পরীক্ষার ম্যাচে বাংলাদেশের হার
ক্রিড়া ডেস্ক:
হারের ময়নাতদন্তে অনেক কথাই উঠে আসে। তাও আবার যদি হয় বছরের প্রথম হার। অতি পরীক্ষা-নিরীক্ষা, অনেক পরিবর্তনের কৌশল বুমেরাং হয়ে ধরা দিয়েছে বাংলাদেশের জন্য। আফগানিস্তানের কাছে নাকানি-চুবানি খেয়ে আসা জিম্বাবুয়ের কাছে হেরে গেছে বাংলাদেশ। বছরের তৃতীয় ম্যাচেই হারের স্বাদ পেল টাইগাররা। বুধবার ওয়ালটন টি-২০ সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে বাংলাদেশকে ৩১ রানে হারিয়েছে জিম্বাবুয়ে।
এই জয় সিরিজে ফেরালো সফরকারীদের। বাংলাদেশের সিরিজ জয়ের মিশনও হোঁচট খেলো। যদিও চার ম্যাচের সিরিজে এখনো ২-১ এ এগিয়ে আছে মাশরাফির দল। খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে বুধবার প্রথমে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ১৮৭ রান তুলেছিল জিম্বাবুয়ে। জবাবে ৬ উইকেটে ১৫৬ রান করতে সমর্থ হয় বাংলাদেশ।
বড় টার্গেটই ম্যাচে বাংলাদেশকে অনেক পিছিয়ে দিয়েছিল মানসিকভাবে। একাদশে পাঁচ পরিবর্তন নিয়ে খেলতে নামা বাংলাদেশ পারেনি ১৮৮ রান তাড়া করার চাপকে সামলাতে। ইনিংসের ষষ্ঠ বলেই ইমরুল কায়েসের (১) উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় উইকেটে সৌম্য-সাব্বির ৬৭ রানের জুটি গড়েন। তাদের ব্যাটিং কক্ষপথেই রেখেছিল বাংলাদেশকে। সৌম্য ২৫ রান করে থামেন ক্রেমারের বলে। উইকেটে এসেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং শুরু করেন সাব্বির। ৩১ বলেই হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। তার ব্যাটেই ছিল আশা টিকে ছিল টাইগারদের। কিন্তু হাফ সেঞ্চুরির পরই সিকান্দার রাজার বলে মুজারাবানির হাতে ধরা পড়েন সাব্বির। তিনি ৩২ বলে ৯টি চারে ৫০ রান করেন।
সাব্বিরের বিদায়ের পরই মড়ক লাগে বাংলাদেশের ইনিংসে। ৭ রানে তিন উইকেটের পতন ঘটে। মোসাদ্দেক (১৫), সাকিব (৩) ও মাহমুদউল্লাহ (৬) রান করে ফিরেন। তখনই ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে বাংলাদেশ। শেষ দিকে মুক্তার আলী ও নুরুল হাসানের ৪৯ রানের জুটিতে দেড়শো পার হয় স্বাগতিকদের স্কোর। নুরুল হাসান ১৭ বলে অপরাজিত ৩০ রান (৫ চার) করেন। মুক্তার আলী অপরাজিত ১৯ রান করেন। জিম্বাবুয়ের ক্রেমার ৩টি, সিকান্দার রাজা ২টি করে উইকেট পান।
এর আগে চার তরুণের অভিষেক ঘটে এদিন বাংলাদেশের একাদশে। টি-২০ ক্যাপ পেয়েছেন আবু হায়দার রনি, মুক্তার আলী, মোহাম্মদ শহীদ ও মোসাদ্দেক হোসেন। তামিমকে বিশ্রাম দেয়ায় সবমিলিয়ে একাদশে ছিল পাঁচ পরিবর্তন। স্বাগতিকদের একাদশে ব্যালেন্স নষ্ট হওয়ার সুযোগে টসজয়ী জিম্বাবুয়ে ইনিংসের আগাগোড়াই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেছিল। যার ভিতটা গড়ে দিয়েছিলেন টপঅর্ডাররা। অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ও ভুসিমুজি সিবান্দার ওপেনিং জুটিতে ৪৫ রান তোলেন। মাসাকাদজাকে (২০) ফিরিয়ে শহীদ ব্রেক থ্রু এনে দেন।
তারপর জিম্বাবুয়ের রান তোলার গতিতে ভাটা পড়তে দেননি মুতুম্বামি ও সিবান্দার। নবম ও এগারতম ওভারে তারা দুজনই সাকিবের শিকার হন। ৮৯ রানে ৩ উইকেট হারায় দলটি। মুতুম্বামি ২০ ও সিবান্দা ৩৩ বলে ৪৪ রান (৬ চার, ১ ছয়) করেন। টপঅর্ডারদের গড়ে দেয়া ভিতটা কাজে লাগিয়ে দলকে বড় স্কোর এনে দেয়ার কাজটা করেছে ম্যালকম ওয়ালার ও শন উইলিয়ামসের ৪র্থ উইকেট জুটি। তারা ৬৪ রান যোগ করেন।
১৮তম ওভারে বিস্ফোরক ব্যাটিং করা ওয়ালারকে ফেরান সাকিব। ২৩ বলে ৪৯ রান (২ চার, ৪ ছয়) করেন ওয়ালার। ২৬ বলে ৩২ রান করেন শন উইলিয়ামস। পিটার মুর অপরাজিত ১০, সিকান্দার রাজা ৭ রান করেন। বাংলাদেশের পক্ষে সাকিব ৩টি, আবু হায়দার রনি ২টি করে উইকেট পান।