প্রতিষ্ঠার ৭ বছরেও বান্দরবান আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারে জনবল ও যন্ত্রপাতি পূরণ হয়নি

fec-image

গত সাত বছর আগে বান্দরবানে ১ম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার উদ্বোধন হয়েছে। রয়েছে পূর্ণাঙ্গ অবকাঠামো ও কিছু যন্ত্রপাতি। কিন্তু জনবল ও প্রয়োজনীয় আরও কিছু যন্ত্রপাতির অভাবে পাহাড়ের মানুষকে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিতে পারছেনা এই প্রতিষ্ঠানটি। যেসব যন্ত্রপাতি আনা হয়েছিল তাও ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে দিন দিন। ফলে বিপাকে পড়েছে পাহাড়ি এই জেলার মানুষ।

দুর্গম পাহাড়ের মানুষের আবহাওয়ার পূর্বাভাসের গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে ২০১৪ সালে বান্দরবান জেলা শহরের মেঘলায় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল ১ম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার। কিন্তু এখনো অকার্যকর রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। জনবলের অজুহাতে সেবা কার্যক্রম দিতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।

এই বিষয়ে বান্দরবান সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর বলেন, দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও বান্দরবান ১ম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার থেকে মিডিয়া কিংবা এলাকার মানুষের জন্য কোন কার্যক্রম এখান থেকে হয়নি। কর্তৃপক্ষ বারবার জনবল নেই বলে দাবি করেন। কিন্তু যখন পরিকল্পনা করা হয়েছে কিংবা এটি নির্মাণ করা হয়েছে তখন কেন বর্তমান সমস্যাগুলো বিবেচনা করা হয়নি প্রশ্ন তোলেন তিনি।

জানা গেছে, ১ম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষনাগার নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় বান্দরবান গণপূর্তবিভাগ ৮৭ লক্ষ ৬০ হাজার টাকায় ডরমেটরী ভবন এবং ৫২ লক্ষ টাকায় জেলা অফিস ভবন নির্মাণ করেছিল। কিন্তু অর্ধযুগের অধিক সময় ধরে এই প্রতিষ্ঠান থেকে আবহাওয়ার পূর্বাভাস বঞ্চিত হচ্ছে পাহাড়ি অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ।

সাঙ্গু নদীতে নিয়মিত ইঞ্জিন চালিত নৌকা চালান বিমল দাশ, রুমেন দাশ। জানতে চাইলে তারা এই প্রতিবেদককে বলেন- বৈরী পরিবেশে জীবনের ঝুকি নিয়ে সাঙ্গু নদীতে নৌযান চালান তাদেরমতো শত শত নৌচালক। কিন্তু কারো কাছে আবহাওয়ার পূর্বাবাস জানা থাকেনা। ফলে প্রায়সময় ভারী বৃষ্টিপাত, বাতাসের গতিবেগে দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। এই অবস্থায় বান্দরবান আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে নিয়মিত আবাহাওয়ার পূর্বাভাস পেলে উপকৃত হবেন তারা।

বান্দরবান আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের আবহাওয়া সহকারী সনাতন কুমার মন্ডল জানান, এই প্রতিষ্ঠানে ৮জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিপরীতে রয়েছে মাত্র ২জন। তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাত, বায়ুচাপ, বাতাসের গতিবেগ সীমিত পরিসরে সংগ্রহ করছেন তারা। ভূমিকম্প মাপার যন্ত্র সিসমোগ্রাফসহ আরো গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি সংযোজন এবং জনবল নিয়োগ দেওয়া হলে পূর্ণাঙ্গভাবে মানুষকে সেবা দিতে পারবে প্রতিষ্ঠানটি।

আগামীতে পূর্ণাঙ্গভাবে এই আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার চালু হলে দুর্গম পাহাড় ও সাঙ্গু নদীর তীরবর্তী ঝুকিপূর্ণ বসবাসরত হাজার হাজার মানুষের পাশাপাশি মিডিয়া এবং স্থানীয়রা উপকৃত হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন