গহিন পাহাড়ে গা-ঢাকা দিয়েছে নিরুদ্দেশ তরুণরা

fec-image

দুর্গম পাহাড়ের বান্দরবানে জঙ্গি আস্তানার খোঁজ ও সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের তৎপরতা বেড়ে যাওয়ায় তাদের দমনে যৌথ অভিযান চলছে। এছাড়াও নিরুদ্দেশ হওয়া তরুণদের আটকের চেষ্টা চলছে।

মনে করা হচ্ছে, নিরুদ্দেশ হওয়া তরুণরা গহিন পাহাড়ে পালিয়ে আছে। এই অভিযানে র‌্যাব হেলিকপ্টার ব্যবহার করে তাদের সদস্যদের কাছে খাবার ও অন্যান্য সরঞ্জাম পৌঁছে দিচ্ছে। জঙ্গিদের ধরতে হেলিকপ্টার থেকে প্রচারপত্রও বিলি করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক এলাকার লোকজনকে আতঙ্কিত না হতে মাইকিং করা হয়েছে।

জানা গেছে, এখন পর্যন্ত পাহাড়ে দুটি আস্তানার ব্যাপারে তথ্য পাওয়া গেছে। আরও গোপন আস্তানা রয়েছে কিনা, চলছে সেই খোঁজ।

রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মামুন শিবলী জানান, রুমা ও রোয়াংছড়িতে অভিযানের বিষয়গুলো যৌথ বাহিনী দেখছে। চলমান অভিযান সম্পর্কে প্রশাসনকে এখনও বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। এছাড়া পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।

বড়থলী ইউনিয়নের বিলপাড়ার রাইত কুমার তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, মাথার ওপর প্রতিদিন হেলিকপ্টার ঘুরছে। বিলাইছড়ি ফারুয়া ইউনিয়নে আত্মীয়ের ঘরে আশ্রয় আছি।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘জঙ্গিদের গ্রেপ্তার করা না পর্যন্ত অভিযান চলবে।
জানা যায় গহিন বনে তাদের আস্তানা রয়েছে।’

গড়ে নতুন জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপ কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) যোগসূত্র পাওয়ার পর পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় যৌথ অভিযান চলছে। নতুন জঙ্গি সংগঠনের সদস্যদের ধরতে যৌথ বাহিনী এই অপারেশন চালাচ্ছে। এ কারণে বান্দরবানে ভ্রমণে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে সোমবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রুমা ও রোয়াংছড়ির পর্যটন কেন্দ্রগুলো ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করে স্থানীয় প্রশাসন।

সম্প্রতি র‌্যাব জানিয়েছিল, জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারকস্ফীয়া নামে নতুন একটি জঙ্গি সংগঠন গড়ে উঠেছে। আর ঘরছাড়া তরুণদের অনেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের দুর্গম এলাকায় আত্মগোপনে রয়েছে। সেখানে তাদের বিভিন্ন সংগঠনের ছত্রছায়ায় প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে। গোপনে তারা উগ্রপন্থি কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

অভিযানের বিষয়ে র‌্যাব জানায়, অভিযানের অংশ হিসেবে দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় প্রচারপত্র বিলি ও মাইকিং করা হচ্ছে। জঙ্গিদের অবস্থানের তথ্য দিতে পারলে এক লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়ারও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে ।

এ ছাড়া উগ্রপন্থিদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানানো হচ্ছে। পুরস্কার ঘোষণার পর এখন পর্যন্ত কেউ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জঙ্গিদের ব্যাপারে খোঁজ দেয়নি।

দেশে সক্রিয় হরকাতুল জিহাদ, আনসার আল ইসলাম, জেএমবিকে একত্র করার চেষ্টায় একটি গ্রুপ। ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে পাহাড়ি এলাকায় কুকি-চিনদের ক্যাম্পে হিজরতকারীদের ১২ জনকে পাঠানো হয়েছিল। এর পর ওই বছরের নভেম্বরে ২০ জনের একটি গ্রুপ সেখানে যায়। এ ছাড়া ডিসেম্বরে গিয়েছিল ১৭ জনের আরেকটি দল। চলতি বছরের আগস্টে একটি গ্রুপ সেখানে পৌঁছে। এ চক্রের পেছনে শামিন মাহফুজ অন্যতম ভূমিকা পালন করেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন