বান্দরবানে ট্যুরিজম বোর্ডের উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলন পর্যটকদের হয়রানী ও অতিরিক্ত গাড়ী ভাড়া আদায় বন্ধের দাবী সাংবাদিকদের

Bandarban sangbadik sommoln 28.6.2013

জমির উদ্দিন:

বান্দরবানে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের কর্মকর্তদের সাথে জেলার সংবাদকর্মীদের মতবিনিময় সভা অনুষ্টিত হয়েছে। শুক্রবার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক কে এম তারিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে মত বিনিময় সভা অনুষ্টিত হয়।

এসময় বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আক্তারুর জামান বাবু, উপ-সচিব কামরুর জাহান, পর্যটন বোর্ড কর্মকর্তা মোতাহার হোসেন, বান্দরবান মিলনছড়ি হিলভিউ রির্সোটনের মালিক হাসান মুনছুন, বান্দরবান প্রেসক্লাব সভাপতি অধ্যাপক মোঃ ওসমান গনি, সাধারণ সম্পাদক মিনারুল হক, সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম মনু, বুদ্ধ জ্যোতি চাকমা, সাপ্তাহিক বান্দরবানের সম্পাদক মোজাম্মেল হক লিটন। এছাড়াও স্থানীয় কর্মকর্তা সাংবাদিক, ট্যুরিজম বোর্ড কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে পর্যটন শিল্পের প্রচার-প্রসার এবং বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জাতীয় পর্যটন সংস্থা ট্যুরিজম বোর্ডের উদ্যোগে সচেতনতামূলক আজ শনিবার বান্দরবানে দিনব্যার্পী কর্মশালার আয়োজন হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে গতকাল বান্দরবান এক সংবাদ সংম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এসময় সাংবাদিকরা পর্যটন শিল্পের অব্যবস্থাপনা, পরিবহণ, হোটেল-মোটেল, রেস্তরার খাবার, চায়ের দোকানগুলোতে অস্বাস্থ্য পরিবেশ, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, ড্রাইভারদের খারাপ ব্যবহারসহ বিভিন্ন সসম্যার কথা তুলে ধরণে। এছাড়াও নীলাচল ও নীলগিরি পর্যটন স্পটে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়সহ নানা অনিয়মের কথাও তুলে ধরণে।

সাংবাদিক বুদ্ধ জ্যোতি চাকমা বলেন, পর্যটন শিল্পের বিকাশে পর্যটকদের অবাধ বিচরণের সুযোগ দিতে হবে। নিরাপত্তার অজুহাতে বিদেশী পর্যটকের নির্দিষ্ট এলাকার বাইরে যেতে না দেওয়া। সেনা নিয়ন্ত্রিত নীলগিরি পর্যটন স্পটে পর্যটকদের কাছ থেকে পরিবহন পার্কিং ভাড়া এবং জনপ্রতি ৫০টাকা করে অতিরিক্ত ফ্রি আদায় করা হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে জেলার পর্যটন শিল্পের প্রসার হবে না বরং ধ্বংস হবে।

সভায় বক্তারা বলেন এবিষয় গুলো আজ শবিবার কর্মশালায় তুলে ধরা হবে, এসব সমস্যার সমাধনের বিষয়েও আলাপ-আলোচনা করা হবে। তারা বলেন, দেশের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে জাতীয় ট্যুরিজম বোর্ড দেশের বিভিন্ন পর্যটন স্থানগুলোতে আকর্ষনীয় এবং এ সকল স্থানে পর্যটনের সেবার মান উন্নয়নে স্থানীয় জনগণকে সচেতন ও করার উদ্দেশ্যে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনার উদ্যোগ নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে চলতি বছর রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও নওগাঁর পাহাড়পুরে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। ১৫ জুন অন্য দুই জেলায় শেষ হয়েছে এবং আজ শনিবার বান্দরবানে কর্মশালার মাধ্যমে চলতি বছরের কার্যক্রমের সমাপ্তি হবে। বিশ্বে পর্যটন শিল্প ইতিমধ্যে একক  ও বৃহত্তর শিল্প খাত হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। পর্যটন শিল্প অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশ পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনার দেশ।

ইতিমধ্যে প্রাকৃতি সৌন্দর্য, জীব-বৈচিত্র, নদ-নদী, পাহাড়-পর্বতের কারণে বান্দরবান ও রাঙ্গামাটি পর্যটন নগরী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। ঐতিহাসিক নিদর্শন, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের জীবনাচার, বাংলার হাজার হাজার বছরের ইতিহাস, ঐতিহ্য, আবহমান সংস্কৃতি, সভ্যতা ও কৃষ্টি অতি সহজেই পৃথির্বীর যে কোন পর্যটককে আকৃষ্ট করে। এসব ঐতিহ্য ও পর্যটন স্থানগুলোকে আরো সুপরিচিতি, গ্রহণযোগ্য ও জনপ্রিয় পর্যটন হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে এ শিল্পকে এগিয়ে নিতে হবে। তারা বলেন, স্থানীয় জনসাধারণকে সচেতন ও পর্যটন শিল্পের সাথে সম্পিক্ত করা না গেলে টেকসই হবে না বরং এক সময় এ শিল্প হুমকির মুখে পড়বে। তাই এবিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন, সেবার মান উন্নয়ন করতে হবে। বক্তারা পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন, প্রচার ও প্রসারের সকলকে একযোগে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন