বাইশ বছর ধরে চিতুই পিঠা বিক্রি করছে পানছড়ির আব্দুল আলী

নিজস্ব প্রতিবেদক, পানছড়ি:

খাগড়াছড়ি জেলার ভারত সীমান্তবর্তী উপজেলার নাম পানছড়ি। উপজেলার ৬২,১৯৮ লোকসংখ্যার বেশিরভাগই নানান পেশায় নিয়োজিত। কিন্তু আবদুল আলী এক ব্যতিক্রমী পেশাকে বুকে আকড়ে ধরে আছে প্রায় বাইশ বছরের অধিক সময় ধরে।

এই পেশা নাকি তার মন ও প্রাণের সাথে মিশে আছে। মৃত কলমধর আলী ও মাতা কালেমা খাতুনের সন্তান আবদুল আলীর বর্তমান বয়স ৬৪। পানছড়ি ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসার পাশে ভাড়া করা ঝুপড়ির ঘরে স্ত্রী হামিদা আর দুই প্রতিবন্ধী সন্তান সাহানা ও হামিদকে নিয়ে বসবাস। তার সন্তান দুটি খর্বকয় প্রতিবন্ধী। মায়ের কোলে চড়েই তাদের চলাফেরা।

তাই স্বামীর পিঠা বিক্রিতে সহযোগিতা ছাড়া বাহিরে কোথাও কাজে যেতে পারেনা হামিদা। পানছড়ি বাজারের তবলছড়ি সড়কের পাশেই শীত মৌসুমে প্রতিদিন পিঠা বিক্রি করতে দেখা যায় আবদুল আলীকে। বাজার এলাকায় পিঠা মেম্বার নামেই সে ব্যাপক পরিচিত। দীর্ঘ বছর আগে সূতাকর্ম্মাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে সদস্য পদে পাশ করার পরই পিঠা মেম্বার উপাধি পড়ে বলে জানায় আবদুল আলী।

তার সাথে কথা বলে জানা যায়, ১৯৯৩-৯৪ সালের দিকে সে পিঠা বিক্রি শুরু করে। ১৯৯৬ সালে মোল্লাপাড়া ব্রিজের পাশে, তারপর মুনমুন সিনেমা হলের সামনে ও পরবর্তীতে তবলছড়ি সড়কে দীর্ঘবছর ধরে পিঠা বিক্রি করছে।

যার আনুমানিক সময়কাল ২২ থেকে ২৩ বছর। বছরের ছয়মাস ফেরী করে আচার বিক্রি ও শীতের মৌসুমে চিতুই পিঠা বিক্রিই তার পেশা। তার দাবি প্রতিদিন গড়ে ২০০ থেকে ২৫০টি পিঠা বিক্রি হয় তবে শীত বেশি পড়লে ৩ শতাধিক পার হয়। এতে করে কোন রকম সংসার চললেও অভাবের পাল্লা বরবারই ভারী।

বিগত বছর দু’য়েক আগে ধার-কর্জ করে পানছড়ি মাদ্রাসা মার্কেটে একটি চায়ের দোকান দিয়েছিল। কিন্তু এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দোকান পুড়ে ছাই হলে তাদের একটু স্বাবলম্বী হওয়ার শেষ আশাটুকু দুঃস্বপ্নে পরিনত হয়ে আবারো চিতুই পিঠা তৈরির সংগ্রামে নামে আবদুল আলী দম্পতি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন