নাইক্ষ্যংছড়িতে প্রাথমিকে বই দেখে পরীক্ষা দিচ্ছে শিক্ষার্থীরা!
চারদিকে সুনশান নিরবতা। প্রধান শিক্ষকের কক্ষ বন্ধ। কচিকাঁচা পরীক্ষার্থীদের হাতে হাতে ক্লাসের বই খোলা। ব্ল্যাক বোর্ডে একজন শিক্ষক প্রশ্নের উত্তর লিখে দিচ্ছেন। তা দেখে লিখা হচ্ছে উত্তর। এরপরও অনেকে লিখতে না পারায় পাশের রুম থেকে এসে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রীরা লিখে দিচ্ছেন পরীক্ষার খাতায়। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দোছড়ি ইউনিয়নের উক্যজাই হেডম্যানপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবার দুপুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শনিবার বেলা ১২.৫০টায় এই বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষায় ইংরেজি বিষয়ে ২০-২১ জন শিক্ষার্থী একটি কক্ষে অংশ নিচ্ছে। এরমধ্যে কয়েকজন শিক্ষার্থীর পরনে হাই স্কুলের ড্রেসও দেখা যায়। একজন সহকারী শিক্ষক ব্ল্যাক বোর্ডের সামনে দাঁড়ানো। আর উপস্থিত শিক্ষার্থীরা অবাধে বইয়ের পাতা দেখে উত্তরপত্রে লিখছে। এই চিত্র দেখে বোঝার কোন উপায় ছিলনা, ক্লাস রুমে পরীক্ষা হচ্ছে নাকি শিক্ষক ক্লাসে বই পড়াচ্ছেন। এসময় একাধিক ছাত্র-ছাত্রী বই দেখে উত্তর লিখছিল বলে ভিডিও ধারনের সময় স্বীকার করে। কেউ একজন ক্লাস রুমে এসেছেন শুনে প্রধান শিক্ষক এসে এই প্রতিবেদককে ভিডিও ধারন না করার অনুরোধ করেন।
শিশুদের মাঝে নকলের এমন মহোৎসব প্রতিরোধে তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি বরং শিক্ষার্থীদের এসব অবৈধ সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে প্রধান শিক্ষক আলী হোসেন বলেন- এটি দূর্গম এলাকার স্কুল। কোন শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীরা আসতে চায়না, তাই….।
এই প্রসঙ্গে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা শিক্ষা অফিসার ত্রিরতন চাকমার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন-শিক্ষা অফিসে জনবল সংকট। সব স্কুল একসাথে ভিজিট করা যায় না। আমি অন্তত ৪-৫টি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করার চেষ্টা করি। বই দেখে পরীক্ষা দেওয়া স্কুলের প্রধান শিক্ষকের নীতি নৈতিকতার বিষয় প্রশ্নবিদ্ধ। ওই শিক্ষক দীর্ঘদিন চাকরী করছেন, তার আদর্শ যদি এমন হয় তাহলে অবশ্যই আমাদের ভাবনার বিষয়। তবে অভিযোগটি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।