বাংলা গানের অহংকার রুনা লায়লার জন্মদিন আজ
দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী রুনা লায়লা। যার কণ্ঠে আশ্রয় নিয়েছে ১৮টি ভাষা। প্রাণ পেয়েছে ১০ হাজারের বেশি গান। যিনি আমাদের উপহার দিয়েছেন, আল্লাহ মেঘ দে, বন্ধু তিনদিন তোর বাড়িত গেলাম দেখা পাইলাম না, একা একা কেন ভালো লাগে না, ইস্টিশনে রেলগাড়িটা, সাধের লাউ, খাঁচার ভিতর অচিন পাখি—এমন অসাধারণ জনপ্রিয় শতাধিক বাংলা গান। আজ তার ৬৯তম জন্মদিন।
১৯৫২ সালের ১৭ নভেম্বর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বাবা সৈয়দ মোহাম্মদ এমদাদ আলী ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা এবং মা আনিতা সেন ওরফে আমেনা লায়লা ছিলেন সঙ্গীত শিল্পী। তার মামা সুবীর সেন ভারতের বিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী। রুনা লায়লার যখন আড়াই বছর বয়স তার বাবা রাজশাহী থেকে বদলি হয়ে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের মুলতানে যান। সে সূত্রে তার শৈশব কাটে পাকিস্তানের লাহোরে।
১৯৬৫ সালে পাকিস্তানি চলচ্চিত্র জুগনুতে প্রথম প্লেব্যাক করেন। আর পেছন ফিরে দেখতে হয়নি রুনাকে। ১৯৬৬ সালে উর্দু চলচ্চিত্র হাম দোনোর জন্য তাকে উনকি নজরোসে মোহাব্বাতকা জো পয়গাম মিলা নামের একটি গজল গাইতে বলা হয়। ১৯৭০ সালের মধ্যেই তিনি প্রায় এক হাজার গান রেকর্ড করে ফেলেন। ১৯৭২ সালে মাত্র ১৯ বছর বয়সে তিনি তার নিজের গানের অনুষ্ঠান বাজমে লায়লা শুরু করেন। এটি করাচি টিভিতে দুই সপ্তাহ পরপর দেখানো হতো।
১৯৭৪ সালের শুরুতে প্রয়াত সত্য সাহার সুরে ‘জীবন সাথী’ ছবিতে গান গাওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ছবিতে প্রথম প্লেব্যাক করেন তিনি। গানের কথা ছিল ‘ও জীবন সাথী তুমি আমার’। এ গানে তার সঙ্গে কণ্ঠ দেন খন্দকার ফারুক আহমেদ। তবে পাকিস্তানের ‘যুগ্নু’ ছবিতে ছোটবেলায় রুনা লায়লা প্রথম প্লেব্যাক করেন। এরপর পাকিস্তান ও বাংলাদেশের অসংখ্য ছবিতে তিনি প্লেব্যাক করেছেন।
সংগীতে আকাশছোঁয়া সাফল্য অর্জন করা শিল্পী রুনা লায়লা নাচেও বেশ পারদর্শী। চার বছর বুলবুল একাডেমি করাচীতে ভরতনাট্যম, কত্থক, কত্থকলি শিখেছিলেন এ তারকা। ইচ্ছে ছিলো নৃত্যশিল্পী হবেন। নন্দিত এই শিল্পী অভিনয় করেছেন ‘শিল্পী’ নামক চলচ্চিত্রেও।
ক্যারিয়ার জুড়ে পেয়েছেন নানা পুরস্কার। এসবের মধ্যে রয়েছে দেশ থেকে চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার। এছাড়া ভারত থেকে পেয়েছেন সায়গল পুরস্কার। পাকিস্তান থেকে অর্জন করেছেন নিগার, ক্রিটিক্স, গ্র্যাজুয়েটস পুরস্কারসহ জাতীয় সংগীত পরিষদ স্বর্ণপদক।
নব্বইয়ের দশকে গিনেস বুকে স্থান পাওয়া এই বাংলাদেশি সংগীত শিল্পীকে পার্বত্য নিউজের পক্ষ থেকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা।