নাইক্ষ্যংছড়িতে শারদীয় দূর্গোৎসব নিয়ে উত্তেজনা ও এখন আর ক্ষোভ নেই, প্রশাসন সতর্ক

fec-image

পার্বত্য নাইক্ষ্যংছড়ি সদরে দু’দল পূজারীর দু’টি মন্দিরে শারদীয় দূর্গোৎসব নিয়ে সৃষ্ট উত্তেজনা ও ক্ষোভ ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে। দু’ মণ্ডপের পূজারীরাই জানান, তারা দু’টি মন্দিরেই শারদীয় দূর্গোৎসব করছেন। যাই হোক তারা এ উৎসব করে যাবেন। শনিবার সপ্তমীতে পূজা-অর্চণা যা রয়েছে তা তারা করছেন। আজ অষ্টমী।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ৪টি মন্দিরেই বর্তমানে শারদীয় দূর্গোৎসব হচ্ছে। এর আগে হতো ৩টিতে। এ বছর নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়ে শেষ-মেশ একটি মন্ডপ বেড়ে যায়। সে হিসেবে এখন হচ্ছে ৪টিতে।

এ গুলো হলো নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সদরের সার্বজনীন হরি মন্দির প্রাঙ্গনে সার্বজনীন শারদীয়া দূর্গোৎসব,
উপজেলা সদরের মসজিদ ঘোনা এলাকার শ্রী শ্রী শারদীয় দূর্গোৎসব, ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু দূর্গা মন্দিরের শারদীয় দূর্গোসব ও দক্ষিন বাইশারী হরি মন্দিরের শারদীয় দূর্গোৎসব।

সূত্র আরো জানান, এসব মন্দিরের মধ্যে আগে হতো ৩টিতে এ বছর হচ্ছে ৪টিতে। উপজেলা প্রশাসনের নথিতেও এ তথ্য ছিলো। কিন্ত উপজেলা সদরের কেন্দি্য়র হরি মন্দির কর্তৃপক্ষের সাথে এ মন্দিরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক উজ্জল কুমার দাশ ও তার সমর্থকদের মধ্যে নানা কারণে দূরত্ব সৃষ্টির পর পূজা মন্ডপ আলাদা হয়ে যায়।

মসজিদ ঘোনা গ্রামে করা শারদীয় দূর্গোৎসব কমিটির সভাপতি উজ্জল কুমার দাশ জানান, তার আগের হরি মন্দির কমিটির লোকজন নানা কারণে তাকে কমিটিতে রাখেনি। অথচ তিনি দীর্ঘ একযুগ সেখানে সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তবু তিনি বিরোধে না গিয়ে ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত তাদের পারিবারিক মন্দিরে শারদীয় দূর্গোৎসব করছেন। এটির অনুষ্ঠান শুরু হয় ৫ তারিখ। আর শেষ হবে ১০ সেপ্টেম্বর।

তিনি আরও বলেন, তবুও এ নিয়ে শুরু নানা তালবাহনা। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন প্রতিপক্ষরা। আর বখাটে দিয়ে তার বিরুদ্ধে বকা-বকি, গালাগালি ইত্যাদিও করান। এ পরিস্থিতিতে প্রশাসন হস্তক্ষেপ করলে, বকা-বকি বন্ধ হয়ে যায়। তিনি বলেন, তাদের ২৭ পরিবার আছে। আর তাদের প্রতিপক্ষের রয়েছে মাত্র ৩টি। তাদের মন্দিরের শারদীয় দূর্গোৎসবে তারা এ বছর করছে দূর্গাপূজা সহ নানা অনুষ্ঠান , আগামী বছর করবে প্রতিমা পূজা। এটি হলো তাদের ধর্মের নিয়ম।

অপর দিকে সদরের হরি মন্দির শারদীয় দূর্গোৎসব কমিটির সভাপতি বিষ্ণু কুমার দাশ জানান,
আসলে ধর্ম যার যার, উৎসব তো সবারই। বিগত ২৭ বছর ধরে তাদের হরি মন্দিরে উৎসব হচ্ছে। সদরের অন্য কোথাও তা হয়নি। এখন হচ্ছে। হউক। অসুবিধা নেই। এখন যারা করছে তারাও হয়তো এখানে আসবে-এ তার আশা।

তিনি আরো বলেন, এখন প্রশাসন হস্তক্ষেপ করেছেন। পরিবেশ ঠাণ্ডা। ‘তারা তাদেরটা করুক-আর আমাদেরটা আমরা করবো’ এ ছিলো তার পরিষ্কার ভাষা।

উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মো: ইমরান মেম্বার জানান, উপযুক্ত নেতৃত্বের অভাব তাদের। কেননা এখানে নৃ-গোষ্ঠি সহ অন্যান্য ধর্মের লোকজন বেশি থাকলেও সনাতন ধর্মের মানুষ  হাতে গুনা। আর তাদের যদি দু’টি শারদীয় দূর্গোৎসব হয়-তা হলে দেখতে ভালো দেখায় না।

অপর দিকে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার অফিসার ইনর্চাজ মো. আনোয়ার হোসেন জানান, উত্তেজনা আর ক্ষোভ নেই। বিষ্ণুরা করছে প্রতিমা পূজা। কিন্ত উজ্বল কুমার দাশেরা করছে ঘরোয়া পূজা। শারদীয় দূর্গোৎসব এখানে একটিই।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: নাইক্ষ্যংছড়িতে, প্রশাসন সর্তক, শারদীয় দূর্গোৎসব
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন