চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন লক্ষ্মীছড়ির বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ছাত্তার
৭১’র রণাঙ্গনের সৈনিক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ছাত্তার চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। হয়ত আর বেশি দিন বাঁচবে না। কথা বলবে না, আর কারো সাথে। অনলাইন কিংবা পত্রিকায় যখন এই সংবাদটি ছাপা হবে বাঙ্গালির গৌরব মহান বিজয় দিবস ১৬ ডিসেম্বর বাকি থাকবে হাতেগণা কয়েক দিন।
মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ছাত্তারের হয়ত জীবনের শেষ বিজয় দিবস এটি। কুচকাওয়াজে অংশ নেয়া এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সম্মান গ্রহণ করার চিঠিও উপজেলা পরিষদ থেকে হয়ত পেয়েছেন। মহান সৃষ্টিকর্তাই ভাল জানেন, আর কত দিন তিনি বেঁচে থাকবেন-তবে ডাক্তার স্পষ্টই বলে দিয়েছে সে আর বেশি দিন বাঁচবে না, কারণ মরণ ব্যাধি লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত মুুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ছাত্তার। বাঁচতে হলে চিকিৎসা খরচ হিসেবে যে অর্থ প্রয়োজন, এই মুক্তিযোদ্ধার ঘরে গিয়ে বাঁশের ভাঙ্গা বেড়া আর ছাউনি দেখে বুঝতে আর বাকি নেই যে, অসহায়, অবহেলিত, নির্মমভাবে বিছানায় কাতরানো এই মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ছাত্তারের পক্ষে কি চিকিৎসার বিশাল অংকের টাকা জোগাড় করা কী আদৌ সম্ভব?
মুুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ছাত্তারের বাসায় গেলে সবারই দৃষ্টি ছিল প্রতিবেদকের দিকে। তাদের সবারই একই কথা, আপনারা যারা এত সাংবাদ লিখেন, কি লিখেন, কার জন্য লিখেন একজন মুক্তিযোদ্ধা বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে তা আপনাদের লেখনিতে আসে না-এমন প্রশ্নই ছিল অধিকারের ভাষায়। মৃত্যুর সংবাদ পেলে নিশ্চই সাংবাদিকরা লিখবে, বড় ক্যামেড়া টিভি চ্যানেল আসবে, রাষ্ট্রিয় মর্যাদায় দাফন হবে, আরো কত কিছু। কিন্তু বেঁচে থাকতে তার পাশে দাঁড়নোর মানুষ কি এগিয়ে আসবে না।
সেই ১৯৭১সাল, বিয়ের বয়স হয় নি, টগবগে এক যুবক। আর ফিরে আসবে কিনা সেই চিন্তা না করেই মা-বাবাকে কোনো রকম বুঝ দিয়ে দেশ মাতৃকার রক্ষার মুক্তিযুদ্ধে চলে গেলেন। ৯ নাম্বার সেক্টর কমান্ডার মেজর জলিলের নেতৃত্বে যুদ্ধ করেছেন সাতক্ষীরার কালিগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায়। পাকবাহিনীর সাথে বেশ কয়েকবার সম্মুখযুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিলেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ছাত্তার।