খাগড়াছড়িতে জলোৎসব দিয়ে নানা রঙের আয়োজনে তিনদিন ব্যাপী সাংগ্রাইং শুরু
খাগড়াছড়ি ব্যুরো:
পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর প্রাণের উৎসব বৈ-সা-বি-কে ঘিরে পুরো খাগড়াছড়ি জেলায় আনন্দের রং ছড়িয়ে পড়েছে। উৎসবের তৃতীয় দিনে আজ থেকে শুরু হয়েছে মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাইং উৎসব। মারমা সম্প্রদায়ের সাংগ্রাইং উৎসবকে ঘিরে খাগড়াছড়ি জেলা শহর নানা রং-এ রঙ্গিন হয়ে উঠেছে। এ উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ ছিল মারমা জনগোষ্ঠীর বর্ণাঢ্য সাংগ্রাইং র্যালী ও জলকেলি বা জলোৎসব। সকালে বৌদ্ধ বিহারগুলোতে ক্যং ফুল পূজার মধ্য দিয়ে সাংগ্রাই উৎসবের সূচনা হয়।
মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী জলকেলি বা জলোৎসবে তরুণ-তরুণীরা একে অপরের দিকে পানি নিক্ষেপ করে উল্লাস প্রকাশ করে। মার্মা জনগোষ্ঠীর বিশ্বাস এই পানি উৎসবের মধ্য দিয়ে অতীতের সকল দুঃখ-গ্লানি ও পাপ ধুয়ে-মুছে যাবে। সে সাথে তরুণ-তরুণীরা একে অপরকে পানি ছিটিয়ে বেছে নেবে তাদের জীবন সঙ্গীকে।
সকালে খাগড়াছড়ি শহরের পানখাইয়া পাড়ায় মারমা উন্নয়ন সংসদের উদ্যোগে আয়োজিত সাংগ্রাইং উৎসবের উদ্বোধন করেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। তার সাথে সাথে উৎসবের রং ছড়িয়ে পড়ে চারিদিকে। পরে শহরে বের হয় বর্ণ্যঢ্য র্যালি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী, খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মীর মুশফিকুর রহমান, ডিজিএফআই খাগড়াছড়ি অধিনায়ক মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী, জেলা প্রশাসক মো. রাশেদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মো. আলী আহমেদ খান ও খাগড়াছড়ি রিজিয়নের ষ্টাফ অফিসার মেজর মোহাম্মদ মুজাহিদুল ইসলাম ছাড়াও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য, সামরিক-বেসামরিক উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এছাড়াও উৎসব উপলক্ষে নানা খেলা-ধুলা,পিঠ উৎসব, মারমাদের ঐতিহ্যবাহী নৃত্য ও ওপেন কনসার্টের আয়োজন করা হয়।
বৈসাবি উৎসব উপভোগ করতে এ বছর খাগড়াছড়ি এসেছে দেশী-বিদেশী বিপুল সংখ্যক পর্যটক।
বৈসাবি এক সময় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর জন্য হলেও এখন সার্বজমিন ও জাতীয় উৎসবে পরিণত হয়েছে। এই উৎসবের মধ্য পাহাড়ের সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতি আরো সু-দৃঢ় হোক এ প্রত্যাশা জনপ্রতিনিধিসহ সকলের।