বিজয় দিবসে মানিকছড়িতে নানা আয়োজন

fec-image

সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ৩১বার তোপধ্বনি ও শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ, জাতীয় পতাকা উত্তোলন, কুচকাওয়াজ প্রদশর্নী, ক্রীড়ানুষ্ঠান, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা সভা ও স্মার্টকার্ড বিতরণ, এবং মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজনে মানিকছড়িতে মহান বিজয় দিবস পালিত হয়েছে।

সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) ভোর ৬.৩৪ মিনিটে থানা পুলিশ কর্তৃক ৩১বার তোপধ্বনি ও উপজেলা প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের জনগণ উপজেলা শহীদ মিনারে পুস্পমাল্য অর্পণ শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, কুচকাওয়াজ প্রদর্শনী, ক্রীড়ানুষ্ঠান, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা সভা ও স্মার্টকার্ড বিতরণ, এবং মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজনে মানিকছড়িবাসী মহান বিজয় দিবস পালন করেছে।

সকাল ৮টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও কুচকাওয়াজ প্রদশর্নী শেষে সালাম গ্রহণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান মো. জয়নাল আবেদীন ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার তামান্না মাহমুদ। এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন, অফিসার ইনচার্জ আমির হোসেন।

এছাড়া অতিথি মঞ্চে বসে পুরো কুচকাওয়াজ, ক্রীড়ানুষ্ঠান, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের, সংবর্ধনা সভা ও স্মার্টকার্ড বিতরণ, এবং মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন, সহকারি কমিশনার (ভূমি) রুবাইয়া আফরোজ, সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রতন খীসা, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এম.এ. রাজ্জাক, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম বাবুল, ডলি চৌধুরাণী, উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মো. মাঈন উদ্দীন, মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার মো. সফিউল আলম চৌধুরী, ইউপি চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম ফারুক, দুপ্রক সভাপতি মো. আতিউল ইসলামসহ সকল দপ্তর প্রধান, শিক্ষক, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সুধীজন।

কুচকাওয়াজ শেষে সকলের উদ্দেশ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, বিশ্বনন্দিত নেতা ও বাঙ্গালীর জাতির অহংকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়া বীর মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বিজয় দিবসে আমরা আজ বিনম্র  শ্রদ্ধাভরে শহীদ ও যুদ্ধাহত এবং জীবিত সকল মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণ করছি। কিন্তু অত্যান্ত পরিতাপের বিষয় আজও পাকিস্তানী দোসররা দেশ ও জাতি বিরোধী কাজে সর্বদা লিপ্ত রয়েছে। শত বাধা-বিপত্তি স্বত্তেও বঙ্গবন্ধু’র কন্যা শেখ হাসিনা বিশ্ব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে দেশকে দ্রুততার সহিৎ উন্নত বিশ্বের সারিতে নিয়ে যেতে নিরলসভাবে কাজ করছে।

তিনি বলেন, আজ আমরা যারা স্বাধীনতা যুদ্ধ দেখিনি তারা ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধু’র আদর্শ অনুস্মরণ ও অনুকরণ করে দেশপ্রেমে জাগ্রত হচ্ছি। আমরা চাই মুক্তিযুদ্ধারা আরও স্বাবলম্বী হোক। সরকার তাঁদের আরও কিছু করুক। নতুন প্রজন্মরা মুক্তিযোদ্ধাদের মাঠ পর্যায়ের(রণাঙ্গন) অর্থাৎ যুদ্ধের ইতিহাস জেনে দেশে ও মানবপ্রেমে এগিয়ে আসুক।

পরে মাঠে অনুষ্ঠিত ক্রীড়ানুষ্ঠান শেষে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও স্মার্ট কার্ড বিতরণ অনুষ্ঠানের শুরুতে সকল মুক্তিযোদ্ধাদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন উপস্থিত অতিথিরা। এ সংবর্ধনা সভায় বক্তব্য রাখেন, মুক্তিযুদ্ধা সন্তান কমান্ডের সাবেক সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম, আওয়ামী যুবলীগ সভাপতি মো. সামায়উন ফরাজী সামু, উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মো. মাঈন উদ্দীন, ইউপি চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম ফারুক, মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার মো. সফিউল আলম চৌধুরী, অফিসার ইনচার্জ আমির হোসেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রতন খীসা, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এম.এ. রাজ্জাক, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম প্রমূখ।

সভায় মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে স্মার্ট কার্ড ও সন্মানী বিতরণ শেষে সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার তামান্না মাহমুদ বলেন, আমরা যারা যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে জন্মগ্রহন করেছি,তারা যদিও মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি, কিন্তু দেশের সঠিক ইতিহাস পড়েছি,শুনেছি। আমরা সত্যিই আজ গর্বিত জাতি। কারণ অল্প সময়ে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধারা দেশ স্বাধীন করতে পেরেছে। বিশ্বের কোন দেশ এত অল্প সময়ে স্বাধীনতা পায়নি। তাই আজ সময় এদেশে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কিছু করার। সরকার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সহযোগিতার হাত ও সন্মানী বাড়িয়েছে। এ ধারা অব্যাহত থাকবে। সরকার ইতিমধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের বিজয় দিবস ভাতাও চালু করেছে।

এদিকে বিকালে উপজেলা প্রশাসন ও চেয়ারম্যান একাদশের মধ্যে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সন্ধ্যায় উপজেলা শিল্পকলা একাডেমীর পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন