প্রধানমন্ত্রী আসছেন কিন্তু খাগড়াছড়িতে নেই স্থানীয় এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক: নানা প্রশ্ন

Untitled-1

মো: আবুল কাসেম, খাগড়াছড়ি থেকে ॥
দীর্ঘ ১৬বছর পর  আগামীকাল ১১ নভেম্বর প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা খাগড়াছড়ি সফরে আসছেন। ১৬ বছর প্রধামন্ত্রী খাগড়াছড়ি আসলেও বর্তমান খাগড়াছড়ি সংসদ সদস্য যতীন্দ্র লাল ত্রিপুরা ও সাধারন সম্পাদক মো. জাহেদুল আলম খাগড়াছড়িতে নেই। তাদের অনুপস্থিতিতেই প্রধামন্ত্রী জনসভা করতে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর আগমন ও জেলা আওয়ামীলীগে উদ্যোগে আয়োজিত জনসভায় জেলা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী ও প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গীরা উপস্থিত থাকলেও স্থানীয় সংসদ সদস্য ও শরনার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান যতীন্দ্র লাল ত্রিপুরা ও সাধারন সম্পাদক জাহেদুল আলমের এ অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে পুরো জেলায় ও আওযামী লগের সাধারণ নেতাকর্মীদের মধ্যে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সংসদ সদস্য যতীন্দ্র লাল ত্রিপুরা অসুস্থতার কারণ উল্লেখ করে প্রধামন্ত্রীর কাছ থেকে ছুটি নিয়ে ভারতে চিকিৎসাধীন রয়েছে। অপরদিকে, সাধারন সম্পাদক জাহেদুল আলম ওমরাহ হজ্ব পালন করতে সৌদি আরবে অবস্থান করছেন। ফলে বর্তমান খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ও ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক এস.এম শফি প্রধানমন্ত্রীর সফরের পুরো কর্মসূচী মনিটরিং করছেন ও রীতিমত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যয়, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এ জেলায় শীর্ষস্থানীয় মুষ্টিমেয় কিছু নেতাকর্মী ছাড়া মাঠ পর্যায়ে তৃণমূল নেতাকর্মীরা সকল সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছিল। যার ক্ষোভের বহি:প্রকাশও ঘটেছিল প্রধানমন্ত্রীর সাথে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগ তার  অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মতবিনিময় সভায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতাকর্মী জানান, জেলা সদরসহ উপজেলাসমূহের উন্নয়ন কাজ মুষ্টিমেয় কয়েকজন নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। তাদের ইচ্ছা-অনিচ্ছার উপরে নেতাকর্মীদের ভাগ্যের পরিবর্তন নির্ভর করে আসছে। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র কতিপয় নেতাদের উন্নয়ন হলেও তৃণমূল নেতাকর্মীরা সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে ধীরে ধীরে দলীয় কাজকর্মে ঝিমিয়ে পড়ে। যার ফলে কেন্দ্রীয় সকল কর্মসূচী ঘরোয়া পরিবেশে বা ক্ষুদ্র পরিসরে পালিত হয়েছে।

অন্য একটি সূত্র দাবী করেছে, খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগ তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে ঠান্ডাযুদ্ধে অবতীর্ণ রয়েছে। বিশেষ করে, জেলা আওয়ামীলীগের কাউন্সিলে বর্তমান এমপি যতীন্দ্র লাল ত্রিপুরা সভাপতি হতে না পারায় বর্তমান সভাপতির সাথে তার দুরত্ব ও দ্বন্দ্ব বাড়ার বিষয়টি রীতিমত পুরো জেলায় প্রভাব পড়েছে।

অন্যদিকে, বিগত ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. জাহেদুল আলম জেলার নেতাকর্মীদের সিংহভাগ ভোট পেয়েও ২৯৮নং খাগড়াছড়ি আসন হতে মনোনয়ন না পাওয়ায় স্বতন্ত্র নির্বাচন করায় তিনি ও তার সমর্থক অংশকে সরকার গঠনের পর প্রায় আড়াই বছর দলীয় কর্মকান্ডে দেখা যায়নি। সূত্র জানায়, পরবর্তীতে চট্টগ্রামে কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক চট্টগ্রাম সিটি মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীর মধ্যস্থতায় সাধারণ সম্পাদকের পদ ফিরে পেলেও পূর্বের মত দলীয় কর্মকান্ডে তাকে আর তেমন সক্রিয় হতে দেখা যায়নি।

তারপরও ঝিমিয়ে পড়া আওয়ামীলীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। তার আগমনে খাগড়াছড়ি জেলাকে নতুন সাজে সাজানো হয়েছে। প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। নিরবিচ্ছিন্ন কড়া নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বিরোধী দলের ডাকে ৮৪ ঘন্টার হরতাল ও পিসিপির অবরোধকে মাথায় রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বিশেষ পরিকল্পনা রাখা হয়েছে। জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন থেকে নেতাকর্মীরা যাতে নির্বিগ্নে আসতে পারে তারও ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ১২জন করে টীমওয়ার্কে ইতোমধ্যে এ সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগ।

 

 

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন