নাইক্ষ্যংছড়িতে এনজিও’র ত্রাণ বিতরণে লুকোচুরি, ১৩ বস্তা ত্রাণ আটক

fec-image

আটক

মো.আবুল বাশার নয়ন, নাইক্ষ্যংছড়ি প্রতিনিধি:
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় একটি ইসলামিক এনজিও’র ত্রাণ বিতরণের নামে প্রশাসনের সাথে লুকোচুরি অতপর বাইশারীতে ত্রাণ আটকের খবর পাওয়া গেছে। গোপনীয় এ কর্মকাণ্ডের কারণে স্থানীয় প্রশাসনের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, গত শুক্রবার থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার চাকঢালা জুনিয়র হাইস্কুল মাঠ, দোছড়ি ইউনিয়নের তুলাতলী ও বাইশারী ইউনিয়নে ধারাবাহিক ত্রাণ বিতরণের জন্য প্রস্তুতি নেয় তুর্কি ভিত্তিক একটি ইসলামিক এনজিও সংস্থা। পরে স্থানীয় বিজিবি, পুলিশসহ উপজেলা প্রশাসন খবর পেয়ে চাকঢালায় ত্রাণ বিতরণ ভুণ্ডল করে দিলেও এনজিও সংস্থাটি একইদিনে কৌশলে দোছড়ি ইউনিয়নের তুলাতলী এলাকায় আনুষ্ঠানিক ত্রাণ বিতরণ করেন।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো: ইমরান জানান, খবর পেয়ে তিনি এলাকায় গিয়েছিলেন। তবে ত্রাণ বিতরণের সাথে জড়িত কোন ব্যক্তি বা সংস্থার বিষয়ে তিনি অবগত নেই বলে জানান।

অপরদিকে উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারী শুরু হলে শনিবার ফজরের আজানের পর পরই উপজেলার বাইশারী ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন মৌলানা আবদুল গফুর এর পরিচালনাধীন আদর্শ ইসলামিয়া বালিকা মাদরাসায় অন্তত ২৫০ জনের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ উদ্বোধন করেন ইসলামিক এনজিওটির একজন বিদেশী নাগরিক। পরে অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন স্থানীয় বাসিন্দা পল্লী চিকিৎসক মোস্তাফা কামাল।

সকালে খবর পেয়ে বাইশারী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র ইনচার্জ এসআই আনিসুল হক ঘটনাস্থল থেকে ১৩ বস্তা ত্রাণ আটক করেন। তবে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে পল্লী চিকিৎসক মোস্তফা কামালের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবু তাহের কোম্পানী জানান, এনজিওর মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণের খবরটি তিনি শুনেছেন তবে বিতরণকারীরা তাঁকে এ বিষয়ে কোন কিছু অবহিত করেনি বলে জানান। ত্রাণ আটকের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন নাইক্ষ্যংছড়ি ইউএনও এবং থানা অফিসার ইনচার্জ।

এর আগে ত্রাণ বিতরণের জন্য স্থানীয় নেতা গোচর ব্যক্তিদের মাধ্যে ছোট্ট সাদা কাগজে একটি স্বাক্ষর যুক্ত টোকেন বিতরণ করা হয়। এ টোকের মাধ্যমে প্রতিজনকে চাউল, ডাল, তেল, মসল্লাসহ আনুমানিক ১১/১২ শত টাকা হারে ত্রাণ বিতরণ করা হয়।

সূত্র মতে, ভিজিডি, ভিজিএফসহ সরকারী সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্রকে প্রাধান্য দেওয়া হলেও ইসলামিক এনজিওর এ ত্রাণ বিতরণের ক্ষেত্রে ‘যারা ভোটার হতে পারেননি’ তাদের অগ্রধিকার দেওয়া হয়েছে বলে স্থানীয় একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু শাফায়াত মুহাম্মদ শাহেদুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল থেকে কিছু ত্রাণ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রশাসনের অগোচরে এ কর্মকাণ্ডের কারণে তদন্তপূর্বক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: আবুল খায়ের ত্রাণ বিতরণের সত্যতা স্বীকার করে এ বিষয়ে তদন্ত চলছে বলে জানান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন