পেকুয়ায় ১৯টি অবৈধ স’মিলে চেরাই হচ্ছে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গাছ

fec-image

কক্সবাজারের পেকুয়ার বিভিন্ন হাটবাজার ও সড়কের পাশে অনুমোদন বিহীন অবৈধ ১৯ স’মিল বসিয়ে দিনরাত সরকারি বনাঞ্চলের গাছ চেরায় করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে বন নিধনকারী একটি সংঘবদ্ধ চক্র অবৈধ স’মিলে বনাঞ্চলের গাছ সরবরাহ করে চিরাই করলেও স্থানীয় প্রশাসন, বন বিভাগ ও পরিবেশ অধিদপ্তর অবৈধ স’মিল বন্ধে কোন ধরনের আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। বছরের পর বছর ধরে অবৈধ স’মিলগুলোতে সরকারি বনাঞ্চলের গাছ এনে চিরাইয়ের মহোৎসব চলছে। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে সরকারী বনাঞ্চলের বিভিন্ন প্রজাতির গাছ-গাছালি।

জানা যায়, পেকুয়া উপজেলার ৭ ইউনিয়নের মধ্যে টইটং, বারবাকিয়া ও শিলখালীর ভৌগলিক অবস্থান পাহাড়ি অঞ্চল। কক্সবাজার জেলার অধীন হলেও পাহাড়ী তিন ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের অধীনে। ফলে, দুই জেলার প্রশাসনিক টানা হেচঁড়ার মধ্য দিয়ে সরকারি সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও বনজ সম্পদের রক্ষনাবেক্ষণ দু’টানা অবস্থায় বিদ্যমান। আর এর সুযোগ নিচ্ছে সংঘবদ্ধ বন নিধনকারী ও অবৈধ স’মিল মালিক চক্র।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের মেহেরনামায় চড়াপাড়া বাজারের বানৌজা শেখ হাসিনা ঘাঁটি মহাসড়কের দুই পাশে ৩টি, বারবাকিয়া ইউনিয়নের পূর্ব জালিয়াকাটায় ৩টি, টইটং ইউনিয়নের হাজীর বাজারে ২টি, টইটং বাজারে ২টি, মৌলভী বাজারে ১টি, টইটং রাজাখালীর আরব শাহ বাজারে ৪টি, রাজাখালী ভাঙ্গাখালীতে ১টি পেকুয়া আলহাজ্ব কবির আহমদ চৌধুরী বাজারের পশ্চিম পাশে ৩টি অবৈধ স’মিল রয়েছে। এসব অবৈধ স’মিল স্থাপনের পর থেকে অদ্যবধি পর্যন্ত পরিবেশ অধিদপ্তর, প্রশাসন ও বন বিভাগ অভিযান চালাইনি। বন বিভাগ ও পরিবেশ অধিদপ্তরের নিষ্ক্রিয়তায় দ্বিগুণ উৎসাহে এসব অবৈধ স’মিলগুলোতে বনের গাছ চেরাই বহুগণ বেড়ে গেছে।

এদিকে অনুমোদন বিহীন অবৈধ স’মিল মালিকরা বলছে, তাদের লাইসেন্স প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক স’মিল মালিক বলেন, বারবাকিয়া রেঞ্জের শিলখালী, টইটং ও পহরচাঁদা বনবিটে কর্মরত কর্মচারীদের ম্যানেজ করেই চলছে এসব অবৈধ স’মিল। কোন ধরনের সরকারী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই পরিচালিত স’মিলে দিনের পর দিন, বছরের পর বছর ধরে চলছে চকরিয়া,লামা ও বারবাকিয়া সংরক্ষিত বনাঞ্চলের বিভিন্ন প্রজাতির গাছ চেরাই। এসব করাত কলের মালিকদের সাথে অসাধু গাছ ব্যবসায়ী ও বনদস্যু সিন্ডিকেটের রয়েছে গভীর সখ্যতা।

স্থানীয় পরিবেশ সচেতন ব্যক্তিরা অভিযোগ করে বলেন,৭টি ইউনিয়নের ছোট একটি উপজেলায় অনুমোদন বিহীন বিপুল সংখ্যক অবৈধ স’মিলের কারণে চরম হুমকি ও ঝুঁকির মুখে পড়েছে উপজেলার বিস্তীর্ণ সংরক্ষিত বনাঞ্চল।

এ বিষয়ে পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুল হক বলেন, পেকুয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে অবৈধ ৩৮ স’মিল রয়েছে। এরমধ্যে চলতি মাসের ২৩ নভেম্বর দুপুরে উপজেলা প্রশাসন ও বনবিভাগের যৌথ অভিযানে পেকুয়া বাজারে ১০টি অবৈধ স’মিলে অভিযান চালিয়ে স’মিলের যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন সহযোগীতা করলে অন্যান্য অবৈধ স’মিলে শিগগিরই অভিযান পরিচালনা করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন