টেকনাফে অপরাধ জগৎ নিয়ন্ত্রণ করে ১৮ মামলার আসামী ইব্রাহিম ও মিজান

image_47007

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার :
দেশের সর্ব দক্ষিণের সীমান্ত শহর টেকনাফের মহেশখালীয়া পাড়ার শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী ১৮ মামলার আসামী ইব্রাহিম ও মিজান এর বিরুদ্ধে দৈনিক আলোকিত উখিয়াসহ বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকায় গত ৭ মে সংবাদ প্রকাশের পর তারা কৌশল পরিবর্তন করে ইয়াবা ব্যবসা সহ বিভিন্ন অপরাধ জগৎ নিয়ন্থন করার জন্য মহেশখালীয়া পাড়া সাইক্লোন সেল্টারকে নিরাপদ আস্থানা হিসাবে ব্যবহার করছে।

গভীর রাত পর্যন্ত উক্ত সাইক্লোন সেল্টারে তারা অবস্থান নিয়ে অবৈধ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ সহ নাশকতার পরিকল্পনা নেওয়ায় সাধারন মানুষের মধ্যে ভীতিকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। তাদের এসব অপকর্মে সহায়তা করে থাকে খোদ তাদের পিতা আবুল বশর সহ ক্ষমতাসীন এক চেয়ারম্যান। আইন শৃংখলা বাহিনীর লোকজন সহ থানা পুলিশের অগোচরে তারা সাইক্লোন সেল্টারটি নিরাপদ আস্থানা হিসাবে ব্যবহার করায় পুলিশ ও আইন শৃংখলা বাহিনীর লোকজন তাদের গ্রেপ্তারের জন্য একাধিক বার অভিযান পরিচালনা করেও গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি বলে জানা গেছে। সচেতন মহলের মতে ইয়াবা সম্রাট ইব্রাহিম, মিজান ও তাদের পিতা আবুল বশরকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে অপরাধ জগতের বহু অজানা তথ্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে।

অভিযোগে প্রকাশ, টেকনাফ উপজেলার মহেশখালীয়া পাড়ার আবুল বশরের ছেলে মোঃ ইব্রাহিম (২৭) ও মিজানুর রহমান (২৪) তার পিতা আবুল বশরের সহযোগীতায় ২০০৬ সাল থেকে নিরহ লোকজনের জমি দখল, চাঁদাবাজী, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও ইয়াবা ট্যাবলেটের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ সহ নানা নাশকতা মূলক কর্মকান্ড করে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে আসছেন। তাদের অত্যচার নির্মম নির্যাতন ও চুরিকাঘাতে পঙ্গুত্ব বরণ করেছে বহু মানুষ। তাদের ভয়ে এলাকার কেউ প্রতিবাদের সাহস পায়না।

এরও শীর্ষ এসব সন্ত্রাসীদের নানা অপর্কম ও ইয়াবা ট্যাবলেট ব্যবসার সাথে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে (০১) টেকনাফ থানার মামলা নং- ২১, তারিখ- ২৭/০৩/২০০৬ ইং, ধারা- ১৪৩/৩৮৫/৩০৭/৩২৬/৩৭৯ দঃ বিঃ, (০২) টেকনাফ থানার মামলা নং- ১২, তারিখ- ১৬/০৪/২০০৬ ইং, ধারা- ১৪৩/৩২৩/৩০৭/৩২৪/৩৮৫/৩৭৯ দঃ বিঃ, (০৩) টেকনাফ থানার জিডি নং- ৪৬৩, তারিখ- ১১/০৪/২০০৭ ইং, (০৪) টেকনাফ থানার মামলা নং- ০৭, তারিখ- ০৫/০৯/২০০৮ ইং, ধারা- ১৪৩/৩৪১/৩২৩/৩২৪/৩২৬/৩০৭ দঃ বি, (০৫) টেকনাফ থানার মামলা নং- ০৬, তারিখ- ০৪/০৯/২০০৮ ইং ধারা- ৪৪৮/৩৮০/৪১১ দঃ বিঃ, (০৬) টেকনাফ থানার মামলা নং- ০৮, তারিখ- ১২/০১/২০০৯ ইং ধারা- ১৪৩/৩৪১/৩২৬/৩২৪/৩৭৯/৫০৬ দঃ বিঃ, (০৭) টেকনাফ থানার মামলা নং- ৩৮, তারিখ- ২৬/০৩/২০১২ ইং ধারা- ১৪৩/৪৪৭/৩২৩/৩২৪/৩২৬/৩০৭/৩৭৯ দঃ বিঃ, (৮) সি.এম.পি কোতয়ালী থানার মামলা নং- ১০(০৪)১৩ তারিখ- ০২/০৪/২০১৩ ইং, ধারা- ১৯৯০ ইং সনের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৯ (১) এর টেবিল (৯) খ, (৯) টেকনাফ থানার মামলা নং- ৪৫, তারিখ- ৩১/০৫/২০১৩ ইং, ১৯৯০ ইং সনের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৯ (১) এর টেবিল (৯) খ, (১০) টেকনাফ থানার মামলা নং- ৩৯, তারিখ- ১৮/০৬/২০১৩ ইং ১৯৯০ ইং সনের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৯ (১) এর টেবিল (৯) খ, (১১) টেকনাফ থানার মামলা নং- ৩৮, তারিখ- ১৮/০৭/২০১৩ ইং, ধারা- ১৪৩/৪৪৭/৪৪৮/৩৪১/৩২৩/৩২৪/৩০৭/ ৩৭৯/৩৮০/৪২৭/৫০৬ দঃ বিঃ, (১২) টেকনাফ থানার সাধারণ ডায়েরী নং- ৬৪০, তারিখ- ১৫/০৮/২০১৩ ইং, (১৩) সি আর মামলা নং- ১২৩/১৪ইং (টেকনাফ) তারিখ- ০৯/০৪/২০১৪ ইং, ধারা- ৩২৩/৩২৫/৩০৭/৩৪৯ দঃ বিঃ, (১৪) টেকনাফ থানার মামলা নং- ১০, তারিখ ০৭/০৩/২০১৪ ইং, ধারা- ১৪৩/৪৪৭/৪৪৮/৩২৩/৩৪২/৩৮০/৪২৭ দঃ বিঃ রুজু হয়।

খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, এসব মামলায় শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী ইব্রাহিম, মিজান ও তার পিতা আবুল বশর র্দীঘ দিন কারাভোগও করেছেন। জামিনে এসে তারা আবারো অপকর্মে লিপ্তি হয়। জানা যায়, মূর্তমান আতংক এসব সন্ত্রাসীদের অধিকাংশ মামলায় বর্তমানে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারী আছে। কিন্তু থানা পুলিশ তাদের রহস্য জনক কারনে গ্রেপ্তার করেনা। নাম প্রকাশে অনিশ্চুক টেকনাফের মহেশখালীয়া পাড়ার অসংখ্য মানুষ অভিযোগ করে জানান, শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী ইব্রাহিম ও মিজান এবং তাদের পিতা আবুল বশরকে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্ত শাস্তি দেওয়ার জন্য গত ৬ মে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, পুলিশ সদর দপ্তর সহ বিভিন্ন সংস্থার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

ইয়াবা সম্রাট ইব্রাহিম ও মিজানের পিতা আবুল বশর জানান, তার পরিবারের লোকজনদের বিরুদ্ধে একটি প্রভাবশালী মহল উঠে পড়ে লেগেছে। তাদের বিরুদ্ধে ইয়াবা ট্যাবলেটের মামলা সহ বর্তমানে ২৩ টি মামলা আছে। সব মামলায় সাজানো বলে তার দাবী। তবে এলাকাবাসী আবুল বশরের এসব অভিযোগ নাটকীয় ও মিথ্যা বলে দাবী করেন। এদিকে টেকনাফ থানার নাম প্রকাশে অনিশ্চুক এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, এসব বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ সহ সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। 

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন