১০ দিন টিকে থাকতে পারলে খাগড়াছড়ি করোনামুক্ত

fec-image

আর মাত্র ১০ দিন টিকে থাকতে পারলে খাগড়াছড়ি করোনাভাইরাস মুক্ত। এমনটি আশাবাদ খাগড়াছড়ি সিভিল সার্জন ডাক্তার নুপুর কান্তি দাশের। আর তার কৃতিত্ব খাগড়াছড়ির সংসদ সদস্য, সেনাবাহিনী ও জেলা পরিষদ, বিজিবি, জেলা প্রশাসক, পুলিশ প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ ও একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীদের সম্মলিত প্রচেষ্টা।

তার মতে, খাগড়াছড়িকে করোনা ভাইরাসের সংক্রামণ মুক্ত রাখতে এক ঝাঁক তরুণ-তরুণীর স্বেচ্ছাসেবী দল ২১ মার্চ থেকে এ প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। পুরো জেলায় করোনা সচেতনতা ও প্রতিরোধ, ত্রাণ বিতরণ, জীবাণুনাশক স্প্রে করাসহ সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে কাজ করছে এঁরা। আর এ কাজে প্রতিদিন বাড়ছে সেনাবাহিনীসহ শুভানুধ্যায়ীদের ভালবাসাও। তাদের এ প্রয়াস সর্ব মহলের প্রশংসা কুড়িয়েছে।

প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের সংক্রামণরোধে সারাদেশে চলছে অঘোষিত লক-ডাউন। প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হতে সরকারি নির্দেশনা জারীর আগ থেকে অনেকে নিজেদের ঘরবন্দী করে রেখেছেন। তার মধ্যে পাহাড়ি জেলা খাগড়াছড়িতে অপু দত্তের নেতৃত্বে প্রায় শতাধিক তরুণ-তরুণী নিজেদের নাম লিখিয়েছেন আর্তমানবতার কাজে। খাগড়াছড়ি ও বাইরের নানা শ্রেণীপেশা মানুষের দেয়া গণচাঁদায় গরিব, দুস্থ ও নিম্ন  আয়ের মানুষের বাড়িতে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে ত্রাণ নামের ভালবাসার উপহার।

পাহাড়ের দূর্গম পথ অতিক্রম করে ত্রাণ পৌঁছানো ছাড়াও মাসাধিককাল ধরে খাগড়াছড়িকে করোনার সংক্রামণ থেকে বাঁচাতে কাজ করছে এঁরা। স্বেচ্ছাশ্রমে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের উদ্যোগে জেলার প্রবেশমুখ জিরোমাইল দিয়ে আসা যাত্রী ও পরিবহনে ছিটানো হচ্ছে জীবাণুনাশক। একই কার্যক্রম চলছে জেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ও অলিগলিতে।

খাগড়াছড়ি স্বেচ্ছাসেবী করোনা সচেতনতা ও প্রতিরোধ টিমের প্রধান অপু দত্ত বলেন, আমরা বিপদ আসন্ন দেখে মাচ’ মাসের শুরু থেকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে রাস্তায় নেমেছি। যতদিন পর্যন্ত না করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত খাগড়াছড়িবাসীকে সুস্থ ও ভাল রাখার এ কাজ চালিয়ে নেয়ার পরিকল্পনার কথা বলছেন উদ্যোক্তারা।

খাগড়াছড়ি পরিবেশ সু-রক্ষা আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আবু দাউদ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের একঝাঁক তরুণের স্বেচ্ছাশ্রমে বিভিন্ন সামাজিক উদ্যোগকে সারা দেশের জন্য দৃষ্টান্ত মন্তব্য করে বলেন, অপু দত্তের নেতৃত্বে এক ঝাঁক তরুণ-তরুণী প্রায় পৌনে দুই মাস ধরে পুরো জেলাকে করোনাভাইরাস মুক্ত রাখতে নিরলসভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছে।

খাগড়াছড়ি সিভিল সার্জন ডাক্তার নুপুর কান্তি দাশ বলেন, খাগড়াছড়িকে করোনামুক্ত রাখতে খাগড়াছড়ির সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি, সেনাবাহিনীর খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. ফয়জুর রহমান, গুইমারা রিজিয়ন কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. শাহরিয়ার জামান, জেলা পরিষদ, চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী, জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস, পুলিশ সুপার আব্দুল আজিজ, স্বাস্থ্য বিভাগ ও অপু দত্তের নেতৃতে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরা নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। খাগড়াছড়ি জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আগামী আরও ১০ দিন যদি আমরা পুরো জেলায় সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিতসহ স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে পারি তাহলে প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস থেকে খাগড়াছড়ি মুক্ত হতে পারে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন