মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে টানা বৃষ্টি

টেকনাফে ৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি, পাহাড়ে বসবাসকারীদের সরে যেতে মাইকিং

fec-image

সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে টানা বৃষ্টির কারণে কক্সবাজারের টেকনাফে ৫ হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে কয়েকটি গ্রাম, ফসলি জমি-চিংড়ি ঘেরও। প্রাণহানি রোধে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের সরে যেতে মাইকিং করছে স্থানীয় প্রশাসন।

মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) সকাল থেকে টানা বৃষ্টির কারণে টেকনাফ উপজেলায় পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের অন্যত্র সরে যেতে বলা হচ্ছে।

উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গিখালী লামার পাড়া, মৌলভী বাজার, ওয়াব্রাং, চৌধুরী পাড়া, জালিয়া পাড়া, সাবরাং ইউনিয়নের ফতেহআলী পাড়া, বাহারছাড়া, কুড়াবুইজ্জ্যা পাড়া, মুন্ডার ডেইল গ্রামের বসবাসকারী আড়াই হাজার পরিবারের ৫ হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি টেকনাফ পৌরসভার ১২টি ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় ধসের আশঙ্কা রয়েছে ২০ হাজার মানুষের। ভারী বৃষ্টিতে পাহাড় ধসে এসব মানুষের নতুন করে প্রাণহানির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

পুরান পল্লানপাড়া পাহাড়ের নিচে বসবাসকারী মো. হাশেম বলেন, ‘টানা বৃষ্টির কারণে ভয়ে আছি। এ সময়ে নির্ঘুম রাত কাটে। অন্য সময় তেমন একটা ভয় কাজ করে না। তাছাড়া এখান থেকে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে।’

ভারী বর্ষণের পারিবন্দি হয়ে পড়েছেন রঙ্গিখালী লামার পাড়ার বাসিন্দা জাহেদা বেগম। তিনি বলেন, ‘বাড়িতে পানি ঢুকেছে, ফলে ঘরের সবকিছু পানিতে তলিয়ে গেছে। সকাল থেকে শুধু শুকনো খাবার খেয়ে দিন পার করছি। কেউ আমাদের খোঁজ নিতে আসেনি। আমাদের আশপাশের ৩৫টি পরিবার রয়েছে। সবার ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। মূলত সুইচ গেটের কারণে আমরা সবাই পানিবন্দি।’

হ্নীলা ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘ভারী বর্ষণে আমার এলাকার ৪টি গ্রামের দুই হাজার পরিবারের সাড়ে চার হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। মূলত সীমান্ত সড়কের সুইচ গেইট থেকে বৃষ্টির পানি পর্যাপ্ত পরিমাণে বের হতে না পারায় এসব এলাকা পানিবন্দি হয়ে পড়ে। আমরা তাদের খোঁজ-খবর নিচ্ছি।’

সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওর্য়াডের মেম্বার মো. সেলিম বলেন, ‘ভারী বর্ষণের কারণে আমার এলাকায় প্রায় দুই শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ড্রেন-খাল দখলের কারণে পানি চলাচলের জায়গা বন্ধ হয়ে পড়েছে। যার কারণে এসব মানুষের এ করুন দশা।’

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘ভারী বর্ষণে বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। আমরা তাদের খোঁজ-খবর নিচ্ছি। পাশাপাশি অতি বৃষ্টির কারণে পাহাড় ধসের আশঙ্কা রয়েছে। তাই সকাল থেকে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাকারীদের অন্যত্রে সরে যেতে মাইকিং করে বলা হচ্ছে। তারা আশ্রয়কেন্দ্র চলে গেলে পাহাড় ধসে প্রাণহানি থেকে রক্ষা পাবে। এছাড়া পাহাড়ের পাড়দেশে বসবাসকারী জান-মালের রক্ষায় সিপিপির সদস্যরা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: টেকনাফ, পানিবন্দি, পাহাড়
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন