খাগড়াছড়িতে ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনায় ২৫০ জনের নামে মামলা: শান্তিপূর্ণভাবে অবরোধ পালিত

Khagrachhari AL BNP Clash Photo (01) 05.01.2015

নিজস্ব প্রতিনিধি :

৫ জানুয়ারী বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করার ঘটনায় খাগড়াছড়ি জেলায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনায় সদর থানার উপ-পরিদর্শক আবদুল্লাহ আল-মোমেন বাদী হয়ে, জেলা বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মিল্লাত, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এম.এন আবছার, মাটিরাঙা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম, রামগড় উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম ভূইয়া ফরহাদসহ ৮০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের প্রায় ২৫০ জন নেতাকর্মীকে অজ্ঞাত করে সদর থানায় মামলা দায়ের করেছে।

মামলা দায়েরের পর সোমবার গভীর রাতে ঐ মামলায় জেলা শহরের আরামবাগ এলাকার নিজ বাড়ি থেকে জেলা মৎসজীবী দলের সভাপতি মো. জয়নাল আবেদীনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

অপরদিকে গতকাল (মঙ্গলবার) শান্তিপূর্ণভাবেই চলছে বিএনপির ডাকা অনির্দিষ্টকালের সড়ক অবরোধ। অবরোধের কারণে দূরপাল্লা ও অভ্যন্তরীণ সড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। নাশকতার আশংকায় জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

এদিকে গত ৫ জানুয়ারি খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির মিছিলে আওয়ামী লীগ কর্মীদের হামলা, পুলিশের গুলি, দলীয় কার্যালয় ভাংচুর, নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে সন্ত্রাসী হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপি।

বিবৃতিতে জেলা বিএনপি অভিযোগ করে বলেছে, আওয়ামী লীগ ৫ জানুয়ারি জেলা বিএনপি’র শান্তিপূর্ণ কালো পতাকা মিছিলে বিনা উস্কানিতে হামলা, দলীয় কার্যালয় ভাংচুর, লুটপাট এবং পুলিশের গুলি ও টিয়ারশেলে বিএনপি নেতাকর্মীরা আহত হয়েছে। ঐ ঘটনায় সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা হরিনাথ পাড়া এলাকায় জেলা সেচ্ছাসেবক দলের সহ-সাধারণ সম্পাদক কাওছার আলম রতন, সেচ্ছাসেবক দলের আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক শহীদ মিয়া ও আদর্শ পাড়া এলাকায় স্বেচ্ছাসেবক দলের ৬নং পৌর ওয়ার্ড সভাপতি মীর আলমের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করেছে। অথচ মামলা করা হযেছে বিএনপি নেতাদের নামে।

এসব ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপি’র সভাপতি, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক সাংসদ ওয়াদুদ ভূইয়া। তিনি অচিরেই এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে নেয়ার দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপি’র পক্ষ থেকে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেবেন বলেও হুঁশিয়ার করেছেন।

উল্লেখ্য, খাগড়াছড়িতে ছাত্রলীগ-ছাত্রদলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি’কে কেন্দ্র করে সোমবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বিএনপি, আওয়ামীলীগ ও পুলিশের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষে ২ সাংবাদিকসহ উভয়পক্ষের ৩৫ জন আহত হয়। গুলিবিদ্ধ হয়েছে উভয়পক্ষের ৬ জন।

শহরের মাষ্টারপাড়া, ভাংগাব্রিজ, পেঙ্গুইন মোড় এলাকায় থেমে থেমে ঘন্টা ব্যাপী এ সংঘর্ষ চলে। পুলিশ ৪৭ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ও লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। শহরে দুই ম্যাজিষ্ট্রেটসহ ১ প্লাটুন বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়। আওয়ামীলীগ ও পুলিশী হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার খাগড়াছড়ি জেলায় সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ ডেকেছিল জেলা বিএনপি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন