সামাজিক উন্নয়ন স্থায়িত্বশীল করতে মানবাধিকার বাস্তবায়নের তাগিদ

fec-image

পরিবার, সমাজ এবং জাতীয় পর্যায়ে উন্নয়নকে স্থায়িত্বশীল করতে সকল পর্যায়ে, সকলের জন্য মানবাধিকার বাস্তবায়ন জরুরি বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন আলোচকবৃন্দ।

মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) উখিয়ায় কোস্ট ট্রাস্টের আলোচনা সভায় তারা এসব কথা বলেন।  মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে সবার উপর মানুষ সত্য শীর্ষক এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় উখিয়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে।

আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন কোস্ট ট্রাস্টের সহকারি পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম।  আলোচনা সভায় জাতিসংঘের সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাপত্রের বিষয় তুলে ধরেন কোস্ট ট্রাস্ট এর যুগ্ম পরিচালক মজিবুল হক মনির।

তিনি উল্লেখ করেন, বর্তমান পৃথিবীর বাস্তবতায় শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করা করার সাথে সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সকলের ভূমিকা রাখার সুযোগ আছে।

উখিয়া উপজেলা প্রশাসনের হলরুমে আয়োজিত এই আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিজাম উদ্দিন আহমেদ।

অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হেল্প কক্সবাজারের নির্বাহী পরিচালক আবুল কাশেম, ইউএনএইচসিআর প্রতিনিধি কেফায়েতুল মোস্তাফা, পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান নুরুল আবছার চৌধুরী, উখিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি এস এম আনোয়ার, সাধারণ সম্পাদক কমরুদ্দিন মুকুল, উখিয়া অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি শফিক আজাদ, রাজাপালংয়ের ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য মীর শহিদুল ইসলাম রোমান, ৯ নং ওয়ার্ডের সদস্য হেলাল উদ্দিন, ১নং ওয়ার্ডের সদস্য নুরুল কবির, উখিয়া ইমাম সমিতির সভাপতি জাফর আলম, উখিয়া শিক্ষক সমিতির সভাপতি আব্দুল মান্নান, এবং কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষিকা রিতা বালা দে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাঁর বক্তব্যে বলেন, একজন মানুষ তার জন্ম থেকে কিছু অধিকার পেয়ে থাকেন আর সেগুলোই হলো মানবাধিকার। মানবাধিকারের ৩০টি ধারা আইন দ্বারা প্রযোজ্য নয়। জাতিসংঘের সংস্থা গুলো পৃথিবীতে মানবাধিকার নিশ্চিত করার জন্য কাজ করে থাকেন। আমাদের সকলেরই মানবাধিকার রক্ষায় কাজ করে যেতে হবে। আমাদের অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে কারো দ্বারা কারো মানবাধিকার যেন লংঘিত না হয়।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে মানবতার পরিচয় দিয়েছেন। তিনি উপস্থিত ইমাম শিক্ষক রাজনৈতিক নেতা সাংবাদিকদের মানবাধিকার বিষয়ে সচেতনতামূলক কর্মসুচি বাস্তবায়ন এবং তা নিশ্চিত করতে কাজ করে যেতে আহবান জানান।

তিনি উখিয়া বাসীর মানবাধিকার রক্ষার জন্য কাজ করে যাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধি কেফায়েতুল মোস্তফা বলেন, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ধরে রাখার জন্য সরকার, স্থানীয় এনজিও, আন্তর্জাতিক এনজিও এবং ইউএন সংস্থাগুলো একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। মানবাধিকারের ধারা গুলো সবাইকে জানার জন্য তিনি উদ্বুদ্ধ করেন।

তিনি আরো বলেন, প্রত্যাবাসন না হওয়া পর্যন্ত উভয় কমিউনিটির মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হেল্পের নির্বাহী পরিচালক আবুল কাশেম বলেন, আমাদের সবার নিজ নিজ জায়গা থেকে মানবাধিকার রক্ষায় কাজ করে যেতে হবে। আমরা সবাই কোন না কোন ভাবে মানবাধিকার কর্মী।
তিনি কোস্ট ট্রাস্ট এর মত অন্যান্য এনজিও এবং উখিয়া প্রেসক্লাবকে এই ধরনের মানবাধিকার প্রচার বিষয়ে কর্মসূচি নেয়ার আহ্বান জানানG

নুরুল কবির বলেন, পৃথিবীর সকল মানুষের অধিকার সমান এবং একে অন্যের অধিকার নিশ্চিত করতে কাজ করে যেতে হবে। জাফর আলম বলেন, মানবাধিকার চর্চা পরিবার থেকেই শুরু করা উচিত। তিনি জানান, সকল ইমামদেরকে মসজিদে মানবাধিকার বিষয়ে আলোচনা করার বিষয়ে উদ্ভুদ্ধ করে যাচ্ছেন।

এস এম আনোয়ার বলেন, আশ্রিত রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা পূরণ করা ও মানবাধিকারের অংশ।  তিনি বিভিন্ন সামাজিক সমস্যার কথা উল্লেখ করে বলেন আমাদের সবার মানবাধিকার রক্ষায় আরো জোরালো ভূমিকা রাখা উচিত।

কমরুদ্দিন মুকুল বলেন, রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয় জনগোষ্ঠী অনেকক্ষেত্রে মানবাধিকার বঞ্চিত হয়।  তিনি স্থানীয় জনগোষ্ঠীর শিক্ষার কথা উল্লেখ করে বলেন, ২০১৭ সালে স্থানীয় জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন স্কুল-কলেজ- মাদ্রাসায় আশ্রয় দেয়, এতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো স্বাভাবিক কার্যক্রম চালাতে পারেনি। এতে এই অঞ্চলের ছাত্র-ছাত্রীদের বিরাট ক্ষতি সাধিত হয়। তাই আমাদের মানবাধিকার রক্ষা করতে গিয়ে যেন অন্যের মানবাধিকার লঙ্গন না হয় সে বিষয়ে খেয়াল রাখা।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কক্সবাজার, প্রত্যাবাসন, মানবাধিকার
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন