পার্বত্য চট্টগ্রাম ইস্যুতে জানতে চেয়েছেন মিশেল ব্যাচলেট

fec-image

পার্বত্য চট্টগ্রামের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন ঢাকা সফররত জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট। রবিবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালের সাথে বৈঠক শেষে
সাংবাদিকদের উদ্দেশে ব্রিফিংকালে এ কথা বলেন মন্ত্রী।

রোববার (১৪ আগস্ট) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ঢাকা সফররত জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি জানান, ডিসঅ্যাপেয়ারেন্স, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, মাইনরিটি, পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং রোহিঙ্গা ইস্যুতে কথা হয় তাদের।
মন্ত্রী বলেন, তারা পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলা নিয়ে কথা বলেছেন। বলেছেন যে, এখানে তোমাদের মাঝে মাঝেই শোনা যায় খুন হয়। আমরা বললাম যে, সেখানে একটা অশান্তির রাজ্য ছিল। আমাদের প্রধানমন্ত্রী এদের সঙ্গে একটি শান্তি চুক্তি করেছেন। শান্তি চুক্তি অনুযায়ী যেগুলো ছিল সেগুলোর বেশিরভাগই আমরা পালন করেছি এবং সরকার সেগুলো প্রতিষ্ঠিত করেছে।

মন্ত্রী বলেন, মাইনরিটির প্রসঙ্গটিও আসছে। নড়াইলের ঘটনা এবং অন্যান্য ঘটনা। আমরা বলেছি, এগুলো ফেসবুক এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে যে সব কমেন্ট করা হয়েছে, এগুলো দেখেই। বাংলাদেশের মানুষ যে যার ধর্মকে অত্যন্ত হৃদয় দিয়ে ধারণ করে এবং সবাই সিরিয়াসলি সেটাকে ধারণ করে। হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান-মুসলমান আমাদের সবাই এ দেশের মানুষ। ৯০ ভাগ মুসলমান হলেও সবাই মিলে মিশে থাকি। আমাদের ধর্মীয় সম্প্রীতি রয়েছে।

তিনি বলেন, যেখানে এ ঘটনাগুলো ঘটেছে সেখানেই আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিয়েছি। মামলা হয়েছে এবং তাদের অ্যারেস্ট করা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ধর্মীয় ও সামাজিক নেতারা বসে ওখানে একটা শান্তির ব্যবস্থা আমরা করেছি। সবগুলো ইস্যু নিয়ে তারা অ্যাপ্রিশিয়েট করেছেন। যে অ্যাকশনগুলো আমরা নিয়েছি সেগুলো তারা প্রশংসা করেছেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের ৭৬ জনের মিসিং বা ডিসঅ্যাপেয়ারেন্স পার্সনের তালিকা দেওয়া হয়েছিল। আমরা দেখিয়ে দিয়েছি এ ৭৬ জনের মধ্যে ১০ জন তাদের বাড়িতেই আছে। দুজন জেলখানায় আছেন। বাকি ৬৪ জনের মধ্যে ৩২ জনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন নাশতামূলক অভিযোগ রয়েছে। তারা আমাদের ওয়ান্টেড আসামি। আমাদের পুলিশও তাদের খুঁজছে। তাদের নামে মামলা রয়েছে। সেজন্যই তারা ডিসঅ্যাপেয়ার রয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী তাদের খুঁজে বেড়াচ্ছে। আমরা মনে করি যেকোনো সময় তাদের খুঁজে পাব। এটাই আমরা আজকে তাদের জানিয়ে দিয়েছি অফিসিয়ালভাবে।

তিনি বলেন, আমরা এ সমস্ত কথা বলার পরে ভিডিও দেখার পরে তাদের আর প্রশ্ন করার কিছু ছিল না। তারা সবাই কনভিন্স হয়ে আমাদের ধন্যবাদ দিয়ে চলে গেছেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গুম দিবস যারা করেন তারা একটা উদ্দেশ্য নিয়েই করেন। তারাও জানেন তাদের ছেলেটি কিংবা ভাইটি কিংবা তার মেয়েটি কোথায় আছেন। আমরা এটুকু বলতে চাই যে, আমাদের দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যাদের নিয়ে যায় তাদেরকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কোর্টে সাবমিট করতে হয়। কেউ যদি ইচ্ছে করে গুম হয়ে যায়, কেউ যদি কাঁটাতারের ফাঁক দিয়ে বিদেশে চলে যায় কিংবা সমুদ্র পথে যদি চলে যায়, যেটাকে আমরা মানবপ্রচার বলি সেখানে চলে যায়, আমাদের তো তাকে বের করতে যথেষ্ট সময়ের প্রয়োজন হয়। কাজেই যারা এগুলো বলছেন এগুলো আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী দেখছে। আমরা যাকেই খুঁজে পাব তাকে আমরা প্রকাশ করে দেখাব। কেউ যদি ইচ্ছে করে আত্মগোপন করে থাকে তাহলে আমরা কেন কেউই এই আত্মগোপন বের করতে পারবে না।

তিনি আরও বলেন, বর্ডারগুলোতে অনেক জায়গা দিয়ে তারা খুব ইজিলি চলে যেতে পারে। আমরা এটিই বলতে চাই। দ্বিতীয় বিষয় সমুদ্রপথ দিয়েও চলে যেতে পারে।

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নেত্র নিউজ সব সময় ভুয়া নিউজ দিয়ে থাকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে। আমরা এগুলোকে নিউজ বলে মনে করি না। আমাদের দেশের যে ঘটনা, আমাদের দেশের মিডিয়া ফ্রি। তারা যেকোনো সংবাদ সবসময়ই প্রকাশ করে থাকে। আমরা কোন মিডিয়ার ওপর সেন্সর করি না। কাজেই কোথাকার কোন নিউজ কি বলল আমরা সেগুলোর কোন বাস্তবতা খুঁজে পাই না।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: মানবাধিকার
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন