জলাশয় ভরাট করে অর্ধশতাধিক অবৈধ স্থাপনা

fec-image

চকরিয়ার বদরখালী ইউনিয়নের বাজারপাড়ার কাছে অবস্থিত বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১১নং স্লুইচ গেইটের পতিত জলাশয় ভরাট করে একে একে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে যাচ্ছে একটি চক্র। ভরাট করার পর এসব জমি মোটা অংকের বিনিময়ে বিক্রিও করে দিচ্ছে চক্রটি। এরফলে জোয়ারের পানি আগমন-নির্গমনের পথ একেবারেই সঙ্কুচিত হয়ে পানি চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বৃষ্টি কিংবা বন্যার পানি নির্গমনের একমাত্র পথটি সরু হয়ে যাওয়ার কারণে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে পুরো এলাকা পানিতে ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, উক্ত স্লুইচ গেইটের পশ্চিমে দক্ষিণে এবং পূর্ব পাশে ভরাট করে দোকান ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। সেখানে ইতিমধ্যে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে প্রায় অর্ধশত স্থাপনা।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রকাশ্যে সরকারি জলাশয় ভরাট ও বিক্রি অব্যাহত থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এব্যাপারে নিশ্চুপ রয়েছে।

বিশেষকরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্লিপ্ততার সুযোগে চক্রটি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। চিরতরে বেহাত হচ্ছে সরকারি কোটি কোটি টাকার স্থাবর সম্পত্তি। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, চোখের সামনে সরকারি জমি ভরাট করে এতে স্থাপনা করছে কতিপয় ব্যক্তি অথচ কেউ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, জনৈক জামাল নামের এক ব্যক্তি দীর্ঘদিন যাবত বেশ কিছু পতিত জলাশয় ভরাট করে বিক্রি করে যাচ্ছেন। সম্প্রতি উক্ত জামাল সর্বশেষ ভরাট করে একখন্ড জমি আক্তার নামের এক ব্যক্তিকে বিক্রি করেছেন মোটা অংকের বিনিময়ে। আক্তার উক্ত জমিতে পাকা স্থাপনা করে দোকান বসিয়েছেন এবং উক্ত স্থাপনার পিছনে সে নিজেই টিন ও পলিথিনের ঘেরায় আড়াল করে জলাশয় ভরাট করে যাচ্ছেন।

জানতে চাইলে আক্তার উক্ত জমি ৬ লক্ষ টাকার বিনিময়ে জামালের কাছ থেকে কিনে নিয়েছেন বলে দাবি করেন। তবে তিনি উক্ত জমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের মানিকানাধীন জমি বলে স্বীকার করেছেন।

এভাবেই প্রতিদিন যে যার মত করে জমি দখল করে সেখানে দোকান ঘর নির্মাণ করছেন।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্থানীয় মাঠ কর্মী মোহাম্মদ জাকের হোসাইন জানান,‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্লুইচ গেইটের পতিত জমি ভরাট করে দোকান ঘর নির্মাণের বিষয়ে পাউবোর কক্সবাজারস্থ নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানিয়েছি, এসব লোক প্রভাবশালী তারা কোন বাধা মানছেন না।’

এবিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড কক্সবাজার কার্যালয়ের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ইশতিয়াক নয়ন জানান,‘বদরখালীতে আমাদের ১১নং স্লুইচ গেইট ও এর আশপাশ দখল করে বেআইনীভাবে দোকান ঘর নির্মাণের বিষয়ে আমরা তালিকা করেছি। উচ্ছেদের জন্য সব প্রক্রিয়াও সম্পন্ন করা হয়েছে। চলমান লকডাউনের পরে উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হবে।’

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: অবৈধ স্থাপনা, জলাশয়
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন