পানছড়িতে বিদ্যুতের বেহাল দশা

10-15 pic

পানছড়ি প্রতিনিধি:

খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলায় বিদ্যুতের বেহাল দশায় অতিষ্ট হয়ে পড়েছে উপজেলাবাসী। গত দীর্ঘ পাঁচ দিনে বিদ্যুতবিহীন পানছড়ির বিভিন্ন অফিস আদালত, ২০ বিজিবি সদর দপ্তর, আর্মি সাব জোন, উপজেলা পরিষদ এলাকার আবাসিক ভবন, দোকান-পাট, ঘর-বাড়ি, মসজিদ-মন্দির ও পাড়া পল্লীতে একটাই হাহাকার বিদ্যুৎ নাই। অফিসিয়াল কাজ কর্মে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে কাল বৈশাখীর অন্ধকারে। পরিমানমত আলো না থাকায় দিনে দুপুরে বিভিন্ন দপ্তর ও ছাত্র-ছাত্রীদের মোমবাতি জ্বালিয়ে অফিস ও পড়ালেখা করার দৃশ্যও দেখা গেছে।

তাছাড়া এবারের এইচ.এস.সি পরীক্ষার্থীরা তাদের বিভিন্ন বিষয়ের পূর্ব প্রস্ততি মোমবাতির আলোতে সেরেছেন বলে জানা যায়। মাটিরাঙার তবলছড়ি থেকে আসা কয়েকজন পরীক্ষার্থী এ প্রতিবেদককে জানায়, গ্রাম থেকে শহরে এসেছি ভালো প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষা দিতে। কিন্তু শহরে বিদ্যুতের দুরবস্থা নাকি তাদের প্রস্তুতিকে ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে। এদিকে বিভিন্ন দোকান-পাট, ঘর-বাড়িতে প্রিজ, টেলিভিশন ও পানির মোটরে মরিচা পড়ার অবস্থা হয়েছে বলে জানান অনেকেই। বিদ্যুৎ বিভাগের প্রশাসনিক দুর্বলতাকেই এই বেহাল অবস্থার জন্য দায়ী করছেন ভুক্তভোগীরা।

বিদ্যুতের বড় বড় অফিসাররা খাগড়াছড়িতে বসেই পানছড়ির দাপ্তরিক কাজ সেরে নেন বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। কয়েকজন বিদ্যুৎ গ্রাহক জানালেন, দীর্ঘ বছর যাবত পানছড়িতে সুরুজ মিয়া লাইনম্যানের দায়িত্ব পালনকালে বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা বেশ ভালোই ছিল। কিন্তু বর্তমানে দুইজন লাইনম্যান ও একজন হেলপার থাকা সত্বেও বিভিন্ন হয়রানি ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বেশ নাজুক। এদিকে মাঝে মধ্যে বিদ্যুৎ এলেও লো-ভোল্টেজের গেড়াকলে পড়ে অনেকেই ডাক্তারের পরামর্শে চশমা ব্যবহার করছেন। তাছাড়া ব্যাটারি চালিত টমটম বাড়িয়ে দিয়েছে দ্বিগুন জ্বালা। মাঝে মধ্যে বিদ্যুৎ আশা মাত্রই প্রায় শতাধিক ব্যাটারি অবৈধ সংযোগে চার্জ দিয়ে থাকে। কিছু কিছু এলাকায় মেইন লাইন থেকে আংটা দিয়ে বিদ্যুৎ নামিয়ে চার্জ দেওয়ার অভিযোগও পাওয়া যায়।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মচারীরা অভিযান চালাতে ভয় পায়। কিন্তু অসহায় গ্রাহকদের মাস শেষে কেজি মাপা বিল ধরিতে দিতে একটুও কৃপনতা করে না। পানছড়িতে দায়িত্বরত বিদ্যুতের লাইনম্যান মো: সুরুজ মিয়া এই প্রতিবেদককে জানান, খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার কুকিছড়া এলাকা থেকে শুরু করে মাটিরাঙা উপজেলার তাইন্দং ও তবলছড়ি পর্যন্ত আমাদের দায়িত্ব পালন করতে হয়।

কিন্তু নেই কোন সরকারী গাড়ীর ব্যবস্থা। তাই ইচ্ছা থাকা সত্বেও অনেক সময় পরিবহনের অভাবে সঠিক সময়ে দায়িত্ব পালন করা সম্ভব হয়ে উঠেনা। পানছড়ি অভিজ্ঞ মহল বলছেন দীর্ঘ বছর যাবত পানছড়িতে একজন আর.আই ও বিদ্যুৎ অফিস দিবি দিচ্ছি বলে কাগুজে বাঘ হয়ে আছে।

এ ব্যাপারে বিদ্যুৎ বিভাগের নেই কোন মাথা ব্যাথা। তাছাড়া বিদ্যুতের বিভিন্ন সমস্যাদি নিরসন করতে অসহায় গ্রাহকদের যেতে হয় খাগড়াছড়ি, ভোগ করতে হয় উৎকোচ হয়রানি। তাই অত্র পানছড়িতে মান সম্পন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা, গ্রাহক হয়রানি বন্ধ, মিটারের সঠিক রিডিং নিয়ে বিদ্যুৎ বিল তৈরী, অবৈধ সংযোগ বিছিন্ন, নিজস্ব পরিবহনের ব্যবস্থা ও একজন আর.আই’য়ের পানছড়িতে অবস্থান যেন নিশ্চিত হয় সে বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক ও  খাগড়াছড়ি বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর সু-দৃষ্টি কামনা করছেন অভিজ্ঞ মহল তথা পানছড়িবাসী।

 

আরও খবর পড়ুন

বিদেশী পর্যটক বাড়াতে টেকনাশে এক্সক্লুসিভ জোন গড়ে তোলা হবে- রাশেদ খান মেনন

টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের জরুরী সভা

টেকনাফে নিজ বাড়ির পুকুরে ডুবে ১ স্কুল ছাত্রের মৃত্যু

কাপ্তাই ইউনিয়ন ছাত্রলীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে গোলমাল

বান্দরবানে আগাম লিচু

বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলেই কেবল পাহাড়ের কৃষকদের ভাগ্য উন্নয়ন হবে- বীর বাহাদুর

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন