ফরমালিন থেকে নিজে বাঁচুন এবং পরিবারকে বাঁচান

formalin

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:
দুনিয়ায় খুব কম জাতিই আছে যারা নিজেদের ধ্বংসের ব্যাপারে অসতর্ক থাকে। সেই গুটিকয়েক জাতির মধ্যে একটি হল বাংলাদেশী। আমাদের কিছু ব্যাবসায়ী আছেন যাদের কাছে জীবনের চেয়ে টাকার মূল্য অনেক বেশী। অবশ্য রাস্তাঘাটে এত মানুষ সেটা মনে হতেই পারে। তবে নিজের কাছের মানুষের বেলায় যখন জীবন মরণ নিয়ে টানাটানি পড়ে তখন দেখা যায় অন্য পেশার মানুষকে দোষারোপ করতে তাঁরা আর কার্পণ্য করেন না। যাই হোক কয়লা ধুলে যেমন ময়লা যায় না তেমনি এই সকল ব্যবসায়ী রা খাবারে ভেজাল, বিষ, ফরমালিন মেশাবেই। আমরা যারা ক্রেতা তাদের দুইটা উপায় আছে- এক এই দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া। দুই- একটু সতর্ক হয়ে যতটুকু পারা যায় ভাল খাবার খাওয়া। আসুন যারা দেশে থাকবেন তাঁরা কিভাবে ফরমালিন থেকে মোটামুটি বেঁচে থাকা যায় সেইটা দেখি।

ফরমালিন কি?
ফরমালিন হল এক ধরনের কেমিক্যাল রসায়ন বিজ্ঞানের ভাষায় মিথান্যাল আর অ্যালকোহল এর জলীয় দ্রবণ। এটি সাধারণত মেডিক্যাল সাইন্স ও বায়োলজি এর বিভিন্ন ল্যাব গুলোতে নানা জীবজন্তুর বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংরক্ষণের কাজে ব্যবহার করা হয়। ফরমালিন এর খুব কাছাকাছি আর একটি জিনিস আছে নাম ফরমিক এসিড যা পিঁপড়ার কামড়ে থাকে। প্রিয় পাঠক পিঁপড়া কিন্তু তাঁর খাবার সংরক্ষণ করে অনেকটা অসাধু ব্যবসায়িদের মত ফরমালিন এর কাছা কাছি একটা জিনিস দিয়ে।

ফরমালিন এ কি হয়?
এক কেজি মাছে যে পরিমাণ ফরমালিন দেওয়া হয় সেটা যদি সবচেয়ে কম করেও ধরি, তাহলে তা প্রায় কয়েক শত কোটি বড় লাল পিঁপড়ার কামড়ের ফরমিক এসিড থেকে অনেক বেশী। তাই, একবার ভাবুন, একটা বড় লাল পিঁপড়া কামড় দিলে শরীরের কি অবস্থা হয়! যদি শত শত কোটি পিঁপড়া কামড় দিত তাহলে কি হত? আর খাবারের সাথে ফরমালিন খাবার ফলে তা হজমের সময় রক্তে চলে যায় এবং ধীরে ধীরে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ যেমন পাকস্থলী, লিভার, কিডনি ইত্যাদি কে অকার্যকর করে ফেলে। এমনকি ক্যান্সারের মত মারাত্নক রোগ হওয়ার সম্ভাবনাও বাড়িয়ে দেয় কয়েকশত গুন।   

ফরমালিন মুক্ত করার উপায়ঃ

ফরমালিন খুব সহজেই পানিতে দ্রবণীয়। তাই সবজি রান্না করার আগে কুসুম গরম লবন মিশ্রিত পানিতে সবজি ভিজিয়ে রাখতে হবে ২০ মিনিট। এরপর পানি ফেলে দিয়ে স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি দিয়ে ধুয়ে রান্না করুন।একটু সময় নিয়ে রান্না করুন।

বাজার থেকে আনা ফল পানিতে সোয়া ১ ঘণ্টা ডুবিয়ে রাখুন। খোসাযুক্ত ফলগুলো ছিলে খাবেন।
মাছে সবচেয়ে বেশী ফরমালিন প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। মাছ লবন পানিতে ডুবিয়ে রাখলে ফরমালিন অনেকটাই নষ্ট হয়ে যায়।আর কাঁচা মাছ-মাংস এক লিটার পানিতে এক কাপ ভিনেগার এই অনুপাতে মিশ্রিত করে পানিতে ডুবিয়ে ১ ঘণ্টা রাখলে শতকরা ৯৫ ভাগের বেশী ফরমালিন নষ্ট হয়ে যায়। রান্নার সময় আঁচ বেশী রাখতে হবে। আঁচ ৭৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস হলে ভালো। ভিনেগার না পেলে লেবুর রস ব্যাবহার করতে পারেন, তবে লেবুর রসে থাকে সাইট্রিক এসিড যেটা ভিনেগারের মত অতবেশি কার্যকর নয়, তবে নাই মামার থেকে কানা মামা ভাল।

শুঁটকি মাছ প্রথমে এক ঘণ্টা গরম পানিতেও পরে একঘণ্টা স্বাভাবিক পানিতে ভিজিয়ে রাখুন ও তারপর রান্না করুন। দেখবেন ফরমালিন মুক্ত হবে, স্বাদও বাড়বে।  

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন