খাগড়াছড়িতে উপজাতীয় যুবকদের গণধর্ষণে ত্রিপুরা কিশোরীর মৃত্যু
স্থানীয় কার্বারী বিনয় ত্রিপুরা জানান, পূর্ব পরিচিতির সূত্রধরে আটককৃত তিন যুবক গতরাতে ধনিতা ত্রিপুরা বাড়িতে ছিল। এ সময় মেয়ের বাবা-মা কেউ বাড়িতে ছিল না। সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ধনিতার কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে প্রতিবেশীরা ঘরের দরজা খুলে। বিছানার উপর ধনিতার লাশ দেখতে পায়।
খাগড়াছড়ির ভাইবোন ছড়ায় মাকে ফোন দিয়ে মেয়ে ধনিতা ত্রিপুরা (১৭) নামে এক কিশোরীকে গণধর্ষণ করে হত্যা করেছে ৩ মদ্যপ। এ ঘটনায় পুলিশ তিন ধর্ষককে গ্রেফতার করেছে।
নিহত ধনিতা বড়পাড়া এলাকার নল মোহন ত্রিপুরার ছোট মেয়ে।
আটককৃতরা হলো- ভাইবোন ছড়া ইউনিয়নের ভিজাচন্দ্র কার্বারী পাড়ার কম্বল ত্রিপুরা (১৯), রুমেন ত্রিপুরা (২২) ও কিরণ ত্রিপুরা (২০)।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (১৩ মে) খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার ভাইবোন ছড়ার বড় পাড়ার বাসিন্দা মন মোহন ত্রিপুরা ও তার স্ত্রী স্বরলেখা ত্রিপুরা জেলার দীঘিনালায় বেড়াতে যায়। রাতে বাড়ি ফেরার কথা থাকলেও পারেনি। এ অবস্থায় কিশোরী ধনিতা ত্রিপুরা বাসায় একা ছিলেন।
স্বরলেখা ত্রিপুরা জানান, দীর্ঘ দিন থেকে এলাকার কিছু বখাটে কম্বল ত্রিপুরার সাথে তার কিশোরী মেয়ে ধনিতা ত্রিপুরার বিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ দিয়ে আসছিলো। সোমবার রাত ৯টার দিকে তাদের অনুপুস্থিতির সুযোগে কম্বল ত্রিপুরা ও সঙ্গীরা বাসায় গিয়ে মোবাইলে মেয়েকে তুলে নেওয়ার হুমকি দেয়। এক পর্যায়ে মোবাইল বন্ধ করে দেয়।
মঙ্গলবার (১৪ মে) সকাল ৯টার দিকে ধনিতা ত্রিপুরার বড় ভাই রামেন্দ্র ত্রিপুরার স্ত্রী খোঁজ নিতে গিয়ে ননদের লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়।
স্থানীয় কার্বারী বিনয় ত্রিপুরা জানান, পূর্ব পরিচিতির সূত্রধরে আটককৃত তিন যুবক গতরাতে ধনিতা ত্রিপুরা বাড়িতে ছিল। এ সময় মেয়ের বাবা-মা কেউ বাড়িতে ছিল না। সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ধনিতার কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে প্রতিবেশীরা ঘরের দরজা খুলে। বিছানার উপর ধনিতার লাশ দেখতে পায়। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন তিন যুবককে স্থানীয়রা ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাহাদাত হোসেন টিটো জানান, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান পরিমল ত্রিপুরার কাছ থেকে খবর পেয়ে লাশ উদ্বার করে ময়না তদন্তের জন্য খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ধর্ষকরা ছিলো মদ্যপ অবস্থায়।
প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। গণধর্ষনে কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় তিন ধর্ষককে আটক করা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এমএম সালাহউদ্দিন জানান, লাশের সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে তিন যুবককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।
খাগড়াপুর মহিলা সমিতির সভাপতি শেফালিকা ত্রিপুরা বলেন, ধর্ষকদের যথাপোযুক্ত বিচার না হওয়ায় ধর্ষণের ঘটনা দিনদিন বাড়ছে। ধনিতা ত্রিপুরার ওপর পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে বলে শুনেছি। সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।