বাংলাদেশে নির্মিত সবচেয়ে বড় বালুর ভাস্কর্য সাগরতটে

fec-image

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সগরতটের লাবণীয় পয়েন্টে নির্মিত হয়েছে বিশ্বের প্রথম ‘বালু ভাস্কর্য।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীদের ১০ সদস্যের একটি দল কামরুল ইসলাম শিপনের নেতৃত্বে এই ভাস্কর্য নির্মাণ করেন।

দুটি ভাস্কর্য এখানে তৈরি হয়েছে। একটি বঙ্গবন্ধুর ফ্রি স্ট্যান্ডিং ভাস্কর্য। অপরটি রিলিফ ভাস্কর্য। সৈকতে ভ্রমণে আসা দর্শনার্থীরা এই ভাস্কর্য দেখে আনন্দিত হবে।

নির্মাতারা বলেছেন, প্রায় ৬ ফুট উচ্চতা ও ১৪ ফুট প্রশস্ত এ ভাস্কর্যটি এযাবৎকালে বাংলাদেশে নির্মিত সবচেয়ে বড় বালুর ভাস্কর্য। যেটি মহান বিজয়ের দিন ১৬ ডিসেম্বর সকালে উদ্বোধন করা হবে।

‘জাতির পিতার সম্মান রাখবো মোরা অম্লান’ এই প্রতিপাদ্যে স্থাপিত ভাস্কর্যটি আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এরপর প্রশাসনিকভাবে তা বিনষ্ট করে ফেলা হবে।

জেলা প্রশাসনের পরিকল্পনায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যটির নির্মাণে সার্বিক সহযোগিতা করেছে ‘ব্র্যান্ডিং কক্সবাজার’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান।

এ প্রসঙ্গে স্থানীয় সাংবাদিক ও সংস্কৃতিকর্মী তৌফিকুল ইসলাম লিপু বলেন, একটি উগ্র মৌলবাদী গোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য চায় না। আমরা তরুণ প্রজন্ম এটার বিরোধিতা করছি। কারণ, বঙ্গবন্ধু মানে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর এই স্বাধীন দেশেই থাকবে পিতা মুজিবের ভাস্কর্য। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন পিতা মুজিবের ভাস্কর্য পাহারা দেয়ার দায়িত্ব মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির লোকজনদের।

তিনি বলেন, বিশাল সৈকতে দেশের প্রথম জনকের বালু ভাস্কর্য তৈরি এটিই প্রমান করে উগ্র মৌলবাদী শক্তি স্বাধীনতা পক্ষের শক্তির কাছে বরাবরেই পরাজিত। জাতির পিতা আমাদের প্রেরণা, চেতনা। তাকে আমরা চিরঞ্জিব রাখবো।

ভাস্কর্য নির্মাতা গ্রুপের টিম লিডার কামরুল হাসান (শিপন) বলেন, পৃথিবীর বৃহত্তম সুমদ্রসৈকতে পৃথিবীর বৃহত্তম মানুষটিকে তুলে ধরতেই আমাদের এ উদ্যোগ। এটি যেহেতু সমুদ্রসৈকত। তাই সৈকতের বালু দিয়েই আমরা ‘বালু ভাস্কর্য’ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি। এযাবৎকালে পৃথিবীতে যত ভাস্কর্য নির্মিত হয়েছে এই বালু ভাস্কর্য হবে সবচেয়ে বড়।

ব্র্যান্ডিং কক্সবাজারে সমন্বয়ক ইশতিয়াক আহমেদ জয় বলেন, ধর্মান্ধ এবং উগ্রবাদীদের কাছে একটি বার্তা পৌঁছে দিতে চাই, তারা যেন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য গুঁড়িয়ে দেওয়া কিংবা অপসারণের মতো ধৃষ্টতা না দেখায়। প্রায় ৮ লাখ টাকা ব্যয়ে বালুর ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হয়েছে।

ইশতিয়াক আহমেদ জয় জানান, মহান বিজয় দিবসে জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকী এবং কুষ্টিয়ায় ভাস্কর্য ভাঙ্গার প্রতিবাদে দেশবাসীকে আমরা একটি মেসেজ দিতে চাই, সেটি হচ্ছে একটি মৌলবাদী গোষ্ঠী জাতির জনকের ভাস্কর্য অপসারণের যে ধৃষ্টতা দেখিয়েছে সেই অপচেষ্টা কখনো সফল হবে না। জাতির জনক থাকবে মানুষের হৃদয়ে। বঙ্গবন্ধুর এই বালু ভাস্কর্য নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৮ লাখ টাকা।

ইতিপূর্বে এই সৈকতে বালু দিয়ে ভাস্কর্য তৈরি হলেও এত বড় ভাস্কর্য আর তৈরি হয়নি বলে জানান আয়োজকরা।

জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন জানান, কুষ্টিয়ায় জাতির পিতার ভাস্কর্যের প্রতি যে অবমাননা করা হয়েছে তার প্রতিবাদে ঝড় উঠেছে সারাদেশে। বঙ্গবন্ধুর সম্মান অক্ষুণ্ন রাখা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। সেই লক্ষে আমরা দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতে জাতির পিতার বৃহৎ এই বালু ভাস্কর্য নির্মাণ করেছি। পৃথিবী যতদিন আছে জাতির পিতার অস্তিত্ব ও সম্মান ততদিন বেঁচে থাকবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন