জোড়া শতকে বাংলাদেশের রেকর্ড সংগ্রহ
খেলা ডেস্ক:
পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ৩২৬ রানের ইনিংস গড়েছিলো বাংলাদেশ। গত বছর এশিয়া কাপে মিরপুরেই এই রেকর্ড গড়েছিল বাংলাদেশ। সেবারেই ছিল পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের শেষ ম্যাচ। যদিও ওই ম্যাচটিতে শেষ পর্যন্ত হতাশায় পুড়তে হয়েছিল বাংলাদেশকে। হারতে হয়েছিল ৩ উইকেটের ব্যবধানে।
সেই পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আবারও মুখোমুখি বাংলাদেশ এবং আবারও নিজেদের ইতিহাসে দলীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়লো বাংলাদেশ। তামিম আর মুশফিকের জোড়া সেঞ্চুরিতে ৩২৬ রানকে টপকে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ালো ৩২৯ রান।
নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে টাইগারদের সংগ্রহ ৬ উইকেট হারিয়ে ৩২৯ রান। জিততে হলে পাকিস্তানকে ৩৩০ রান করতে হবে।
এর আগে পাকিস্তান বধে বাংলাদেশের ইনিংস শুরু করতে ব্যাট হাতে আসেন বাঁহাতি ওপেনার তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। পাকিস্তান পেসার জুনায়েদ খানের প্রথম ওভার থেকে টাইগারদের দুই ওপেনার দুই রান নিয়ে ইনিংস শুরু করেন।
১৪২ ওয়ানডে ম্যাচ খেলা বাংলাদেশের অভিজ্ঞ ওপেনার তামিম ইকবাল বেশ সতর্ক থেকেই ব্যাট চালান। আর তাকে সঙ্গ দিয়ে ওপেনিং জুটিতে ৪৮ রান তুলতে সহায়তা করেন ৮টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলা সৌম্য সরকার।
১৪তম ওভারের দ্বিতীয় বলে রান আউটের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন সৌম্য সরকার। আউট হওয়ার আগে ৩৬ বলে তিনটি চার হাঁকিয়ে ২০ রান করেন সৌম্য।
সৌম্যর বিদায়ের পর ব্যাটিং ক্রিজে আসেন মাহামুদুল্লাহ রিয়াদ। বিশ্বকাপের চমক জাগানো মাহামুদুল্লাহ নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে না পেরে ৫ রান করে রাহাত আলীর বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন।
দলীয় ৬৭ রানের মাথায় দুই ব্যাটসম্যানকে হারানোর পর তামিম আর মুশফিক মিলে দলকে বড় সংগ্রহের দিকে নিয়ে যান। এ দুই টাইগার ব্যাটিং ক্রিজে অসাধারণ দৃঢ়তায় ব্যাট চালিয়ে পাক শিবিরে দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ান। তামিম এবং মুশফিক ১৭৮ রানের জুটি গড়েন।
ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম শতক হাঁকিয়ে নিজের জাত চেনান তামিম ইকবাল। ৭৫ বলে ক্যারিয়ারের ২৯তম অর্ধশতক হাঁকানো তামিম ১১২ বলে নিজের শতক পূর্ণ করেন।
বিশ্বকাপের সাফল্যের পর ফেভারিট হিসেবে মাঠে নেমে তার প্রমাণ দেন তামিম-মুশফিক। তবে, ইনিংসের ৪২তম ওভারে ওয়াহাব রিয়াজের বলে মোহাম্মদ রিজওয়ানের তালুবন্দি হয়ে ফেরেন তামিম। আউট হওয়ার আগে বাঁহাতি এ ওপেনার করেন ১৩২ রান। ১৩৫ বলের ইনিংসে তামিম ১৫টি চার আর তিনটি ছক্কা হাঁকান।
তামিম বিদায় নিলেও ব্যাটিং ক্রিজে থেকে ব্যাটে ঝড় তুলেন মুশফিক। মিডলঅর্ডারের ব্যাটিং স্তম্ভ খ্যাত মুশফিক ৬৯ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তৃতীয় শতক পূর্ণ করেন। অবশেষে ৭৭ বল মোকাবেলা করে পাক বোলারদের তুলোধুনো করে ১৩টি চার আর দুটি ছয়ে মুশফিক করেন ১০৬ রান। ইনিংসের ৪৮তম ওভারে উইকেটের পিছনে সরফরাজের তালুবন্দি হন মুশফিক।
সদ্য আইপিএল খেলে আসা সাকিব আল হাসান করেন ২৭ বলে ৩১ রান। আর প্রস্তুতি ম্যাচে শতক হাঁকানো সাব্বির রহমান করেন ১৫ রান। মাত্র ৭ বলে তার এ ইনিংসটি ছিল এক চার আর এক ছয়ে সাজানো। নাসির হোসেন ৩ রান করে অপরাজিত থাকেন।
পাওয়ার প্লে’তে টাইগাররা কোনো উইকেট না হারিয়ে তোলে ৪৪ রান। ২০ ওভার শেষে টাইগারদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২ উইকেট হারিয়ে ৬৭ রান। ৩০ ওভার শেষে টাইগারদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২ উইকেট হারিয়ে ১৪০ রান। ৪০ ওভার শেষে টাইগারদের সংগ্রহ গিয়ে দাঁড়ায় ২ উইকেট হারিয়ে ২৩৬ রান।
মিরপুর শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।