বান্দরবান খাদ্য গুদামের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অস্বাস্থ্যকর চাল সরবরাহের অভিযোগ
বান্দরবান খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, এলএসডি) মো. সালাউদ্দীনের বিরুদ্ধ পোকা মাকড় ও ময়লা আর্বজনা যুক্ত ওএমএস চাল সরবরাহ করার অভিযোগ উঠেছে।
সূত্র জানায়, সরকারের গৃহীত প্রকল্পের আওতায় সারা দেশের ন্যায় বান্দরবান পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ডসহ জেলার প্রত্যেক ইউনিয়নে বিতরণ করা হচ্ছে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত প্রতি কেজি ৩০ টাকা মূল্যের ওএমএস চাল। কিন্তু বান্দরবান খাদ্য গুদাম কর্মকর্তাদের দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে ভেস্তে যেতে বসছে সরকারের ওএমএস চাল বিতরণ কর্মসুচি।
ভোক্তাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গতকাল রবিবার (২৮ আগস্ট) বান্দরবান পৌর বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঘুরে দেখা যায়, ডিলাররা বিভিন্ন ওয়ার্ডে নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে সরকারি ভর্তুকি দেয়া ওএমএস চাল বিতরণ কার্যক্রম চলছে। বিতরণের জন্য মজুদ করা সরকারি চালে ঈঁদুরের মলমূত্র, পোকা মাকড় ও ময়লা আর্বজনা মিশ্রিত থাকায় ভোক্তারা চাল গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায়। এ ঘটনায় ভোক্তাদের সাথে ডিলারদের বাকবিতণ্ডা ও কথা কাটাকাটি হয়। এসময় অনেক ভোক্তারা চাল না নিয়ে ফিরে যেতে দেখা যায়।
বান্দরবান পৌর এলাকার ৮ ওয়ার্ডে চাল নিতে আসা কয়েকজন জানান, এখানে আমাদের মধ্যে বিতরণের জন্য রাখা চালে ঈঁদুরের মলমূত্র, পোকা মাকড়, পাথরের টুকরা ও ময়লা আর্বজনায় ভরা। তাছাড়া এই চাল অনেক দিনের পুরনো এবং খাবারের অনুপযোগী। তারা সরকারের কাছে ভাল মানের ও খাবার উপযোগী চাল বিতরণের দাবি জানান।
এ ব্যাপারে বান্দরবান পৌর এলাকার ৮ ওয়ার্ডের চাল ওএমএস ডিলার মো. আব্দুল জলিল জানান, এই ওয়ার্ডের জন্য তিন দিন পর পর ৩ মে. টন চাল বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। এই চালগুলো আমি বান্দরবান সদর খাদ্য গুদাম থেকে উত্তোলন করি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, প্রায় সময় এসব চাল অত্যন্ত নিম্ন মানের ও নানান রকমের ময়লা আর্বজনা মিশ্রিত থাকে। এসব চাল লোকজন নিতে চায় না। কাউকে জোর করে দিতে আমাদেরও বিবেকে বাধে। এই চালগুলোর মান অত্যন্ত খারাপ ও ময়লা যুক্ত হওয়ায় এবং লোকজন নিতে আগ্রহী না হওয়ায় চাল নিয়ে আমি বিপাকে পড়েছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় চাল ব্যবসায়ীরা জানান, বান্দরবান খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি,এলএসডি) মো. সালাউদ্দীন বান্দরবানের এক আ.লীগের নেতার সহযোগিতায় বর্তমান কর্মস্থলে যোগদান করেন। তারপর থেকে তিনি ওই আ.লীগ নেতার সাথে পাটনার শিপে ডিও ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। তিনি বর্তমানে ওই আ.লীগ নেতাকে সাথে নিয়ে বান্দরবান জেলায় বরাদ্দ সরকারি কর্মসূচির চাল কালো বাজারে বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে বান্দরবান খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি,এলএসডি) মো. সালাউদ্দীন ডিলারদের নিকট ময়লা ও আর্বজনা মিশ্রিত ওএমএস চাল বিতরণের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘গুদামে মজুদ রাখা সব চাল ভাল এবং এসব চাল বিদেশ থেকে আমদানি করা। ডিলারদের কাছে নিম্ন মানের ও ময়লা মিশ্রিত ওএমএস চাল বিতরণের কোন প্রশ্ন আসেনা।’