পাহাড়ী ঢালুতে ঝুকির মধ্যে বসবাস করছে নাইক্ষ্যংছড়ির বাসিন্দারা

naikhangccari

বান্দরবান প্রতিনিধি:

পার্বত্য বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় পাহাড়ী টিলার পাদদেশে ঝুকিপূর্ণ ভাবে বসবাস করছে শত শত পরিবার। গত বছর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ধ্বসে প্রাণহানির ঘটনায় বর্তমানে এসব পাহাড়ী টিলায় বসবাসকারীরা চরম আতঙ্কে রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পাহাড়ী টিলায় শত শত পরিবার ঝুকিপূর্ণ বসবাস করে আসলেও প্রশাসন তাদের দমিয়ে রাখতে পারছেনা। বর্ষা মৌসুমে মাইকিং করে ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পাহাড়ী পাদদেশে বসবাসকারীদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিষেধ করা হলেও অসহায় দরিদ্র মানুষ মৃত্যুর ঝুকি নিয়ে বাধ্য হয়েই ঝুকিপূর্ণ পাহাড়ে থেকে যাচ্ছে। এতে গত কয়েক বছর ধরে এ উপজেলায় পাহাড় ধ্বসে প্রাণহানির একাধিক ঘটনা ঘটছে। সূত্র মতে, উপজেলার জারুলিয়াছড়ি, লেমুছড়ি, বাগানঘোনা, আদর্শগ্রাম, নারিচবুনিয়া, রেজু বড়ইতলী, চেরারমাঠ, আলিক্ষ্যং, ম্রুংপাড়া, এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে ঝুকিপূর্ণ বসবাস রয়েছে। এছাড়াও উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকায় অসহায় দরিদ্র মানুষ বসবাস করছে পাহাড়ে। মাথা গুজানোর মত বিকল্প কোন জায়গা না থাকায় এসব অসহায় দরিদ্র মানুষ প্রাণহানির আশংঙ্কা আছে জেনেও পাহাড়ী চূড়া থেকে সরে যাচ্ছেনা। বর্ষা মৌসুম এলে তাদেরকে আতংকের মধ্যে থাকতে হয়। কিন্তু কখনো কেউ তাদেরকে কার্যত সহযোগিতায় এগিয়ে আসেনি। পাহাড়ে অত্যান্ত ঝুকির মধ্যে বসবাসরতদের বিষয়ে উপজেলা পরিষদে সঠিক কোন পরিসংখ্যানও নেই। বর্ষা মৌসুমের শুরতে জেলা প্রশাসনের চাপের মূখে উপজেলা প্রশাসন মাইকিংয়ের মাধ্যমে সরিয়ে যেতে বললেও কার্যত কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়না ঝুকিপূর্ণে থাকা মানুষগুলোর জন্য।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বাইশারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মনিরুল হক জানান, তারঁ ইউনিয়নে মারাত্মক ঝুকিপূর্ণ পাহাড় না থাকলেও কয়েকটি গ্রামের মানুষ পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করে। সম্প্রতি উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে এসব গ্রামের মানুষকে শর্তকাবস্থায় থাকতে বলা হয়েছে। তবে, পাহাড়ে বসবসকারী অধিকাংশরাই অসহায় দরিদ্র মানুষ। তাদের একমাত্র সম্ভল শুধুমাত্র একটি পাহাড় তাই প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসব অসহায় মানুষ যাতে বিকল্প ব্যবস্থায় থাকতে পারে সেদিকেও নজর দেওয়া প্রয়োজন।
সরেজমিনে দেখা যায়, পাহাড়ী পাদদেশে যারা বসবাস করছে তাদের মধ্যে অনেকে জায়গার প্রশস্ততা বৃদ্ধি আবার কেউ জমির মূল্য বৃদ্ধির কারণ পাহাড়ের অনেকাংশ কেটে ফেলায় টিলাগুলো দুর্বল হয়ে পড়ে। বর্ষা মৌসুমে এসব পাহাড় ধ্বসে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নির্বিচারে এভাবে পাহাড় কর্তনের কারণে পাহাড় ধ্বস হচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানান।
নাইক্ষ্যংছড়ির স্থানীয় সচেতন নাগরিক মংনু মার্মা জানান, ঝুকিপূর্ণ পাহাড়ের পাদদেশে যারা বসবাস করছে তারা নিম্ন আয়ের মানুষ। জীবনের ঝুকি আছে তা জানার পরও তারা সেখানে বসবাস করে। তবে সরকারিভাবে তাদের পূনর্বাসনের ব্যবস্থা করে অন্যত্র সরিয়ে নিতে প্রশাসনের প্রতি দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আহমেদ জামিল বলেন- জনসাধারণ একটু সর্তকতা অবলম্বন করলেই পাহাড় ধ্বস থেকে রক্ষা পেতে পারে। তারপরও পাহাড়ী ঢলে প্রাণহানির ঘটনা যাতে না ঘটে এজন্য বর্ষা শুরুর আগেই প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে পাহাড়ে বসবাসরতদের নিরাপদ স্থানে থাকতে বলা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন