খাগড়াছড়িতে নিরাপত্তার দাবীতে ৩৫ সাংবাদিকের করা জিডি আদালতে
নিজস্ব প্রতিবেদক : খাগড়াছড়িতে নিরাপত্তার দাবীতে ৩৫ সাংবাদিকের জিডি আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। খাগড়াছড়ি সদর থানার অফিসার্স ইনচার্জ মো. মাসুদ আলম চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সাংবাদিকদের জিডির বিষয়টি তদন্তের অনুমতি চেয়ে বুধবার আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালতের নির্দেশ পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, খাগড়াছড়ি পৌর মেয়র রফিকুল আলমের অনুগত সন্ত্রাসী দিদার ওরফে কসাই দিদার বাহিনীর হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে খাগড়াছড়ি সদর থানায় ৩৫ সাংবাদিক একটি জিডি করেন। একদিন জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে নির্যাতিত সাংবাদিক নীরব চৌধুরীও থানায় আলাদা জিডি করেন।
প্রসঙ্গত, খাগড়াছড়ির আলোকচিত্র সাংবাদিক নীরব চৌধুরীকে ধরে নিয়ে পৌরসভার মেয়র রফিকুল আলম কর্তৃক মারধরের প্রতিবাদে মঙ্গলবার খাগড়াছড়ি পৌর শাপলা চত্বরে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে মেয়র মো. রফিকুল আলমের অনুগত হিসেবে পরিচিত মো. দিদার ওরফে কসাই দিদারের নেতৃত্বে ৪০ থেকে ৪৫ জন সন্ত্রাসী ‘একটি-দুটি সাংবাদিক ধর, ধরে ধরে জবাই কর, সাংবাদিকদের আস্তানা জ্বালিয়ে দাও পুড়িয়ে দাও’ ইত্যাদি শ্লোগান দিয়ে জঙ্গী মিছিল নিয়ে মানববন্ধনস্থলে হাজির হয়।
একপর্যায়ে তারা মানববন্ধন কর্মসূচিতে ব্যবহারের জন্য সাংবাদিকদের আনা মাইক নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সাংবাদিকদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও মানববন্ধনে অংশ নেওয়া প্রত্যেক সাংবাদিককে জবাই করে হত্যা করার হুমকি দেয় দিদার। খাগড়াছড়ির সাংবাদিকরা এ প্রসঙ্গে বলেন, সাংবাদিকরা শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন কর্মসূচি পালনকালে সেখানে মেয়রের অনুগত দিদার ও তাঁর সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা মাইক কেড়ে নিয়ে আমাদের হত্যাসহ নানা হুমকি দিয়ে বক্তব্য রাখলেও এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত সদ্য পদোন্নতি পাওয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রইছ উদ্দিন ও সদর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তারেক মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান সন্ত্রাসীদের নিবৃত্ত না করে উল্টো সাংবাদিকদের কর্মসূচী সংক্ষিপ্ত করে চলে যাওয়া পরামর্শ দেন। যা মানববন্ধনে অংশ নেওয়া সকল সাংবাদিককে হতবাক করেছে।
ঘটনার আকস্মিকতায় সাংবাদিকেরা তাৎক্ষণিক খাগড়াছড়ির সাংসদ কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান ও পুলিশ সুপার মো. মজিদ আলীর সঙ্গে দেখা করে তাঁদের বিষয়টি জানান।পাশাপাশি সাংবাদিকরা নিজেদের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় জিডি করেন।
এই সন্ত্রাসী ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন খাগড়াছড়ির সাংসদ কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী, জেলা বিএনপির সভাপতি ওয়াদুদ ভূঁইয়া, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি কলিম সরওয়ার ও সাধারণ সম্পাদক মহসিন চৌধুরী, বিএফইউজের সহসভাপতি শহীদ উল আলম, যুগ্ম সম্পাদক তপন চক্রবর্তী, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রিয়াজ হায়দার ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী। জনপ্রতিনিধি ও পেশাজীবী নেতারা খাগড়াছড়িতে সাংবাদিকদের কর্মসূচিতে বাধা সৃষ্টিকারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনকে কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।