গেছেন। সকালে বুকে ব্যথা অনুভব করলে হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন