ত্রিমুখী লড়াইয়ে রাঙামাটির কাউখালীতে ঘটতে পারে সশস্ত্র সংঘাতের মতো ঘটনা

upazila-election-logo

আলমগীর মানিক, রাঙামাটি:
নির্বাচন কমিশনের তফসিল ঘোষনা অনুযায়ী আগামী ১৫ মার্চ ৩য় দফা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে যেকোনো সময় কাউখালী উপজেলায় ভোট কেন্দ্র দখলের পাশাপাশি ঘটতে পারে স্বশস্ত্র সংঘাতের মতো ঘটনা। একদিকে দুইটি আঞ্চলিক দলের ঐক্যবদ্ধ অবস্থান অন্যদিকে সরকার ও বিরোধীদলীয় দুই প্রার্থীর শক্ত অবস্থান। হুমকি পাল্টাপাল্টি অভিযোগ এবং নির্বাচনী কাজে বাধাদান। এসব থেকে অতি সহজেই ঘটতে পারে বড় ধরনের সংঘাত। ইতিমধ্যে সংঘাতের পূর্ব প্রস্তুতিও নিতে শুরু করেছে দুইটি আঞ্চলিক সংগঠনের সমর্থনে থাকা স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ও সরকার দলীয় সমর্থক প্রার্থী’র সমর্থকরা।

স্থানীয় ভোটার ও কর্মরত বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে এসবের সত্যতা মিলেছে। এসবের প্রথম পর্ব শুরু করেছেন একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্র জমা দিয়ে। গত সোমবার রাঙ্গামাটি জেলা রিটানিং অফিসার বরাবরে এক অভিযোগ পত্র জমা দিয়েছেন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী অর্জুন মনি চাকমা(আনারস)তার প্রতিদ্বন্দ্বী সরকার সমর্থিত প্রার্থী এস এম চৌধুরির বিরুদ্ধে। অর্জুন মনি চাকমা(আনারস) অভিযোগ পত্রে দাবী করেন তিনি কোন জাতীয় বা আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের সমর্থিত প্রার্থী নয়। তার কর্মী সমর্থকরা নিবাচনী আচরণ বিধি মেনে প্রচার প্রচারনা ও গনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তার পক্ষে কাজ করতে গিয়ে কাউখালী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরকার সমর্থিত দলের প্রার্থী এস এম চেীধুরীর (ঘোড়া) নেতাকর্মী ও সমর্থকদের হামলায় শারিরীক ও মানুষিক নির্যাতন ও মৃত্যুর মত হুমকির স্বীকার হচ্ছে। এছাড়া ঘোড়া প্রতীকের কর্মী সমর্থকরা আগামী ১৫ মার্চ কাউখালী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র জোরপূর্বক দখল করে তাদের প্রার্থীর পক্ষে বিজয় ছিনিয়ে নেয়ার পাঁয়তারায় লিপ্ত রয়েছে বলে আশংকা করে কাউখালী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পূর্বে সেনাবাহিনী মোতায়ন  করার দাবী জানান।

অন্যদিকে সরকার দলীয় সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী এস এম চৈাধুরি(ঘোড়া) রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসকের কাছে প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী অর্জুন মনি চাকমা(আনারস) বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্র জমা দিয়েছেন। অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে কাউখালী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী অজুর্ণ মনি চাকমাকে(আনারস) পার্বত্য চট্টগ্রামের ২টি আঞ্চলিক সংগঠন (ইউপিডিএফ ও জেএসএস)সমর্থন দিয়েছেন। দুটি আঞ্চলিক সংগঠনের সমর্থন থাকায় দু দলের সশস্ত্র ক্যাডাররা উপজেলার উপজাতীয় অধ্যুষিত এলাকা ঘাগড়া ইউনিয়ন ও ফটিকছড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের সাধারন/নিরিহ ভোটারদের অস্ত্র সস্ত্র দেখিয়ে হুমকী দিচেছ। তারা নির্বাচনের দিন মারমা অধ্যুষিত এলাকায় ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য বাধা প্রধান করে প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছে।

ইতিমধ্যে এলাকাগুলোতে জনপ্রতিনিধি এবং গন্যমান্য ব্যক্তিদের ডেকে নিয়ে তাদের সমর্থিত প্রার্থী অর্জুন মনি চাকমাকে (আনারস) ভোট না দিলে তাদের জান মালের ক্ষতি করবে বলে হুমকী প্রদর্শন করা হয়েছে স্থানীয় একটি আঞ্চলিক দলের পক্ষ থেকে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রভাবশালী ব্যাক্তি জানান, রবিবার ইউপিডিএফ এর ৩৫ জনের সশস্ত্র ক্যাডার কাউখালী ঘিলাছড়ি এলাকায় অবস্থান করলে সেনাবাহিনী’র একটি পেট্রোল ঘটনাস্থলে গেলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। এদিকে পরস্পর বিরোধী দুইটি আঞ্চলিক দলের ঐক্যবদ্ধভাবে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান আর অন্যদিকে ক্ষমতাসীনদলের সমর্থনে থাকা অপর প্রভাবশালী প্রার্থীর পক্ষে দলীয় নেতাকর্মীদের শক্ত অবস্থান এবং সরকার বিরোধী অবস্থানে থাকা দল বিএনপিসহ ১৯ দলের সমর্থীত প্রার্থীর পক্ষে জোটের নেতাকর্মীদের আরো কঠোর অবস্থানে আগামী নির্বাচন যেমন ত্রিমুখী লড়াইয়ের মাধ্যমে হবে ঠিক তেমনিভাবে এখানে স্বশস্ত্র সংঘাতের মতো ঘটনাও ঘটতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারংবার বলা হচ্ছে যে, আগামী নির্বাচনে তাদের সর্বাতœক প্রস্তুতি রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন