পেকুয়া কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়নের ২১তম বার্ষিক সাধারণ সভা পণ্ড: ৩ রাউন্ড গুলিবর্ষণ, ২ সংবাদকর্মী আহত

নিজস্ব প্রতিনিধি,পেকুয়া:
পেকুয়ার সর্ববৃহৎ সমবায় সমিতি পেকুয়া কো অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিমিটেডের ২১তম বার্ষিক সাধারণ সভা পন্ড হয়ে সাধারণ সদস্য কর্তৃক চেয়ারম্যান ও সমিতির ডিরেক্টরদের কে মারধর করার ঘটনা ঘটেছে। জানা যায়, গতকাল সকালে পেকুয়া কো অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিমিটেডের ২১তম বার্ষিক সাধারণ সভা কবির আহম্মদ চৌধুরীর বাজার মাঠে সমিতির সেক্রেটারী ইদ্রিসের উপস্থাপনায় পবিত্র কোরআন তেলোয়াত করে সভার কার্যাক্রম শুরু করেন।

শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন সমিতির সভাপতি মাস্টার নাছির উদ্দিন। বক্তব্য শেষ হওয়ার পর পরই সদস্যদের মধ্যে থেকে ওপেন আলোচনায় শুরু হয়। বিভিন্ন সদস্যরা বক্তব্য দিতে গিয়ে সমিতির বর্তমান সভাপতির স্বাগত বক্তব্য প্রতাখ্যান করেন। এক পর্যায়ে সাবেক সভাপতি মাহামুদুল করিম ফারুকীর আমলে বিভিন্ন জন কে ধার টাকা এবং নামে বেনামে খরচ করে হিসাবে লিপিবদ্ধ করা সর্বোপরি সাবেক সভাপতি নিজে ওইসব প্রশ্নের জবাব দিতে মঞ্চে গিয়ে প্রশ্নের জবাব দেওয়ার সময় সদস্য ও উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রশ্ন তুলেন সমিতির সাবেক সহকারী ম্যানেজার আব্দুল মোনাফ সমিতির টাকা নিজের নামে গুচ্ছিত রাখছে এবং আত্মসাৎ করছে এমন প্রশ্ন করলে সাথে সাথে অভিযুক্ত আব্দুল মোনাফ দাড়িয়ে ওই প্রশ্নের জবার দেওয়ার সময় জাহাঙ্গীর ও মোনাফের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়।

এক পর্যায়ে পেছন থেকে সামনে মঞ্চের দিকে চেয়ার ছুটে মারার সাথে সাথে উপস্থিত সদস্য এবং বহিরাগত লোকজন মঞ্চের দিকে এগিয়ে এসে মঞ্চে উপস্থিত সমিতির নেতৃবৃন্দদের কে টেবিল ধাক্কা দিয়ে চেয়ার মারামারি শুরু করে। এক পর্যায়ে সভাপতি মাষ্টার নাছিরউদ্দিনসহ ডিরেক্টররা এবং সাবেক সভাপতি মাহামুদুল করিম ফারুকী ও মোনাফকে মারধর করে সাধারণ সদস্যরা। এসময় তারা পালিয়ে যায়। ওই ঘটনাকে পুঁজি করে গুটি কয়েক আ’লীগ নামধারী নেতারা ঘটনা কে বিভিন্ন খাতে নিয়ে যায়।

এতে রাহাতজানি পাড়ার সামশুর আলমের পুত্র ছাত্রদল কর্মী রাসেল (২৪), রিদুয়ান, রিয়াজ কে গুরুত্বর আহত করে। আহতদের কে পেকুয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। প্রত্যক্ষদর্শীসূত্রে জানায়, বাজারে কো অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়নের বার্ষিক সাধারণ সভার নিউজ সংগ্রহ শেষে দুপুর ২ টায় বাজারের জনতা ব্যাংকের নিচে একটি কুলিং কর্ণারে নাস্তা করার সময় দৈনিক বাঁকখালী পত্রিকার প্রতিনিধি এবং পেকুয়া সৈনিকলীগের সদস্যসচিব ফারুক ও আমাদের কক্সবাজারের প্রতিনিধি ও সৈনিকলীগের পেকুয়ার সভাপতি শহিদের কাছ থেকে রাসেলের আত্মীয় স্বজনরা এসে রাসেলের মারধরের বিষয় জানতে চাইলে উভয় পক্ষের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়।

এক পর্যায়ে বিক্ষুদ্ধ জনতা ওই দুই সংবাদকর্মীকে এলোপাতাড়ি মারধর করে পালিয়ে যায়। পরে ওই ঘটনার ইস্যু নিয়ে আ’লীগের কয়েকজন নেতাকর্মী বাজারের পশ্চিম পাশে জড়ো হয় এবং বি এন পির কিছু নেতাকর্মীরা বাজারের পূর্ব পাশ্বে দলীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে উভয়পক্ষের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। তখন বাজারে ২ ঘন্টা ধরে দোকানপাটবন্ধ ছিল এবং বাজারে উপস্থিত লোকজন দিকবেদিক ছুটাছুটি করতে দেখা যায়।

সন্ধ্যা পর্যন্ত চরম উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এদিকে সংবাদকর্মী ফারুক বাদী হয়ে তার উপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে পেকুয়া থানায় এজাহার জমা দিচ্ছে বলে জানা গেছে। সমিতির চেয়ারম্যান মাষ্টার নাছির উদ্দিন জানান, বর্তমানে সমিতির মূলধন ১৩ কোটি এবং স্থাবর অস্থাবর সম্পদের লোভে বশীভুত হয়ে সাবেক কমিটির নেতৃবৃন্দরা ও আতৎসাকারীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

এদিকে তথ্য নিয়ে দেখা গেছে সাবেক সভাপতির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট আতৎসাতের অভিযোগ আনতে পারেনি। কিন্তু এমনে সদস্যদের মুখে বলাবলি শুরু করছে সাবেক সভাপতি ফারুকীর আতসাৎ করছে। এ ব্যাপারে জানতে সাবেক সভাপতি ফারুকীর সাথে কথা হলে তিনি জানান আমার বিরুদ্ধে সুনিদিষ্ট অভিযোগ আনতে পারেনি।   এ ব্যাপারে পেকুয়া থানার ওসি হাবিবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিনিধি কে জানিয়েছেন, সমিতির একটি সভা হয়েছিল এসময় হিসাব নিকাশ নিয়ে একটু কথাকাটাকাটি হয় তখন সদস্যরা সভায় বিশৃংঙ্খলা সৃষ্টি করে সভা পন্ড করে দেয়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন