চকরিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত পাঁচ ভাইয়ের পরিবারের মাঝে পুলিশের সহায়তা প্রদান

fec-image

প্রয়াত বাবার শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান শেষে বাড়ি ফেরার পথে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ঘাতক পিকআপ ভ্যানের চাপায় নিহত চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের মালুমঘাটস্থ হাসিনাপাড়ার বাসিন্দা পাঁচ ভাইয়ের শোকাহত পরিবারকে দেখতে গিয়েছেন কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এডিশনাল এসপি) মো.রফিকুল ইসলাম।

গতকাল সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারী) বিকালে এডিশনাল এসপি রফিকুল ইসলাম সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত পাঁচভাইয়ের বাড়িতে পৌঁছে শোকাহত পরিবার সদস্যদের শান্তনা দেন। বলেন, নিহত পাঁচ ভাইয়ের পরিবারের পাশে থাকবে কক্সবাজার জেলা পুলিশ। ওইসময় এডিশনাল এসপি রফিকুল ইসলাম কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান এর পক্ষথেকে নিহত পাঁচভাইয়ের মা মানু বালা শীলের হাতে নগদ সহায়তা হিসেবে একলাখ টাকা তুলে দেন।

একইসময়ে জেলা পুলিশের মাধ্যমে পুলিশের সাবেক ডিআইজি শৈবাল দাশ ও সানন্দা জুয়ের্লাসের মালিক রনজিত ঘোষের পক্ষথেকেও নিহত পাঁচভাইয়ের মায়ের হাতে আরও ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন এডিশনাল এসপি রফিকুল ইসলাম।

শোকাহত পরিবার সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার সময় এডিশনাল এসপি রফিকুল ইসলাম বলেন, একটি পরিবারে একসঙ্গে পাঁচ ভাইয়ের মৃত্যুর ঘটনায় কক্সবাজার জেলা পুলিশ গভীরভাবে শোকাহত ও দু:খ প্রকাশ করছে। তিনি বলেন, যেহেতু সংগঠিত দুর্ঘটনার মূল হোতা পিকআপ চালক গ্রেফতার হয়েছে, আদালত তাকে রিমান্ডে দিয়েছে, আমরাও চাই এইধরণের ঘটনার একটি যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করা যায়, যাতে সড়কে প্রাণহাণির লাগাম টানা সম্ভব হয়।

তিনি শোকাহত পরিবারকে ধৈয্য ধরার আহ্বান জানিয়ে বলেন, দুর্ঘটনার পেছনে গাড়ি চালকের দায় থাকলে সেই কোনভাবেই আইন থেকে পার পাবেনা, আপনারা শোককে শক্তিতে পরিণত করে জীবনধারণে চেষ্টা করুন, মহান আল্লাহ আপনাদের সহায় হোক।

একইসঙ্গে এডিশনাল এসপি রফিকুল ইসলাম বলেন, পাঁচভাইয়ের পরিবারকে সবধরণের সহযোগিতা করতে বদ্ধপরিকর কক্সবাজার জেলা পুলিশ। সেইজন্য জেলা পুলিশ সুপার মো.হাসানুজ্জামান মহোদয় আমাদের পাঠিয়েছেন, আপনাদের পাশে থাকার অভিপ্রায়ে সহনুভুতি ও সহমর্মিতা জানাতে। বলেন, মনে রাখবেন জেলা পুলিশ আপনাদের পাশে আছে।

নিহত পাঁচভাইয়ের বাড়িতে পরিদর্শনকালে এডিশনাল এসপি রফিকুল ইসলামের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (চকরিয়া সার্কেল) মো. তফিকুল আলম, চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ওসমান গনী, চকরিয়া থানার অপারেশন অফিসার এসআই রাজীব চন্দ্র সরকার, ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাসানুল ইসলাম আদর, ইউনিয়ন পরিষদের ফখরু উদ্দিন, মেম্বার রফিক আহমদ, আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মোহাম্মদ ফোরকান ছাড়াও স্থানীয় এলাকাবাসি এবং নিহত পাঁচভাইয়ের পরিবার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত: গত ৮ ফেব্রুয়ারী ভোরে বাবার শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা মালুমঘাট ষ্টেশনের অদুরে বনবিভাগের নার্সারী এলাকায় বেপরোয়া গতির পিকআপ ট্রাকের চাপায় একই পরিবারের পাঁচ সহোদর অনুপম সুশীল (৪৫), নিরুপম সুশীল (৩৮), দীপক সুশীল (৩৬) ও চম্পক সুশীল (৩৬), স্বরণ সুশীল (২৮) নিহত ও এক বোন হীরা সুশীল (২৭) অপর দুই ভাই রক্তিম সুশীল (৩৫), প্লাবন সুশীল (২৪) গুরুতর আহত হন। হতাহত সবার বাড়ি ডুলাহাজারা ইউনিয়নের মালুমঘাটস্থ হাসিনাপাড়া গ্রামে। তাঁরা ওই গ্রামের মৃত সরোজ সুশীলের ছেলে-মেয়ে।

এদিকে একসঙ্গে একই পরিবারের পাঁচ ভাই নিহত হওয়ার ঘটনায় এখনো তাদের পরিবারে চলেছে আহাজারী। তাদের কান্নায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন