দ্বিতীয় ধাপে ভাসানচরে পৌঁছেছে ১৮০৫জন রোহিঙ্গা

fec-image

রোহিঙ্গাদের দ্বিতীয় দলটি মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুর ২টার দিকে চট্টগ্রাম থেকে নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরে পৌঁছেছেন। তারা চট্টগ্রামের বোট ক্লাব, আরআরবি ও কোস্টগার্ডের জেটি থেকে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বিশেষ ৫ টি জাহাজে করে বিশেষ নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ভাসানচরে পৌঁছান।

এবার সেচ্ছায় ভাসানচরে গেলেন ৪২৮ পরিবারের ১৮০৫ জন রোহিঙ্গা। এসব রোহিঙ্গারা সোমবার ৩৯টি বাসে করে চট্টগ্রামে পৌঁছায়। সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে ভাসানচরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন তারা৷

নির্ভরযোগ্য সুত্রে জানা গেছে, বিশেষে নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে সোমবার সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে ১৩ বাসে ৫৯৫ জন, ২টা ১০ মিনিটে ১১বাসে ৫৩৯ জন, ৫টা ১০ মিনিটে ১৫ বাসে ৬৭১ জনসহ ৪২৮ পরিবারের মোট ১৮০৫জন রোহিঙ্গাকে নিয়ে গাড়ী গুলো চট্টগ্রামের উ˜েদ্যশে রওয়ানা দেন। এছাড়াও রোহিঙ্গাদের মালামাল নিয়ে ১১টি কার্গো এবং ট্রাক গাড়ী বহরে যুক্ত ছিলেন। পরবর্তীতে মালামালসহ তাদের ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হয়।

এর আগে গত রোববার বিকেলে ও সোমবার সকালে উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নিয়ে যেতে উখিয়া কলেজ মাঠে অস্থায়ী ট্রানজিট পয়েন্টে নিয়ে এসে রাখা হয়। তাছাড়া ভাসানচরে যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গারা ট্রানজিট পয়েন্টে আসতে শুরু করেন।

ভাসানচরের কাজ করতে যাওয়া বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সমাজ কল্যাণ ও উন্নয়ন সংস্থা (স্কাস) এর চেয়ারম্যান জেসমিন প্রেমা জানান, আমরা রোহিঙ্গাদের ২য় দলটিকে নিয়ে দুপুর ২ টার দিকে ভাসানচরে পৌঁছেছি। পথের মধ্যে কোন সমস্যা হয়নি। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বিশেষ নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ২য় ধাপে ১৮০৫ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নিয়ে আসতে সম্ভব হয়েছে। আমরা নৌবাহিনী, পুলিশ, কোস্টগার্ড়সহ অনেক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, এনজিওর প্রতিনিধি ও প্রধানগণ সাথে ছিলাম। এখানে তাদের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের প্রতি যত্ন নেওয়া হয়েছে। তারা যেন শীতে কষ্ট না হয় তার প্রতি লক্ষ্য রাখা হয়েছে। সরকারের সহযোগী সংস্থা হিসাবে তাদের মৌলিক চাহিদা পুরনের জন্য আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।

সুত্রে জানা যায়, উখিয়া ও টেকনাফের তালিকাভুক্ত ক্যাম্প ছাড়া বাকি সব ক্যাম্প থেকেই রোহিঙ্গারা সেচ্ছায় ভাসানচরে যাওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছেন। বিশেষ করে উখিয়ার কুতুপালং-১, ২, ৩, ৪, ৫, ৮ ডব্লিউসহ থাইংখালী ১৩ নাম্বার ক্যাম্প থেকে অনেক রোহিঙ্গা পরিবার সোমবার ভাসানচরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছিলেন। আজ মঙ্গলবার দুপুর ২ টার দিকে তারা সটিক সময়ে ভাসানচর পৌঁছেছেন।

এদিকে গত ৪ ডিসেম্বর প্রথম দফায় ১ হাজার ৬৪২ রোহিঙ্গা ভাসানচরে গেছে। এর আগে মালয়েশিয়া যেতে গিয়ে সমুদ্র উপকূলে আটক আরও তিন শতাধিক রোহিঙ্গাকে সেখানে নিয়ে রাখা হয়।

উল্লেখ্য যে, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট পরবর্তী মিয়ানমারে নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হয়ে এদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেয় ৭ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা। এর আগে থেকে আশ্রয় নেয় আরো ৪ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা। বর্তমানে সব মিলিয়ে ১১লাখের বেশি রোহিঙ্গার বসবাস কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন